এনআরবিসি ব্যাংক: স্মার্ট ব্যাংকিংয়ের অপর নাম

এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসির চেয়ারম্যান পারভেজ তমালছবি: ব্যাংকের সৌজন্যে

এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসি বাংলাদেশের ব্যাংকিং জগতে ইতিমধ্যে একটি প্রতিষ্ঠিত নাম। ২০১৩ সালে নতুন যে নয়টি ব্যাংক যাত্রা শুরু করে, ব্যাংকগুলোকে বলা হয় ‘চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংক’। ব্যাংকিং সেবার উৎকর্ষ, নেটওয়ার্কের প্রসার এবং সেবা-পণ্যের বৈচিত্র্যের কারণে বর্তমানে দেশের আর্থিক খাতে একটি গ্রাহকবান্ধব আধুনিক এবং শক্তিশালী ব্যাংক হিসেবে আলোচিত এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসি। প্রতিষ্ঠার এক যুগে ক্রমেই বিকশিত হয়েছে ব্যাংকটি। সেবার মানের উৎকর্ষ এনে নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি ঘটিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসির পথচলা বিষয়ে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল বলেন, নানা চড়াই-উতরাই পাড়ি দিয়ে এখন এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসি দেশের মানুষের আস্থা অর্জন করে নির্ভরযোগ্যতার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এসএমই ব্যাংকিং, রিটেইল ব্যাংকিং, করপোরেট ব্যাংকিং, ইসলামি শরিয়াহ ব্যাংকিং, অফশোর ব্যাংকিং, ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড সার্ভিস, বৈদেশিক বাণিজ্য ইত্যাদি কর্মকাণ্ড পরিচালনার মাধ্যমে এনআরবিসি ব্যাংক ক্রমেই জোরালোভাবে নিজস্ব সক্ষমতা প্রমাণ করেছে।

পারভেজ তমাল আরও জানান, এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসির বেশির ভাগ উদ্যোক্তা প্রবাসী। প্রতিষ্ঠানটির ইচ্ছা ছিল মাটি ও মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে তাদের জন্য কিছু করা। তারই সূত্র ধরে প্রান্তিক পর্যায়ের দরিদ্র ও ভাগ্যবিড়ম্বিত মানুষের ভরসাস্থলে পরিণত হয়েছে এই ব্যাংক। ব্যাংকটি সেবার জন্য বেছে নিয়েছে দেশের উত্তরাঞ্চলকে, যেখানে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছায়নি। সেসব মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য কাজ করছে, যারা এত দিন হতদরিদ্র ছিল। তাঁদের সম্ভাবনা থাকলেও সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত ছিল। এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসি সেবার জন্য ওই মানুষদের বেছে নিয়েছে, যাঁরা নানা কারণে ব্যাংকিং সেবার বাইরে ছিল। প্রতিষ্ঠানটি চেয়েছে গ্রামের একজন হতদরিদ্র মানুষও যেন নিজের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়।

ব্যাংকের ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ কার্যকর করা হয়েছে। কিন্তু গ্রামের সাধারণ মানুষ সিঙ্গেল ডিজিট ঋণের সুবিধা থেকে বঞ্চিত থেকেছে। এ জন্য ব্যাংকটি ক্ষুদ্রঋণ চালু করেছে। বিনা জামানতে, সহজ শর্তে ৫ থেকে ৯ শতাংশ সুদে এ ঋণ দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রায় ৫৫ হাজার ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাকে প্রায় আড়াই কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। এ ঋণের মাধ্যমে ব্যাংকটি এক লাখের বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পেরেছে। পাশাপাশি দেশের যুবসমাজ উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সঙ্গে কাজ করছে। নতুন যুব উদ্যোক্তা, নারী উদ্যোক্তা, তৃতীয় লিঙ্গের উদ্যোক্তাদের মাত্র ৫ শতাংশ সুদে ক্ষুদ্রঋণ দিচ্ছে এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসি।

গ্রাহককে ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছেন এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসির একজন কর্মকর্তা
ছবি: ব্যাংকের সৌজন্যে

ব্যাংকটি বিশেষভাবে উৎসাহ দিচ্ছে নারী উদ্যোক্তাদের। সমাজ এবং রাষ্ট্রে সমতা আনার জন্য নারীদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করার বিকল্প নেই। সে জন্যই তাদের এই সহযোগিতা। বাংলাদেশে তরুণ প্রজন্মকে সম্ভাবনার আলো দেখাচ্ছে এই ব্যাংক। আইসিটি খাতে তরুণ প্রজন্ম গত এক দশকে অনেক চমক দেখিয়েছে। তাদের ওপর নির্ভর করেই বাংলাদেশে বিনিয়োগপ্রক্রিয়া আরও বেগবান হবে বলে দৃঢ় প্রত্যাশা রাখে এনআরবিসি ব্যাংক।

তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার করে এনআরবিসি ব্যাংক বাংলাদেশে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষদের ভাগ্যোন্নয়নে অর্থায়ন করে যাচ্ছে। এনআরবিসি ব্যাংকই প্রথম সব সুবিধা নিয়ে স্বল্প পরিসরে উপশাখা ব্যাংকিং চালু করেছে। ব্যাংকিংয়ে সেবাবঞ্চিত মানুষদের কর্মসংস্থানে সহজ শর্তে বিতরণ করছে ক্ষুদ্রঋণ। এটিএম কার্ড ও চেকবই ছাড়াই লেনদেন করতে দেশের ইতিহাসে সর্বপ্রথম ‘কিউআর কোড’ চালু করেছে এনআরবিসি ব্যাংক। লেনদেনের এই সহজ পদ্ধতি ছাড়াও প্ল্যানেট অ্যাপের মাধ্যমে মিলছে সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা।

নতুন নতুন সেবার উদ্ভাবনে এনআরবিসি ব্যাংক এশিয়ার সেরা ব্যাংকের স্বীকৃতিও পেয়েছে। সেরা ডিলার হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে। অনলাইনে এসিএস চালানের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব সংগ্রহে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রথম হওয়ার বিশেষ স্বীকৃতিও পেয়েছে ব্যাংকটি।

এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসির চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল ব্যাংকের ডিজিটাল অগ্রযাত্রার বিষয়ে বলেন, ‘আমাদের ব্যাংক আধুনিক ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবাকে গতিশীল ও যুগোপযোগী করার ক্ষেত্রে শতভাগ সফল। আন্তর্জাতিক মানের ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করেছে সব গ্রাহকের জন্য। আমাদের প্ল্যানেট মোবাইল অ্যাপস পরিবেশবান্ধব, সহজে ব্যবহারযোগ্য একটি ব্যবস্থা। ব্যাংকিং সেবাসমূহকে সহজসাধ্য, সহজলভ্য করে লেনদেনকে দ্রুততর এবং সাবলীল করেছে এই প্ল্যানেট মোবাইল অ্যাপস। সেই সঙ্গে আরও নতুন নতুন ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবাপণ্য উদ্ভাবন এবং তা গ্রাহকদের জন্য নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলছে। ক্যাশলেস স্মার্ট ব্যাংকিং ও ব্যাংকিং লেনদেনকে জনপ্রিয় এবং সহজলভ্য করে তুলতে আমরা সব সময় এগিয়ে থাকতে চাই।’