আনোয়ারায় প্রথম স্ত্রীর স্বামীর হাতে খুন হলেন রিকশাচালক

স্বামীকে হারিয়ে আহাজারি করেই চলেছেন পারভীন আক্তার। তিন সন্তান নিয়ে কোথায় যাবেন জানেন না তিনি। আজ সকাল দশটার সময় আনোয়ারা থানায়ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় প্রথম স্ত্রীর স্বামীর হাতে এক রিকশাচালক খুন হয়েছেন। নিহত রিকশাচালকের নাম আনোয়ার হোসেন (৫০)। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শাহাদাত হোসেন পলাতক। তবে তাঁর তিন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার তিনজন হলেন মো. পারভেজ (২২), শাহ আলম (৪২) ও শাহজাহান (৪৫)। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১২টার সময় উপজেলার হাইলধর ইউনিয়নে আনোয়ার হোসেন খুন হন। এরপর পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করলেও প্রধান আসামি এখনো পলাতক।

নিহত আনোয়ার হোসেন হাইলধরের আবদুচ সাত্তারের ছেলে। নিহত ব্যক্তির পারিবারিক সূত্র জানায়, আনোয়ার হোসেনের প্রথম স্ত্রীকে বিয়ে করেন অভিযুক্ত শাহাদাত। তিনি নিহত আনোয়ারের প্রতিবেশী ছিলেন। দেখা হলেই তাঁরা একে অপরকে গালমন্দ করতেন। এর জের ধরেই খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।

নিহত আনোয়ারের দ্বিতীয় স্ত্রী পারভিন আক্তার বলেন, গতকাল রাতে অভিযুক্ত মো. পারভেজ তাঁদের ঘরে যান। এ সময় আনোয়ারকে তিনি কিল-ঘুষি মারতে মারতে ঘর থেকে বের করে সামান্য দূরে পুলের গোড়ায় নিয়ে যান পারভেজ। সেখানে অপেক্ষায় ছিলেন শাহাদাত হোসেনসহ পাঁচ-ছয়জন। শাহাদাত হোসেন রামদা দিয়ে আনোয়ারের ঘাড়ে কোপ দিলে ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান আনোয়ার। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ১৯৯৫ সালে মরিয়ম বেগম নামের এক নারীকে বিয়ে করে আনোয়ার হোসেন বিদেশে চলে যান। পরে ২০০৯ সালে মরিয়মকে বিয়ে করেন শাহাদাত। আনোয়ারও বিদেশ থেকে ফিরে এসে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। আনোয়ার ও শাহাদাত দুজন প্রতিবেশী হওয়ায় প্রায় ঝগড়া হতো।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল দশটার সময় আনোয়ারা থানায় গিয়ে দেখা যায়, নিহত আনোয়ারের দ্বিতীয় স্ত্রী পারভীন আক্তার ও তাঁর তিন সন্তান বিলাপ করছেন। পারভীন আক্তার বলেন, ‘গতকাল রাতে ঘুমানোর আগমুহূর্তে পারভেজ এসে ডেকে নিয়ে শাহাদাতের কাছে তুলে দেন আমার স্বামীকে। চোখের সামনে তাকে মেরে ফেলল। তিনটি ছোট ছেলেমেয়ে নিয়ে আমি কীভাবে চলব?’

আনোয়ারা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মহিউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, লাশ উদ্ধার করে আজ সকালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শাহাদাত হোসেনসহ বাকি আসামিরা পলাতক। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির স্ত্রী বাদী হয়ে সাতজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন।