শিশুদের প্রতি আরও মনোযোগী হতে হবে গণমাধ্যমকে

প্রথম আলোর দুজনসহ ১১ সাংবাদিক পেয়েছেন মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২২
ছবি: প্রথম আলো

শিশুদের জন্য বাসযোগ্য পরিবেশ তৈরিতে গণমাধ্যমের বড় ভূমিকা রয়েছে। শিশুদের প্রতি গণমাধ্যমকে আরও মনোযোগী হতে হবে। খবরের মাধ্যমে, ছবির মাধ্যমে শিশুর অধিকারের কথা তুলে ধরতে হবে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ইউনিসেফ আয়োজিত ১৭তম মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে অতিথি ও বিচারকমণ্ডলীর সদস্যদের বক্তব্যে এসব কথা উঠে আসে।

প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও আলোকচিত্রে শিশু অধিকারবিষয়ক তথ্য তুলে আনার জন্য এবার প্রথম আলোর দুজনসহ ১১ সাংবাদিক পেয়েছেন মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২২। সাংবাদিকদের মধ্যে তিনজন পুরস্কার পেয়েছেন অনূর্ধ্ব–১৮ শ্রেণিবিভাগে।

সূচনা বক্তব্যে বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, ২০০৫ সাল থেকে মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডের মাধ্যমে ইউনিসেফ শিশু অধিকারবিষয়ক সাংবাদিকতাকে স্বীকৃতি দিচ্ছে। ‘মীনা’ একটি ছোট মেয়ের কার্টুন চরিত্র, যে শিশুদের অধিকার নিয়ে কথা বলে এবং শিশুদের প্রতি বড়দের দায়িত্ব কী, তা তুলে ধরে। শিশুদের প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর দায়িত্ব সবার।

যাঁরা পুরস্কার পেয়েছেন

প্রিন্ট বিভাগে এমরান হাসান সোহেল (কালের কণ্ঠ), হিমু চন্দ্র শীল (বিডিনিউজ২৪.কম), জেসমিন আক্তার পাপড়ি (নিউজ বাংলা ২৪), নওয়াজ ফারমিন অন্তরা (ঢাকা ট্রিবিউন) এবং তানভীরুল ইসলাম (ঢাকা পোস্ট)।

ফটোসাংবাদিকতা বিভাগে পুরস্কার পেয়েছেন প্রথম আলোর দুজন। তাঁরা হলেন জাহিদুল করিম ও মো. সাজিদ হোসেন। ভিডিও সাংবাদিকতায় পুরস্কার পেয়েছেন নাগরিক টিভির শাহনাজ শারমিন।

অনূর্ধ্ব–১৮ শ্রেণিবিভাগে পুরস্কারপ্রাপ্ত তিনজন হচ্ছেন প্রিন্ট বিভাগে মোহাম্মদ মোশারফ হোসাইন (জাগো নিউজ ২৪), ভিডিও সাংবাদিকতা বিভাগে খালিদুল ইসলাম তানভির (এটিএন বাংলা) এবং ফটোসাংবাদিকতা বিভাগে ধী অরণী পাল (হ্যালো বিডিনিউজ২৪.কম)।

বিশেষ অতিথিরা ও বিচারকমণ্ডলীর সদস্যরা পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেন। বিভাগভেদে পুরস্কারের অর্থমূল্য ছিল ১ লাখ টাকা ও ৫০ হাজার টাকা।

‘মীনা’ শিশু অধিকার নিয়ে সচেতন করছে

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, সব খারাপের বিরুদ্ধে সোচ্চার ‘মীনা’। সব খারাপের পেছনে যে ঘটনা থাকে, তার বিরুদ্ধে কাজ করে ‘মীনা’। দেশে শিশুর সংখ্যা ৬ কোটি ৬০ লাখ। শিশুদের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত ৩৪ লাখ শিশু। এর মধ্যে অতি ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছে প্রায় ১৩ লাখ শিশু।

করোনাকালের দুই বছরে বাল্যবিবাহ বেড়েছে ১০ শতাংশ। সংবাদপত্রে এ বছর শিশুদের প্রতি সহিংসতার প্রায় এক হাজার খবর প্রকাশিত হয়েছে। প্রাত্যহিক খবর, রাজনৈতিক খবরের ভিড়ে গণমাধ্যমে শিশুদের খবর কম জায়গা পায়। শিশুদের প্রতি গণমাধ্যমের আরও মনোযোগী হতে হবে।

ভিডিও বার্তায় ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনাম বলেন, মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড সাংবাদিকদের মধ্যে শিশু অধিকার বিষয়ে সচেতন করছে। সাংবাদিকতা উপকৃত হচ্ছে। সাংবাদিকেরা শিশু অধিকার নিয়ে প্রতিবেদন করতে আরও আগ্রহী হচ্ছে।
শিশুদের প্রতি মনোযোগ বাড়াতে ও শিশুদের বিষয়গুলোকে আলোকিত করতে এ পুরস্কারকে বড় উদ্যোগ বলে মন্তব্য করেন ঔপন্যাসিক ও বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন।

২০০৫ সাল থেকে মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডের মাধ্যমে ইউনিসেফ শিশু অধিকারবিষয়ক সাংবাদিকতাকে স্বীকৃতি দিচ্ছে
ছবি: প্রথম আলো

বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা ও পাঠশালা ইনস্টিটিউটের প্রভাষক শামীম আখতার।

বিচারকমণ্ডলীর সদস্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতিআরা নাসরিন বলেন, শিশুদের বাসযোগ্য পরিবেশ তৈরির জন্য সাংবাদিকতার বড় ভূমিকা রয়েছে। কারণ সাংবাদিকতা দৃষ্টিকোণ তৈরি করে।

অনুষ্ঠানে বিচারকমণ্ডলীর সদস্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপির ব্যুরোপ্রধান শফিকুল আলম, রয়টার্সের প্রধান প্রতিবেদক রুমা পাল, আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকার আলোকচিত্রী ও প্রশিক্ষক আবির আবদুল্লাহ।