সরকারের উচ্চপর্যায়ে উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের উপপ্রধান মুখপাত্র ভেদান্ত প্যাটেল
ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া

ঢাকায় রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে উপপ্রধান মুখপাত্র ভেদান্ত প্যাটেল প্রশ্নোত্তরে এ তথ্য জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে ব্রিফিংয়ের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।

ব্রিফিংয়ে মুশফিকুল ফজল নামের এক সাংবাদিক প্রশ্ন করে বলেন, বাংলাদেশে নিয়োজিত রাষ্ট্রদূত পিটার হাস আজ (বুধবার) সকালে ভুক্তভোগী সাজেদুল ইসলামের বাসায় গিয়ে সরকার সমর্থকদের বাধার মুখে পড়েছিলেন। তারপর তিনি দ্রুত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে উদ্বেগ জানান। এটা (রাষ্ট্রদূতদের ওপর) দ্বিতীয় হামলা। প্রথম হামলা হয়েছিল রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের ওপর। একই সরকারের সমর্থকেরা ২০১৮ সালের ৬ আগস্ট এই হামলা করেছিল। এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী? যুক্তরাষ্ট্রের মতো একটি দেশ কীভাবে সামাজিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হচ্ছে এবং কীভাবে সরকার সমর্থকদের হয়রানি মোকাবিলা করছে?  

আরও পড়ুন

জবাবে প্যাটেল বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র তার মূল্যবোধের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং বৈশ্বিক শান্তি, নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির পূর্বশর্ত হিসেবে মানবাধিকারের বিষয়ে শ্রদ্ধাশীল। আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের একটি মুখ্য বিষয় হিসেবে বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে আমরা মানবাধিকারের প্রসঙ্গ তুলি। এ ছাড়া গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, নাগরিক সমাজের কথা বলার সুযোগ এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়গুরোও তোলা হয়।’

পিটার হাসের ঘটনা নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এই মুখপাত্র বলেন, ‘নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ও দূতাবাসের কর্মকর্তারা একটি সভা আগেভাগে শেষ করেছেন। এ বিষয়ে আমরা আমাদের উদ্বেগের কথা বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে জানিয়েছি।’

আরও পড়ুন

ঢাকায় নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস গতকাল বুধবার সকালে রাজধানীর শাহীনবাগে প্রায় এক দশক ধরে নিখোঁজ বিএনপির নেতা সাজেদুল ইসলামের বাসায় যান। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার সময় বাসার বাইরে ‘মায়ের কান্না’ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে একদল লোক তাঁকে ঘিরে ধরার চেষ্টা করেন। নিরাপত্তাকর্মীদের সহায়তায় তিনি বেরিয়ে আসেন।

আরও পড়ুন

সাজেদুলের বাসা থেকে আসার পর দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কথা জানান রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। ওই বৈঠকের আলোচনা তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘মার্কিন রাষ্ট্রদূত জরুরি ভিত্তিতে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বললেন যে তিনি এক বাসায় গিয়েছিলেন, আর সেখানে যখন গিয়েছেন, কিন্তু বাইরে বহু লোক ছিল। তাঁরা উনাকে কিছু বলতে চাইছিলেন। উনার সিকিউরিটির লোকেরা উনাকে তাড়াতাড়ি সেখান থেকে চলে যেতে বলেন। তাঁরা বলেন, “ওরা আপনার গাড়ি ব্লক করে দেবে।” সেই নিরাপত্তা অনিশ্চয়তা থেকে তিনি তখন তাড়াতাড়ি সেখান থেকে চলে গেছেন। এতে তিনি খুব অসন্তুষ্ট হয়েছেন।’