টিভি কিনুন কিস্তিতে, থাকুন স্বস্তিতে

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং জীবনযাপনের নানা ক্ষেত্রে ব্যয়বৃদ্ধির কারণে প্রয়োজনীয় অনেক জিনিসও সময়মতো কিনতে পারছেন না অনেকেই। শখের কোনো কিছু কেনার জন্য অপেক্ষার পালা যেন শেষই হতে চায় না। ঘরের প্রয়োজনীয় কত কিছু যে কেনার পরিকল্পনা থাকে। বুঝেশুনে হয়তো কিছু টাকা জমিয়েছেন, সেটা হঠাৎ খরচ হয়ে যায় অন্য কোনো খাতে। শখের কিংবা প্রয়োজনীয় পণ্যটি তখন আর কেনা হয় না। এসব ক্ষেত্রে কিস্তির সুবিধা একটা ইতিবাচক দিক। কিস্তিতে পণ্য কেনার মাধ্যমে মানুষ সহজেই সময়মতো তার প্রয়োজন মেটাতে পারে।

কয়েক দিন পরই কাতারে শুরু হবে বিশ্বকাপ ফুটবল। এ সময় অনেকেই চান পরিবারের সবাই মিলে বড় পর্দা এবং নতুন টিভিতে খেলা দেখতে। তাই বছরের শুরুতেই পরিকল্পনা থাকে টিভি কেনার। এখন টিভি কিনতে বেশির ভাগ মানুষই কিস্তিসুবিধা নিয়ে থাকেন।

স্যামসাং বাংলাদেশ শাখার হেড অব সিই বিজনেসের পরিচালক শাহরিয়ার বিন লুৎফর এ বিষয়ে বলেন, এখন কিস্তিতে পণ্য ক্রয় করা খুব সহজ। ইলেকট্রনিক পণ্য থেকে শুরু করে গৃহস্থালির প্রায় সব ধরনের পণ্য কিস্তিতে কেনা যায়। শখের জিনিস, প্রয়োজনের জিনিস কিনতে তাই মানুষকে এখন একটু কম বেগ পোহাতে হয়।

শাহরিয়ার আরও বলেন, গ্রাহকদের দুইভাবে কিস্তিতে টিভি কেনার সুযোগ আছে। পছন্দের পণ্যটি নির্দিষ্ট আউটলেট কিংবা যারা বিক্রি করে, এমন শোরুম থেকেও কিনতে পারেন। এখানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের টিভির ওপর থাকে বিভিন্ন রকম অফার।

ব্যাংকগুলোও এখন কিস্তিতে পণ্য কেনার জন্য দিচ্ছে নানান সুবিধা। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি কিস্তিতে টিভি কেনা যায়। শখের জিনিস কিনতে তাই মানুষকে এখন খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয় না।

কিস্তিসুবিধায় পণ্য কেনার জন্য কয়েকটি জিনিস প্রয়োজন। যেমন জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, দুই কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি, সবশেষ মাসের ইউটিলিটি বিলের (বিদ্যুৎ, পানি অথবা গ্যাস) কপি, যে প্রতিষ্ঠানের টিভি কিনবেন, তাদের দেওয়া চুক্তিপত্র এবং চুক্তিপত্রে দুজন গ্যারান্টরের স্বাক্ষর।

প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ ডাউন পেমেন্ট প্রদান করতে হবে। ডাউন পেমেন্টের পরিমাণ যত বেশি হবে, মাসিক কিস্তির পরিমাণ সেই অনুপাতে কমে আসবে। ছয় মাসের মধ্যে সব কিস্তি পরিশোধ করলে শূন্য শতাংশ ইন্টারেস্টসুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।

কিস্তিতে কেনাকাটা জীবনযাপনে এনে দেয় স্বস্তি। তেমনই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীর বাসিন্দা সরকারি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম। তাঁর বাসায় ১৮ বছর আগে কেনা রঙিন টিভি ছিল। সন্তানেরা বড় হয়েছে। তারা বড় পর্দায় একটা ভালো টিভিতে নিজেদের পছন্দের অনুষ্ঠান, সিনেমা বা খেলা দেখতে চায়। সম্প্রতি সন্তানদের সেই আবদার মিটিয়েছেন তিনি। বাসায় এনেছেন বড় পর্দার নতুন টিভি।

রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কিস্তিসুবিধা না থাকলে সন্তানদের ইচ্ছাটা পূরণ করা সহজ হতো না। নিজের কিছু জমানো টাকা ছিল, সেটা ডাউন পেমেন্ট হিসেবে দিয়ে মাসে মাসে কিস্তিতে বাসার এই ঝলমলে টিভি কিনেছি। আমার সন্তানেরা এখন মনের আনন্দে টিভি দেখে। সবাই মিলেই নতুন টিভিতে বিশ্বকাপ ফুটবল দেখার অপেক্ষায় আছি আমরা। মাসে মাসে কিস্তির যে টাকা গুনতে হয়, তা খুব আহামরি নয়, বেতন পাওয়ার পরপরই তা সমন্বয় হয়ে যায়। ঘরে নতুন টিভি এসেছে, কিন্ত আমার ওপর বাড়তি কোনো চাপ পড়েনি—এটাই কিস্তির প্রধান সুবিধা।’