ভূমি উন্নয়ন কর দেওয়ার নতুন সময় নির্ধারণ
ভূমি উন্নয়ন কর দেওয়ার নতুন সময় নির্ধারণের ঘোষণা দিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ। তিনি বলেন, ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের সময় হবে প্রতিবছরের ১ জুলাই থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত। মন্ত্রী বলেন, জাতীয় আর্থিক বছরের সঙ্গে সমন্বয় করতেই নতুন এ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
আজ শনিবার রাজধানীর বিয়াম ফাউন্ডেশন অডিটরিয়ামে আয়োজিত ‘ভূমিসেবা সপ্তাহ ২০২৪’–এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভূমিমন্ত্রী এ ঘোষণা দেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন ভূমি সচিব মো. খলিলুর রহমান।
ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ বলেন, ‘অতীতে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের সময় ছিল প্রতিবছরের ১ বৈশাখ থেকে ৩০ চৈত্র পর্যন্ত (বঙ্গাব্দ)। কর আদায়কালের বর্তমান পরিবর্তনটি ভূমি উন্নয়ন করের আদায় প্রক্রিয়াকে অধিকতর সুষম, স্বচ্ছ ও কার্যকর করবে বলে আমরা মনে করি। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই নতুন পদ্ধতি আমাদের দেশের ভূমি রাজস্ব আহরণ ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং রাজস্ব আদায়ে গতিশীলতা আনবে।’
নারায়ন চন্দ্র চন্দ বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর সার্বিক দিকনির্দেশনায় দেশে ভূমির সর্বোত্তম ব্যবহার এবং ভূমিসংক্রান্ত জনবান্ধব সেবা নিশ্চিত করতে ভূমি ব্যবস্থাপনার স্মার্ট কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ভূমি মন্ত্রণালয়।
ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ আরও বলেন, ভূমিসেবা ডিজিটালাইজেশনসহ ভূমি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উদ্যোগ নারী অধিকার নিশ্চিতকরণ, খাদ্যনিরাপত্তা বৃদ্ধি, পরিবেশ সুরক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এসব উদ্যোগ দেশের নাগরিকদের ভূমিসংক্রান্ত অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। নিজস্ব ভূমি অধিকার সুনিশ্চিত করতে পারলে মানুষ আত্মবিশ্বাসী ও সচেতন হয়ে উঠবে। এটি তাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে সহায়ক হবে।
ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এ সময় আরও জানান, ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট ভূমিসেবা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। কোনো খতিয়ানের দাগ শেয়ার হবে না, ভূমি নিয়ে কোনো মামলা-মোকদ্দমা থাকবে না, সীমানা বিরোধ হবে প্রায় শূন্য, নাগরিকদের খুব প্রয়োজন ছাড়া ভূমি অফিসে যেতে হবে না, এনআইডি দিয়েই পাওয়া যাবে একজন নাগরিকের জমির সব তথ্য আর জমি ক্রয়ের সঙ্গে সঙ্গেই পাওয়া যাবে ‘সার্টিফিকেট অব ল্যান্ড ওনারশিপ’ বা সিএলও। যেসব জায়গায় একবার ডিজিটাল জরিপ সম্পন্ন হবে, সেখানে ভবিষ্যতে আর জরিপ করার প্রয়োজন পড়বে না।
আজকের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান এ কে এম শামিমুল হক ছিদ্দিকী, ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুস সবুর মণ্ডল, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম এবং ঢাকার জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান।
অনুষ্ঠানে ‘ভূমি আমার ঠিকানা, স্মার্ট ভূমিসেবা স্মার্ট নাগরিক’ ‘ঢাকা জেলার খাসজমি চিহ্নিতকরণ, উদ্ধার ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম’, ‘ঢাকা জেলার জলমহাল সমগ্র’—এই তিন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ।