মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এলেন আরও ৫৯ সেনা-বিজিপি সদস্য

আরাকান আর্মির হামলার মুখে ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) সদস্যরা পালিয়ে বাংলাদেশের ঘুমধুম সীমান্ত ফাঁড়ির ভবনের পাশে আশ্রয় নেনছবি: সংগৃহীত

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পালিয়ে এসেছেন মিয়ানমারের আরও ৪৬ জন সেনা ও বিজিপি সদস্য। সন্ধ্যায় তাঁরা বাংলাদেশে ঢুকেছেন বলে সীমান্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

এর আগে দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে ১১ জন ও উখিয়া সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারের সেনা ও বিজিপির ২ জন সদস্য এ দেশে প্রবেশ করেন বলে বিজিবির সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা(পিআরও) শরীফুল ইসলাম জানিয়েছেন।

গতকাল সন্ধ্যায় বিজিপি-সেনাবাহিনীর আরও ৪৬ জন সদস্যের পালিয়ে আসার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বিজিবির কক্সবাজার রিজিয়নের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। নাইক্ষ্যংছড়ির জামছড়ি সীমান্ত দিয়ে ৭ জন, চাকঢালা সীমান্ত দিয়ে ৫ জন ও গয়ালমারা সীমান্ত দিয়ে ৩৪ জন পালিয়ে আসেন।

নাইক্ষ্যংছড়ির জামছড়ি ও চাকঢালা সীমান্ত এলাকার লোকজন বলেন, দুপুরে এক দফা সীমান্তের ওপার থেকে প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। এরপর সন্ধ্যায় সেনা ও বিজিপির এসব সদস্য ঢুকে পড়েন। ওই এলাকার সীমান্তচৌকির বিজিবি সদস্যরা তাঁদের নিরস্ত্র করে জড়ো করেন।

সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, টানা দুই মাস ধরে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। লড়াইয়ে ইতিমধ্যে মংডু টাউনশিপের উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব পাশের রাচিডং টাউনশিপসহ ১২টি থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি। কিছুদিন ধরে বুচিডং ও মংডু টাউনশিপ দখলের জন্য শক্তি প্রয়োগ করছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি। দখলে নেওয়া সীমান্তচৌকি ও পুলিশ ফাঁড়ি পুনরুদ্ধারে সরকারি বাহিনী বিমান হামলা ও শক্তিশালী মর্টার শেল নিক্ষেপ করছে। সংঘাত দিন দিন নতুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে।

এদিকে গত সোমবার রাত আটটা থেকে রাখাইন রাজ্যে মর্টার শেল, গ্রেনেড–বোমার বিস্ফোরণ চলছিল। তা গতকাল বেলা তিনটা পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। ওপারের বিকট শব্দের বিস্ফোরণে কেঁপে উঠছে টেকনাফের সেন্ট মার্টিন দ্বীপ, সাবরাং, টেকনাফ পৌরসভা, হ্নীলা ও হোয়াইক্যং ইউনিয়নের অন্তত ১৩টি গ্রাম।

রাখাইন পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে জানিয়ে টেকনাফ–২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদী ও সীমান্তে বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে।