শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অপহরণ, হত্যা ও হত্যাচেষ্টার আরও তিন মামলা
পাঁচ বছর আগে সৈয়দ হাসান মাহমুদ নামের এক ব্যক্তিকে অপহরণের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হয়েছে। রাজধানীর শাহজাহানপুর থানায় এ মামলা করেছেন তিনি। এর বাইরে ছাত্র–জনতার আন্দোলনে গুলি করে হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা দায়েরের তথ্য পাওয়া গেছে। রাজধানীর শাহবাগ ও ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে এ মামলা হয়েছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এর ১০ দিন পর ১৫ আগস্ট তাঁর বিরুদ্ধে প্রথম মামলা হয় ঢাকার আদালতে। এর পর থেকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সারা দেশে অন্তত ২৩৬টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৯৯টি মামলায় হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
অপহরণ মামলা
পাঁচ বছর আগে সৈয়দ হাসান মাহমুদ নামের এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে আজ বুধবার মামলা হয়। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ২০১৯ সালে জাতীয় পার্টির নেতা মসিউর রহমান রাঙ্গা এক ভাষণে ’৯০–এর গণ–অভ্যুত্থানের অন্যতম শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে আপত্তিকর কথা বলেন। এ নিয়ে তিনি ঢাকার আদালতে একটি মামলা করেন। এরপর মসিউর রহমান রাঙ্গাসহ আওয়ামী লীগের নেতারা তাঁর ওপর অত্যাচার শুরু করেন। পরে ২০১৯ সালের নভেম্বরে মগবাজারের বাসায় তাঁর ওপর হামলা হয়। পরে তিনি এলাকা ছেড়ে বনশ্রীতে বসবাস শুরু করেন। তখন ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে তিনি কমিশনার পদপ্রার্থী হন। এরপর ২০২০ সালের ১০ জানুয়ারি খিলগাঁও উড়াল সড়কের নিচ থেকে তাঁকে মাইক্রোবাসে করে অপহরণ করা হয়। পরে তাঁকে ক্রসফায়ারে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। তাঁকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। পরে তাঁকে মালিবাগে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা। মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক সড়ক, যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক সংসদ সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গা, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া, সাবেক মন্ত্রী তারানা হালিম, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ, ডিএমপির সাবেক কমিশনার শফিকুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে।
উত্তরায় পেটে গুলিবিদ্ধ হন
রাজধানীর উত্তরা এলাকায় মো. মোহসিন নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ১০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ঢাকার সিএমএম আদালতে আজ বুধবার এ মামলা করেন মহসিনের শ্বশুর আবুদস সালাম। মামলায় বলা হয়েছে, গত ৪ আগস্ট দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উত্তরা পূর্ব থানার ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কে মোহসিনের পেটে গুলি লাগে। মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া ওবায়দুল কাদের, সাবেক সংসদ সদস্য খসরু চৌধুরী ও হাবিব হাসান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে।
গুলি করে হত্যা
রাজধানীর তোপখানা রোডে রিয়াজুল তালুকদার নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৬৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। গত ২৬ অক্টোবর রাজধানীর শাহবাগ থানায় এ মামলা করেন রিয়াজুলের পূর্বপরিচিত বিল্লাল হোসেন। মামলায় দাবি করা হয়েছে, গত ৪ আগস্ট ছাত্র–জনতার আন্দোলনে তোপখানা রোডে রিয়াজুলকে গুলি করা হয়। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।
মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, সাবেক মন্ত্রী দীপু মনিকে আসামি করা হয়েছে।