কর্মক্ষেত্রে নারীর সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে: শারমীন মুরশিদ

রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন ফ্রেন্ডশিপ কনভেনশন সেন্টারে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) আয়োজিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদছবি: মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সৌজন্যে

সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, কর্মক্ষেত্রে নারীদের সমান সুযোগ এবং নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত না হলে দেশের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার কর্মক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনে সর্বক্ষেত্রে মেয়েদের সমান সুযোগ দিতে চায়। বর্তমানে মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় শিক্ষাসহ নানা ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে।’

রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন ফ্রেন্ডশিপ কনভেনশন সেন্টারে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। আরও উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জামান, আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর তুমো পুতিয়েনাইন, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট তাহমিদ আহমেদ, ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেশন কমিটি ফর ওয়ার্কার্স এডুকেশনের চেয়ারম্যান বাদল খান, বিবিডিএন ও বহ্নিশিখার পরিচালকসহ বিভিন্ন উদ্যোক্তা।

সভায় শারমীন মুরশিদ বলেন, ‘এই টেকনোলজির যুগে আমাদের মেয়েদের জন্য নতুন কর্মসংস্থান, নতুন পরিকল্পনা ও ভাবনায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কর্মক্ষেত্রে নারীর অধিকার এবং তাদের শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ানোর উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে ডে-কেয়ার কেন্দ্র স্থাপন জরুরি।’ তিনি জানান, এ লক্ষ্যে সরকার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে উন্নতমানের ‘কেয়ার সেবা’ চালুর উদ্যোগ নিয়েছে।

নারী শ্রমিকদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে শারমীন মুরশিদ বলেন, ‘যেসব কর্মক্ষম নারী প্রতিদিন ঘর থেকে কর্মক্ষেত্রে যাচ্ছেন, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের অন্যতম দায়িত্ব। বিশেষ করে গার্মেন্টসসহ অন্যান্য খাতে কর্মরত নারীদের যৌন হয়রানি থেকে সুরক্ষা দিতে পরিবহন ব্যবস্থায় তাদের জন্য আলাদা ট্রান্সপোর্ট নিশ্চিত করতে হবে।’ তিনি নারীদের জন্য পৃথক ও নিরাপদ টয়লেটের ব্যবস্থার ওপরও জোর দেন।

প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতায় পরিচালিত হয় উল্লেখ করে শারমীন মুরশিদ বলেন, ‘এখানে নারী শ্রমিকেরা প্রায়ই অবজ্ঞার শিকার হন। এ জন্য কর্মক্ষেত্রে নারীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি।’

শারমীন মুরশিদ আরও বলেন, ‘আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি, তা বাস্তবায়নে নারী-পুরুষ সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। নারী শ্রমিকদের মর্যাদাপূর্ণ ও নিরাপদ কর্মজীবন নিশ্চিত করাই হবে টেকসই উন্নয়নের অন্যতম ভিত্তি।’