ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করতে আদালতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

শাটল ট্রেনের দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভাঙচুর করা হয় উপাচার্যের বাসভবন ও পরিবহন দপ্তরফাইল ছবি: প্রথম আলো

চাঁদা না পেয়ে ভাঙচুরের অভিযোগে ছাত্রলীগের ১২ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে করা দুটি মামলা প্রত্যাহার করছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শেষ কর্মদিবসে সদ্য সাবেক উপাচার্য শিরীণ আখতারের দেওয়া নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাদীরা।

এদিকে মামলা তুলে নিতে ছাত্রলীগের চাপের কথা স্বীকার করেছেন সাবেক উপাচার্য শিরীণ আখতার। আজ শনিবার সকালে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, শেষ কর্মদিবসে প্রক্টর মামলা তুলে দেওয়ার ব্যাপারে কথা বলেছিলেন। তিনি বলেন যে মামলা না তুললে ক্যাম্পাসে থাকতে পারবেন না। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মারামারি করবেন। পরে তিনি মামলা তুলে নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন।

গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর রাতে শাটল ট্রেনের দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপাচার্যের বাসভবন, পরিবহন দপ্তর, পুলিশ বক্স ও শিক্ষক ক্লাবে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এতে ৩ কোটি ২৯ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে ৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নূর আহমদ ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা শেখ মো. আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে দুটি মামলা করেন। মামলায় ১৫ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে পরিকল্পিতভাবে ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয় ছাত্রলীগের ১২ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় এক হাজার জনকে।

তবে দুই মামলার আসামিরা ক্যাম্পাসে অবস্থান করলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, মামলা দেওয়ার পর থেকেই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচি করে আসছেন। উপাচার্যকে চিঠি, মানববন্ধন, মূল ফটক আটকে বিক্ষোভ করাসহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন হুমকি দিয়ে আসছেন ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা।

গত মঙ্গলবার শেষ কর্মদিবসে উপাচার্য শিরীণ আখতার দুই বাদীকে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করার নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নূর আহমদ বলেন, উপাচার্যের নির্দেশে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার এর শুনানি ছিল। তবে ব্যস্ততার কারণে সেদিন যেতে পারেননি। উকিলের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী করণীয় ঠিক করবেন। একই কথা বলেন মামলার আরেক বাদী শেখ মো. আব্দুর রাজ্জাক।