মিথ্যা বলতে বলতে

অলংকরণ: আরাফাত করিম

রহমতের ঠিক মনে নেই কবে থেকে এই মিথ্যার বাতিক তাকে পেয়ে বসল। তবে অবলীলায় মিথ্যা বলতে পারাটা তার জন্য বেশ আনন্দদায়ক হয়ে উঠল। যখনই মিথ্যা বলে পার পেয়ে যায়, তার ভেতর একটা রোমাঞ্চ হয়। যেমন অফিসের কলিগ আকবর সেদিন এক হাজার টাকা ধার চাইল। দুদিনের মধ্যে ফেরত দেবে। রহমত পকেটে হাত দিয়ে চোখ বড় করে ফেলল, ‘হায় হায়, মানিব্যাগটা বাসায় ফেলে এসেছি! নাকি বাথরুমে ফেললাম!’ এই বলে ঝটিকায় উঠে দাঁড়িয়ে রহমত বাথরুমের দিকে ছুটে গেল। আড়ালে গিয়ে পকেটের মানিব্যাগটা বের করে পায়ের মোজার ভেতর পুরে রাখল। কিছুক্ষণ পর মুখটা ভার-ভার করে নিজের টেবিলে এসে বসল। আকবর তাকিয়ে আছে। ‘পেয়েছেন?’

‘না রে ভাই। ইদানীং কিছুই মনে রাখতে পারি না!’ মিথ্যাটাকে হালাল করতে রহমতকে উল্টো আকবরের কাছেই বাসায় ফেরার ৩০ টাকা ধার নিতে হলো। 

রাস্তায় নেমে রহমতের বেশ খুশি খুশি লাগে। মাস শেষ হতে তখনো ৯ দিন বাকি। পকেটে ছিল দুই হাজার টাকা। মানিব্যাগটা মোজার ভেতর থেকে বের করে পকেটে রাখতে রাখতে সেদিন রহমতের চা খাওয়ার ইচ্ছে জেগেছিল। কেন না পকেটে তখনো ফাউ ৩০ টাকা। ৩০ টাকা এমন টাকা, যেটা ধার নিলে আর ফেরত দেওয়া লাগে না। 

দুই.

নিজের চকিত মিথ্যার ঝিলিকে রহমত নিশুতি বিছানায় শুয়ে মিটমিট হাসছিল। বউ পাশে ঘুমাচ্ছিল। রহমতের মুঠোফোনে মেসেজ টোন বাজে। সন্তর্পণে মুঠোফোন দেখে রহমত, ‘ঘুমাইছ জাদু?’ মুহূর্তেই বউয়ের ঘামের গন্ধ ছাপিয়ে কোন সুদূরিকার পারফিউমের গন্ধ যেন ছেয়ে ফেলে চারপাশ। 

বউ চোখ মেলে। পিন পড়লেও টের পায়। এর কাছে পিন-ড্রপ সাইলেন্স বলে কিছু নেই। 

‘রাতবিরাতে মেগা অফার! শালার পুতেরা রক্তচোষা!’ বিড়বিড় করে ফোন কোম্পানির ওপর ধমক ঝাড়ে রহমত। বউ তা–ও সন্দেহে তাকিয়ে থাকে। 

একটু পর আবার মেসেজ টোন বাজে। 

‘কী হলো! কই, দেখি তো!’

বউ উন্মুখ হলে রহমত নিজে থেকেই একটা অফারওয়ালা মেসেজ বের করে বউকে দেখায়, ‘দেখো দেখো। প্রেমের চিঠি দেখো। জোরে জোরে পড়ো!’ রহমত এমন উত্তেজিত হয়, বউ নিজেই ভয় পেয়ে যায়। 

‘এত রাগ করো ক্যান। সারা দিন রক্ত পানি করি। রাতের বেলা ঘুমাতে পারব না?’

‘ঘুমাও না! কে মানা করছে? আমার কি পরিশ্রম নাই? আমার কি খাটনি নাই?’ 

রহমত মুঠোফোন হাতে নিয়ে পায়চারি করে। বউ তাকিয়ে থাকে। তার চোখে অপরাধবোধ। 

তিন.

পরদিন মোড়ের দোকানে বন্ধু আকরামের সঙ্গে রহমতের বচসা হয়। রহমত আকরামের নতুন নাম দিয়েছিল, ডিজিটাল নামÑসুইটি। বলেছিল, সে যেন তাকে রোজ কিছু রগরগে এসএমএস পাঠায়। আকরাম জিজ্ঞেস করেছিল, বিষয় কী? রহমত বলে, ‘তার একটু থ্রিলিং দরকার।’ বন্ধুর সামান্য অনুরোধ আকরাম রাখবে না? কিন্তু রহমতের রাগ, আকরাম কেন রাতে ঘুমানোর সময় মেসেজ দেয়,Ñযখন বউ তার পাশে থাকে? ব্যাচেলর আকরাম বলে, ‘ওই সময়েই তার টেক্সট পাঠাতে ভালো লাগে। রহমতকে সুইটি হয়ে কয়েকটা মেসেজ না পাঠালে তার ঘুম আসে না।’ 

এ কথা শোনার পর রহমত কিছুক্ষণ থ হয়ে বসে থাকে। আকরামের হাতে ধরা সিগারেটটা জ্বলতে জ্বলতে তার আঙুল পর্যন্ত পৌঁছায়। আকরাম ব্যথায় উঁ করে ওঠে। 

রহমত ধীরপায়ে অফিসের দিকে হাঁটতে থাকে। 

চার.

অফিসে রহমতের বস ক্ষিপ্ত। রহমত গতকাল অফিসে আসেনি। তাকে ফোনেও পাওয়া যায়নি। 

বস তাকে প্রচণ্ড গালিগালাজ করে, ‘আপনার একটা সিনসিয়ারিটি ছিল রহমত সাহেব। অনেস্ট ছিলেন আপনি। দিন দিন সব হারায়া ফেলতেছেন। ইউ আর লুজিং ইয়োরসেলফ!’

গালি খেতে ভালো লাগে রহমতের। যেদিন সে অফিসে বা বাসায় গালিগালাজ খায়, সেদিন তার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমে যায়। খাবার হজম হয় ভালো। চাকরিটা রহমতের খুব অপছন্দ। এটা-সেটা প্রচুর ডেটা তৈরি করা। এরে-ওরে ফোন দেওয়া। এই সব কাজ ওর মাথায় ঢোকে না। ছেড়ে দেবে দেবে বলেও পারছে না। পোর্টফোলিও খারাপ। নতুন কাজে কেউ তাকে নেবে না। বউয়ের পাইলসের সমস্যা। শিগগিরই অপারেশন করাতে হবে। 

বস রাগের শিখরে উঠে যাচ্ছে, ‘এভাবে চলতে থাকলে আপনাকে আর এখানে রাখা যাবে না রহমত সাহেব।’ উপায় না দেখে রহমত এবার তার গোপন মধুভাণ্ডের দিকে একবার তাকায়, যেখানে ঢিল ছুড়লে চাক চাক মিথ্যার মধু বের হয়ে আসবে। 

‘স্যার আপনি যখন ডেস্কে এসে গতকাল আমাকে খুঁজছিলেন, আমি তখন অপারেশন থিয়েটারে।’

‘কী?’

‘জি। মানে অপারেশন থিয়েটারের সামনে।’

‘মানে কী?’

‘আমার ওয়াইফের পাইলস অপারেশন। হঠাৎ করে প্রচণ্ড ব্লিডিং হচ্ছিল। ভয়াবহ অবস্থা। শরীর ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছিল।’

বস প্রশ্নাত্মক তাকিয়ে থাকে।

‘অফিসে রওনা দেব, ঠিক এমন সময়...বাসায় তো কেউ নাই। পাঁজাকোলা করে রাস্তায় নিয়ে গেলাম। রাস্তায় গাড়িটাড়ি মেলে না। পরে একটা ট্রাকের ওপর তুলে নিয়ে গেলাম। ট্রাক ড্রাইভার আবার দেশি লোক। হাসপাতাল পর্যন্ত সঙ্গে গেল। কাল বুঝলাম, ট্রাক ড্রাইভার খালি মানুষ পিষে মারে না, রোগীকে হাসপাতালেও পৌঁছে দেয়।’ 

রহমত নিজের চোখ দুটোকে বিশ্বাস করতে পারছে না, এত অল্পতে তারা ভিজে উঠবে! 

বস হতবিহ্বল। রহমতের অশ্রু তাকে অবাক করে দিয়ে গড়িয়ে নামছে। 

পাঁচ.

স্বামীকে ফলমূলের ব্যাগ হাতে বাসায় ঢুকতে দেখে বউ অবাক হয়। 

‘প্রমোশন?’

‘কিসের প্রমোশন! এসব কি আনা যায় না?’

‘কিছু একটা তো হয়েছে?’ 

এসব প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেই চলে। কিন্তু রহমত বলে বসল, বস আজ তার ওপর খুব খুশি। রহমত জয়েন করার পর থেকে অফিসে ক্লায়েন্টের অভাব নেই। শিগগিরই তার প্রমোশন হবে। কাল অফিস কামাই করেছে এ জন্য কৈফিয়ত দিতে যাচ্ছিল, বস বলে, আরে অফিস-টফিস ব্যাপার না। আসল কথা হলো কাজ। বিদেশে চাকরিকে অফিসের হাজিরা দিয়ে মাপে না, মাপে কাজের পাল্লায়। 

বউ খুব খুশি। ব্যাগ থেকে কয়েকটা আঙুর তুলে নিয়ে গপাগপ মুখে পুরতে লাগল। রহমত মিটমিটিয়ে হাসে।

‘ফ্রেশ হয়ে আসো। খাবা না?’

‘আজ তো খেতেও ইচ্ছে করছে না।’ 

‘খেয়ে এসেছ নাকি?’

‘সে রকমই। বস নিজের টিফিন শেয়ার করল।’ 

‘কী বলো! উনি না কথায় কথায় তোমাকে গালাগাল করতেন। হঠাৎ এত—!’

একটু বিষম খায় রহমত। তা–ও কাশির বেগ সামলাতে সামলাতে বলে, ‘খাঁটি জিনিস চিনতে মানুষের সময় লাগে। এটাই আফসোস!’ 

ছয়.

রহমতের মিথ্যা বলার বাতিকটা চরমে পৌঁছাল, সাবলীল দক্ষতায়। রহমত নিজেও আর বিশ্বাস করতে পারে না যে সে মিথ্যা বলছে। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে এখন তার মিথ্যা বলতে ভালো লাগে। নিতান্ত প্রয়োজনের তাগিদে যে মিথ্যার আশ্রয় সে জীবনে কোনো একবার নিয়েছিল, সেই মিথ্যা যে তার সব সময়ের সঙ্গী হয়ে উঠবে, কে জানত! অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে রহমত এখন চাইলেও আর সত্য বলতে পারে না। 

যেমন সেদিন বউ নতুন একটা শাড়ি পরে সেজেগুজে তার সামনে এসে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘কেমন লাগছে?’ 

রহমত বলল, ‘বিশ্রী। ফ্যাটি আগলি একটা লুকিং চলে আসছে।’ 

রহমতের বউ সামান্য মোটা, তবে তাতেই তাকে মানায়। কিন্তু রহমত অকপটে কথাটা বলল। বলার পরেই বুঝতে পারল কথাটা সে ঠিক বলেনি। বউকে তখন সুন্দরই লাগছিল। 

বউ কষ্টে জমানো টাকায় কেনা শাড়িটা ছিঁড়ে দুই-টুকরা করে ফেলল, ‘রাতবিরাতে মেসেজ আসলে বউকে তো আগলিই লাগবে।’

বউ কেঁদেকেটে সারা। অফিস থেকে ফিরেই সন্ধ্যাটা দুঃসহ হয়ে উঠলে রহমত ভারাক্রান্ত মনে বাসা থেকে বেরিয়ে গেল। বাসার সামনের রাস্তা ধরে বাঁ দিকে এগিয়ে গেলে একটা কালভার্ট পাওয়া যায়। সেখানে বসে সূর্য ডোবা ভালো দেখা যায়। রহমত সেখানে গিয়ে বসল। সন্ধ্যা পার করে ফিরল। 

রাতের বেলা বিছানায় এপাশ-ওপাশ করছিল রহমত। 

হঠাৎ বউ তাকে ফিসফিসিয়ে বলে, ‘সে আরেকজনের সঙ্গে সম্পর্ক করে ফেলেছে। সে চায়নি এটা হোক। কিন্তু হয়ে গেছে। লোকটা রহমতের চেনা। তবে এখনই নাম বলা যাবে না।’ 

রহমত প্রথম প্রথম আমলে নেয় না। ভাবে বউ মজা করছে। সে পাশ ফিরে শোয়। 

বউ বলে, ‘আংটিটা কেমন?’ 

রহমতের চোখের সামনে বউ নিজের হাতটা মেলে ধরে। আলো-আঁধারিতেও আংটিটা চিকচিক করে। রহমত একটু অবাক হয়। বলে, ‘আমার দেওয়া আংটি অন্যের বলে দেখাও?’ 

‘তোমার দেওয়া?’ বউ হাসতে থাকে। যাকে বলে অট্টহাসি, ‘এ রকম দামি আংটি দিবা তুমি? তুমি দিবা আমারে!’ 

রহমত বউয়ের কথার ধরনে হাসির ধমকে খানিক ধন্ধে পড়ে যায়। বউ তার সামনে আংটি পরা আঙুলটা এখনো উঁচিয়ে রেখেছে। বলে, ‘তোমার সঙ্গে থাকতে এখন ভয় করে। তালাকের কাগজপত্র রেডি হচ্ছে। উকিল সব করবে। তুমি খালি দস্তখত করে দিবা।’

রহমত অবাক তাকিয়ে থাকে। তার চোখের পাতা পড়ে না।

সাত. 

পরদিন সকালবেলা ঘরের কাজ করতে করতে রহমতের বউ একগাল হেসে বলে, ‘তুমি একটা উজবুক। খালি মিথ্যা বলতে পারো, কিন্তু মিথ্যা ধরতে পারো না। ইমিটেশন আর পিওর সোনা আলাদা করতে পারো না!’

বউ আংটিটা রহমতের দিকে ছুড়ে দেয়। রহমত আংটিটা হাতে নিয়ে স্বস্তি পায়। 

বউ বলে, ‘মিথ্যাটা কেমন করে বললাম, দেখলা?’ 

‘কোনটা?’ 

‘মিথ্যাটা?’ 

‘কোনটাÑরাতেরটা, না এখনকারটা?’ 

‘তুমিই বোঝো।’ 

এরপর থেকে রহমতের জীবনে আরেক অধ্যায় শুরু হয়।

প্রত্যেক মানুষকে তার সন্দেহ হতে শুরু করে। সবাই যেন তার সঙ্গে মিথ্যাখেলা খেলছে। যেমন অফিসের বস হঠাৎ করে তাকে রুমে ডাকল। রহমত বুঝল তার মেজাজ গরম। গালিগালাজ খাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিল। বস রহমতকে ইশারায় বসতে বলল। রহমত অপেক্ষা করতে থাকে তীক্ষ্ণ বাক্যবাণের। কিন্তু বসের মুখ থেকে যেন পুস্পশর বের হয়, ‘রহমত সাহেব, এক পোস্টে বেশি দিন থাকলে পোস্টটারে পচা ডোবা মনে হয়। ভালো কিছু উৎপাদন হয় না। তাই আপনাকে আপগ্রেডেড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ 

বস মিটমিট করে হাসে। রহমত ভাবে রসিকতা। সে বিশ্বাসই করতে পারে না। বরং অনুশোচনায় ভোগে, কেন সে মিথ্যাচার করত! এরা সবাই মিলে মিথ্যার খেলা খেলে তার শোধ তুলবে ঠিক করেছে! বস অবাক তাকায় তার শীতল অভিব্যক্তি দেখে। রহমত চুপচাপ সেখান থেকে বের হয়ে যায়। 

সত্য-মিথ্যার কুয়াশায় জড়াতে জড়াতে সন্ধ্যাবেলা রহমত শহরের এক নির্জন গলি দিয়ে হাঁটছিল। হঠাৎ তিন যুবক তার সামনে দাঁড়ায়। একজনের হাতে লম্বা ছুরি। ল্যাম্পপোস্টের আলোয় ঝিলিক মারছিল ছুরিটা। তারা তার দিকে তাকিয়ে মিটমিট হাসে। আর ছুরিটা হাতের তালায় শাণ দেওয়ার মতো করে ঘষে চলে। নিরুপায় রহমত তার গোপন মধুভাণ্ডটার দিকে মনোযোগ দেয়। মনে মনে ভাণ্ড ফুটো করে। কিন্তু আজ তা থেকে কিছু বের হয় না। রহমত ঘেমে যেতে থাকে। ওই রকম তীক্ষ্ণ ছোরার সামনে ফলস টকিংও কাজ করে না। যুবক ছোরাটা রহমতের কণ্ঠ বরাবর ঠেসে ধরে। রহমতের পায়জামা ভিজে যায়। সেটা দেখে আরেক যুবক মুখ খোলে, ‘তুই একটা আচোদা জিনিস। তোরে কিছু করুম না, যা ভাগ!’

রহমত বিশ্বাস করতে পারে না। সে ভাবে, এরা মিথ্যা খেলছে। সত্য হলো, এরা তাকে মেরে ফেলবে। সে হাঁটা শুরু করামাত্র পেছন থেকে ছোরা মারবে। রহমত করুণ চোখে তাকিয়ে থাকে। প্রাণভিক্ষা চায়, ‘হালার পুত যায় না ক্যান? ওই ব্যাটা, তোরে না কইলাম এখান থিকা ফুট্টুস হইতে? নাকি সত্যই উড়াল দিবি আকাশে?’ 

‘আপনারা মিথ্যা বলতেছেন!’

‘মানে?’

‘আমি জানি, আপনারা মিথ্যা বলতেছেন!’ 

‘কী মিথ্যা?’

‘এই যে আমারে ছাইড়া দেবেন। এইটা মিথ্যা।’ 

‘এই শালা, তোর কি মাথার ঠিক আছে?’

‘জি না, আমার মাথার ঠিক নাই। কিন্তু আমারে মাইরেন না। মাথা আমার ঠিক হয়া যাইব। আমারে মাইরেন না!’ 

‘ওই ব্যাটা পাগল, ভাগ এখান থিকা!’ 

‘ভাই, আপনেরা আমার লগে খেলতেছেন, আমি জানি। সকলে আমার লগে খেলতে শুরু করছে। মিথ্যা-মিথ্যা খেলা। আমার বউ, আমার বস, আমার বন্ধুবান্ধব—সক্কলে। ভাই, আপনেরা যদি বলেন যে আপনেরা আমারে মাইরা ফালাইবেন, তাইলে আমি যামু।’ ‘শালায় কয় কী!’ 

‘জি ভাই, তাইলে আমি বুঝব, আপনেরা আমারে মারবেন না। বলেন ভাই! বলেন!’ 

তিন যুবক অবাক হয়ে তাকায়। রহমত তাদের পায়ের কাছে বসে আকুতি করতে থাকে। 

দূরের মসজিদ থেকে এশার আজান ভেসে আসে।