জকসু নির্বাচন স্থগিতের কারণ জানতে চেয়ে প্যানেলগুলোর চার দাবি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন স্থগিত করার সিদ্ধান্তের কারণ জানতে চেয়েছে নির্বাচনে অংশ নেওয়া কয়েকটি প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এ বিষয়ে মঙ্গলবার উপাচার্য বরাবর সম্মিলিতভাবে একটি চিঠি দেন তাঁরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে সংবাদ সম্মেলন করে চার দফা দাবি তুলে ধরেন।
এ সংবাদ সম্মেলন করেন ছাত্রদল, ছাত্র অধিকার পরিষদ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে গঠিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেল, বাম জোট সমর্থিত ‘মওলানা ভাসানী ব্রিগেড’ প্যানেল এবং ছাত্রশিবির–সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেলের প্রার্থীরা।
তাঁদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, আগামী ৬ জানুয়ারির মধ্যে অবশ্যই জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো সদস্যের পদত্যাগে নিষেধাজ্ঞা এবং নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্তে জড়িত সিন্ডিকেট সদস্যদের পদত্যাগের দাবিও জানিয়েছে তারা। এ ছাড়া কোনো রাজনৈতিক বা দলীয় চাপে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সংবাদ সম্মেলন করে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের ভিপি (সহসভাপতি) পদপ্রার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, ‘জকসু নির্বাচনের বিষয়ে উপাচার্য কাউকে অবহিত না করে এমন সিদ্ধান্ত কার চাপে এবং কেন নিলেন, এটা আমাদের স্পষ্ট করে জানাতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী, প্যানেল ও প্রার্থীরা নির্বাচন চেয়েছেন। অথচ নির্বাচন কেউ চায় না—এটা বলে প্রশাসন নিজেদের দেউলিয়াত্বের প্রমাণ দিয়েছে।
বাম জোট–সমর্থিত ‘মওলানা ভাসানী ব্রিগেড’ প্যানেলের জিএস (সাধারণ সম্পাদক) প্রার্থী ইভান তাহসীব বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাৎক্ষণিক সিন্ডিকেট সভা ডেকে খালেদা জিয়ার মৃত্যুর ঘটনাকে অজুহাত দেখিয়ে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করে। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রশাসন বিভিন্ন প্যানেল, প্রার্থী বা অন্য অংশীজনদের কোনো মতামত নেয়নি। এই অগণতান্ত্রিক এবং অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত আমাদের, অন্যান্য প্রার্থীদের এবং শিক্ষার্থীদের ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ করেছে।’
ইসলামী ছাত্রশিবির–সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘আজকে সব প্যানেল ও প্রার্থীরা নির্বাচন চেয়েছিল। কে বা কারা, কার ইন্ধনে প্রশাসন নির্বাচন বন্ধ করল, আমরা তা জানতে চাই। প্রশাসনের কাছে আমরা আবেদন করেছি, আশা করছি প্রশাসন এই তথ্য আমাদের জানাবে।’
তফসিল অনুযায়ী মঙ্গলবার জকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের কথা ছিল। তবে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকাবহ পরিস্থিতির কারণে ভোট গ্রহণ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয় সিন্ডিকেট। ভোট স্থগিতের সিদ্ধান্তের খবর ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে উপাচার্য (ভিসি) ভবনে তালা দিয়ে তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।
পরে দুপুরে এক বিশেষ জরুরি সিন্ডিকেট সভায় সদস্যরা ৬ জানুয়ারি ভোট গ্রহণ হতে পারে বলে নিজেদের মতামত জানান। সভা শেষে উপাচার্য মো. রেজাউল করিম এ তথ্য জানিয়েছেন। সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।