শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাজধানীতে আরও ১০টি হত্যা মামলা

শেখ হাসিনাফাইল ছবি: বাসস

কোটা সংস্কার আন্দোলন কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও সংঘাত চলাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, মিরপুর, রামপুরা ও মোহাম্মদপুরে ১০ জনকে হত্যার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও ১০টি মামলা হয়েছে। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত ও রাজধানীর কয়েকটি থানায় এসব মামলা করেছেন নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা।

এ নিয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ১১৫টি মামলা হওয়ার তথ্য জানা গেছে। এসব মামলার মধ্যে হত্যা মামলাই ১০৭টি।

আজ সোমবার এবং গতকাল রোববার করা নতুন এই ১০টি হত্যা মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানসহ দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া মামলাগুলোয় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদসহ ডিএমপির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের আসামি করা হয়েছে।

এসব মামলায় অভিযোগ করা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগের অস্ত্রধারী ক্যাডারেরা পুলিশ, বিজিবি ও র‍্যাবকে সঙ্গে নিয়ে নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে হামলা ও গুলি করে। গত ১৫ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, মিরপুর ও রামপুরা ও মোহাম্মদপুরে ১০ জন নিহত হন।

মামলার কাগজপত্রের তথ্য বলছে, গত ৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী ও কাজলায় বিশ্বরোডে মিছিল করছিলেন। এ সময় পুলিশ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের অজ্ঞাতনামা অস্ত্রধারীরা ছাত্র-জনতার ওপর মুহুর্মুহু গুলি ছোড়েন। আসামিদের ছোড়া গুলি গিয়ে রাসেলের মাথায় লাগে। ঘটনাস্থলে রাসেল মারা যান। এ ছাড়া যাত্রাবাড়ীতে সাইদুল ইসলাম, ওবায়দুল ইসলাম ও আরাফাত শরীফ নামের তিনজনকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে আরও চারটি মামলা হয়েছে আজ সোমবার। এসব মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানসহ যাত্রাবাড়ী থানা পর্যায়ের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাদের আসামি করা হয়েছে।

জসীম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে রোববার উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা হয়েছে। জসীম উদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান গত ১৮ জুলাই। এ ছাড়া উত্তরাতে সেদিনই মাহমুদুল হাসান নামের এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছিলেন। সেই ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ২২৬ জনের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা হয়েছে।

গত ৫ আগস্ট বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সিরাজুল ব্যাপারী নামের এক যুবককে হত্যার অভিযোগে সংশ্লিষ্ট থানায় শেখ হাসিনাসহ ১১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ ছাড়া মিরপুরে তোফাজ্জল হোসেন খান নামের এক যুবককে হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে মিরপুর থানায় মামলা হয়েছে। তোফাজ্জল গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান গত ৫ আগস্ট। এ ছাড়া রামপুরায় মোসলেহ উদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মোসলেহ উদ্দিন মারা যান ৫ আগস্ট। আর মোহাম্মদপুরে একজনের মৃত্যুর ঘটনায় গতকাল রোববার শেখ হাসিনাসহ ৮৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়।