শিক্ষক সমিতির সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম, এই ঘটনায় দ্রুত অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচার করা হবে। কিন্তু আজ পাঁচ দিন পরও কোনো অগ্রগতি নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, না স্থানীয় প্রশাসন, কেউ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এ ঘটনায় করা মামলার দায় শুধু শিক্ষকের একার নয়। মামলার ভার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিতে হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য বেনু কুমার দে বলেন, উপাচার্য শিরীণ আখতার বিষয়টি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকে শিক্ষক প্রতিনিধিরাও ছিলেন। বিভাগীয় কমিশনার কথা দিয়েছেন ২২ তারিখের পর সবাইকে নিয়ে বসবেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করবেন।

সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হকের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন শিক্ষক সমিতির সহসভাপতি আলা উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আদনান মান্নান, সদস্য রকিবা নবী প্রমুখ।

এদিকে শিক্ষার্থীরা তাঁদের কর্মসূচি থেকে ছয় দফা দাবি জানিয়েছেন। দাবিগুলো হলো ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আজকের মধ্যে গ্রেপ্তার করা; বে ক্রুজ ইন্টারন্যাশনাল জাহাজের লাইসেন্স বাতিল করা; জাহাজ কর্তৃপক্ষের মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্য প্রত্যাহার করে লিখিত মুচলেকা দিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া; শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়া; গাফিলতির জন্য দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলা করা।

অর্থনীতি বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী মোসাদ্দেকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাস্থলে বিজিবির সদস্যরা মোতায়েন ছিলেন। জাহাজের কর্মীরা স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়ে লাঠিসোঁটা দিয়ে তাঁদের ওপর হামলা করার সময় তাঁদের ভূমিকা ছিল নীরব। এ ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। না হলে তাঁরা ক্লাসে ফিরবেন না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গেই আছেন। এ ধরনের ঘটনা ন্যক্কারজনক। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। মামলার বাদী পরিবর্তন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কেউ একজন হবেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গত মঙ্গলবার টেকনাফের সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ভ্রমণ শেষে এমভি বে ক্রুজ-১ জাহাজে করে ফেরার পথে বসার জায়গা নিয়ে বাদানুবাদের জেরে দুই দফা মারধর করা হয় তাঁদের। এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই বিভাগের শিক্ষক আ ফ ম ফজলে রাব্বি বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত একজনকে আটক করেছে পুলিশ।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, অর্থনীতি বিভাগের ৭৬ জন শিক্ষক–শিক্ষার্থী গত রোববার সেন্ট মার্টিনে শিক্ষাসফরে যান। ফেরার সময় শিক্ষার্থীদের সংরক্ষিত আসনে অন্য যাত্রীদের বসে থাকতে দেখে তাঁরা সুপারভাইজারের কাছে অভিযোগ করেন। সুপারভাইজার লুৎফর রহমান বিষয়টির সমাধান না করে উল্টো এক শিক্ষার্থীকে লাঠি দিয়ে পেটান। পরে জাহাজটি টেকনাফের দমদমিয়া জাহাজ ঘাটে এসে পৌঁছালে শিক্ষার্থীদের ওপর একদল লোক হামলা চালায়।