সেই চুমকী চৌধুরী এখন নারী ভাইস চেয়ারম্যান

চুমকী চৌধুরী

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড থেকে মানবিক বিভাগে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া চুমকী চৌধুরীর দিন কাটত টিউশনি করে। নিজের পড়াশোনা আর পরিবারের খরচ চলত সেই আয় দিয়ে। সেদিন পড়াশোনার খরচ কীভাবে জোগাবেন, সে চিন্তায় কাঁদছিলেন চুমকী চৌধুরী। নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে আজ তিনি আনোয়ারা উপজেলার নারী ভাইস চেয়ারম্যান।

প্রথমবারের মতো চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে গত দুবারের আলোচিত নারী ভাইস চেয়ারম্যান মরিয়ম বেগম বদনীসহ দুজনকে হারিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন চুমকী চৌধুরী। হাঁস প্রতীকে চুমকী চৌধুরী পেয়েছেন ৪৫ হাজার ৯৪০ ভোট। কলস প্রতীকে পারভিন আকতার ২৫ হাজার ৮২ ভোট আর ফুটবল প্রতীকে মরিয়ম বেগম পেয়েছেন ২৩ হাজার ৪৮০ ভোট।

২০০৫ সালের ৪ অক্টোবর প্রথম আলোয় ‘জিপিএ-৫ পেয়েও শঙ্কায় চুমকী চৌধুরী’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। আনোয়ারা ডিগ্রি কলেজের ছাত্রী ছিলেন চুমকী। সেবার চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে মানবিক বিভাগে ১০ হাজার ২২২ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পান মাত্র ৩১ জন। তাঁদের মধ্যে ২১ জনই ছাত্রী। শহরের নামকরা কলেজগুলোকে টেক্কা দিয়ে আনোয়ারা উপজেলা থেকে চুমকী চৌধুরীর সাফল্য নজর কাড়ে সবার। কিন্তু ফল জানার পর দুই চোখ গড়িয়ে পানি পড়ছিল তাঁর। মেয়ের চোখে পানি দেখে নিজেকে ঠিক রাখতে পারেননি বাবা আশীষ চৌধুরীও। আশীষ চৌধুরী সে সময় প্রথম আলোকে জানান, ‘বাবা হয়ে মেয়ের পড়াশোনার খরচ জোগান দিতে পারিনি। তার ভবিষ্যৎ কী, সেটাও জানি না।’

২০০৫ সালের ৪ অক্টোবর প্রথম আলোয় চুমকীকে নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন।

বর্তমানে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদকের পাশাপাশি আনোয়ারা উপজেলা শ্রমিক লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন চুমকী। তিনি চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যও। শিক্ষাজীবনে তিনি এলএলবি, এলএলএম করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপরাধবিজ্ঞানে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন।

নির্বাচিত হওয়ার পর চুমকী চৌধুরী বলেন, নারীদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের পাশাপাশি উপজেলাকে একটি মডেল উপজেলায় রূপান্তরিত করার চেষ্টা থাকবে তাঁর।