আধুনিক আসবাবেই ঘরের পরিচয়
অলংকার হিসেবে চুড়ি, নাকফুল, টিকলি ইত্যাদি অনেক নারীরই প্রিয়। তেমনি ঘরেরও অলংকার আছে। এই অলংকার শুধু সৌন্দর্যই বৃদ্ধি করে না বরং এর ব্যবহারিক তাৎপর্যও আছে। একটি সুন্দর ঘরের অলংকার হলো ঘরটিতে থাকা আসবাবপত্র। যেকোনো একটি বাসায় ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে ঘরের আসবাবপত্রই চোখে পড়ে। একই সঙ্গে প্রকাশ পায় গৃহবাসীদের রুচির পরিচয়ও। আধুনিক আবাসন ব্যবস্থায় আসবাবপত্র যে কতটুকু জরুরি, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
সাজানো-গোছানো যেকোনো কিছু মনকে প্রশান্ত রাখতে সাহায্য করে। নিজের ঘরটাও তার ব্যতিক্রম নয়। ছিমছাম সাজানো ঘরের জন্য এখন মানুষ বেছে নিচ্ছেন অপেক্ষাকৃত ছোট আকৃতির আসবাব। এ ধরনের আসবাবগুলো ঘরে বেশি জায়গা দখল করে না। চলাফেরার জন্য পর্যাপ্ত খালি জায়গা রেখেই ঘরটাকে মনের মতো করে সাজিয়ে তোলা যায়।
তবে অবস্থাভেদে আসবাবের প্রয়োজন মানুষের কাছে বদলে যায়। যেমন যদি কেউ নতুন সংসার শুরু করেন, সে ক্ষেত্রেও আসবাবপত্র বেছে নেওয়ার বেশ কিছু নিয়মকানুন আছে। প্রথমেই বাজেট করে সামর্থ্য অনুযায়ী কোন কোন ঘরের জন্য আসবাব প্রয়োজন তা ঠিক করে ফেলতে হবে। বসার ঘর এবং শোয়ার ঘর সাজানোই বেশি জরুরি। বসার ঘরটা বাড়ির বাসিন্দাদের রুচির বহিঃপ্রকাশ। তাই এ ঘরটি সাজানোর জন্য ২-২-১ সেটের সোফা বেছে নেওয়া যেতে পারে। রং হবে দেয়ালের সঙ্গে মানানসই। একই সঙ্গে সাইড টেবিল, টিভি ক্যাবিনেটটাও নেওয়া যেতে পারে প্রয়োজন বুঝে। দেয়াল সাজানোর জন্য কয়েকটা পেইন্টিং হলেও কিন্তু মন্দ হয় না।
শোয়ার ঘরটা মূলত বিশ্রামের জন্য। একান্ত নিজের মতো করে সময় কাটানোর জন্য। তাই এই ঘরে অন্দরসজ্জা থেকে আসবাব—সবকিছুতেই প্রশান্তির ছায়া থাকা উচিত।
নতুন দম্পতির শোয়ার ঘরে সাধারণত খাট, আলমারি, ড্রেসিং টেবিল ইত্যাদি থাকে। তবে শোয়ার ঘরের আসবাব নির্বাচনের সময় শৌখিনতার পাশাপাশি আরামের বিষয়টিকেও প্রাধান্য দিতে হবে। একটু নিচু নকশার খাট ইদানীং বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আসবাবের পাশাপাশি ঘরে চাইলে গাছ ও ল্যাম্পশ্যাডের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। শৌখিনতার পরিচয় দিতে রাখা যেতে পারে কোজি চেয়ারও।
এখন স্লিম ডিজাইনের ফার্নিচারের চল বেশি। কারুকার্যখচিত আসবাব থাকলে ঘরটাকে অনেক সময় ছোট দেখায়। আবাসন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এখন স্লিম ডিজাইনের ফার্নিচারই বেশি প্রস্তুত করেছে।
এ বিষয়ে কথা হয় দেশের শীর্ষস্থানীয় ফার্নিচার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান হাতিলের সহকারী পরিচালক মাইশা রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘দিন দিন বাসাবাড়ির আকার ছোট হয়ে আসছে। সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই আমরা এখন ফার্নিচার প্রস্তুত করছি’। মাইশা রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের ১ নম্বর ফার্নিচার ব্র্যান্ড হাতিল। আমরা সব সময়ই লেটেস্ট ট্রেন্ড ফলো করে ফার্নিচার বানাই। আমাদের ফার্নিচার মাল্টিফাংশনিং, তাই বিভিন্ন পারপাসে ব্যবহার করা যায়। আর খুব সহজে ঘরে আঁটিয়েও ফেলা যায়।’
বাজেটের মধ্যে আসবাব কিনতে হলে ব্র্যান্ডের আসবাব বাদ দিয়ে চিন্তা করতে হবে। এ ধরনের চিন্তা থেকে অনেকেই তুলনামূলকভাবে কম মানসম্পন্ন আসবাব কিনে থাকেন। এতে বাজেটের মধ্যে আসবাব ঠিকই কিনতে পারেন, তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না।
কম মানসম্পন্ন আসবাব কিছুটা কম দামে পাওয়া গেলেও দু-এক বছরের মধ্যেই তাতে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। সমস্যাগুলো সারাতে গিয়ে অনেক বেগ পোহাতে হয়, নষ্ট হয় টাকাও। তাই বাজেটের মধ্যে আসবাব কিনতে হলেও মানসম্পন্ন আসবাবকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।