চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) চার পদে সিন্ডিকেট নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষক পদ মোট ২৫ জন শিক্ষক মনোনয়ন নিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নুর আহমেদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়। ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারবেন। আগামী ৬ মার্চ চারটি পদে ভোট গ্রহণ হবে।
প্রকাশিত তালিকায় দেখা যায়, আওয়ামী ও বামপন্থী শিক্ষকদের হলুদ দলের শিক্ষকেরা বিভক্ত হয়ে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। আর বিএনপি ও জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের প্রার্থীরা প্রভাষক ও সহকারী অধ্যাপক— দুটি পদে মনোনয়নপত্র নেননি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের রাজনীতি তিনটি পক্ষে বিভক্ত। এগুলো হচ্ছে আওয়ামী ও বামপন্থী শিক্ষকদের হলুদ দল, বিএনপি ও জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সাদা দল এবং তাদের একাংশ শুধু বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম।
কোন পদে কত প্রার্থী
সিন্ডিকেট নির্বাচনে অধ্যাপক পদে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন মোট ছয়জন। এর মধ্যে হলুদ দলের একজন আর ওই দলের ‘বিদ্রোহী’ তিনজন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। এ ছাড়া সাদা দলের একজন ও জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের একজন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।
সহযোগী অধ্যাপক পদে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন পাঁচজন। এর মধ্যে হলুদ দলের একজন, ওই দলের ‘বিদ্রোহী’ তিনজন এবং জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের একজন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।
সহকারী অধ্যাপক পদে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন নয়জন। হলুদ দলের একজন ও ওই দলের ‘বিদ্রোহী’ আটজন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। এ ছাড়া প্রভাষক পদে হলুদ দলের চার ‘বিদ্রোহী’সহ মোট পাঁচজন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।
সব পদে প্রার্থী না দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সাদা দলের আহ্বায়ক মো. শামীম উদ্দিন খান প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর যত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, সব দলীয়করণের ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে তাঁরা তিনটি পদে প্রার্থী দিতে পারেননি। কারণ, ওই তিন পদে তাঁদের ভোটার নেই। একই কথা বলেন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের আহ্বায়ক মো. আল আমীন।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন হলুদ দলের আহ্বায়ক মো. সেকান্দর চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় দল দেখে নিয়োগ দেয় না। দলীয়করণের ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হলে, সম্প্রতি শিক্ষক নিয়োগে যে বিতর্ক হয়েছে, তা হতো না।
‘বিদ্রোহীদের’ বিষয়ে জানতে চাইলে হলুদ দলের আহ্বায়ক বলেন, ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সুযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে ওই দিনের পর তিনি মন্তব্য করবেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেট। শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ ও পদোন্নতি থেকে শুরু করে সব সিদ্ধান্ত নেয় সিন্ডিকেট। তবে ১৬ সদস্যের এই পর্ষদে বর্তমানে নয়টি পদই শূন্য। মেয়াদোত্তীর্ণ সদস্য রয়েছেন আরও একজন।
সিন্ডিকেট নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনের মুখে গত ৩১ জানুয়ারি চারটি পদের নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। নির্বাচনের জন্য ঘোষিত চার পদের বাইরে শূন্য পদগুলো হলো— ডিন প্রতিনিধি, প্রাধ্যক্ষ প্রতিনিধি, একাডেমিক কাউন্সিল থেকে মনোনীত সদস্য, সিনেট মনোনীত বিশিষ্ট নাগরিক, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ।