আরাভ, রবিউল, হৃদয় নামে কাউকে চিনি না: বেনজীর

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ
ছবি: সংগৃহীত

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ বলেছেন, আরাভ ওরফে রবিউল ওরফে হৃদয় নামে কাউকে তিনি চেনেন না। এমনকি তাঁর সঙ্গে প্রাথমিক পরিচয়ও নেই।

ঢাকায় পুলিশ হত্যার আসামি হয়েও দুবাইয়ে সোনার বড় ব্যবসায়ী বনে যাওয়া রবিউল ইসলামকে নিয়ে আলোচনার মধ্যে আজ শনিবার এক ফেসবুক পোস্টে এ কথা বলেছেন বেনজীর আহমেদ। তিনি লিখেছেন, ‘সম্মানিত দেশবাসী, আমি আপনাদের সবাইকে আশ্বস্ত ও সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিত করতে চাই যে “আরাভ ওরফে রবিউল ওরফে হৃদয়” নামে আমি কাউকে চিনি না। আমার সাথে তার এমনকি প্রাথমিক পরিচয়ও নাই।’

ছয় মাসের কম সময় আগে বাংলাদেশ পুলিশের প্রধানের পদ থেকে অবসরে গেছেন বেনজীর আহমেদ। এর আগে ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার, র‌্যাবের মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘আমি আমার ল এনফোর্সমেন্ট ক্যারিয়ারের পুরোটা সময় খুনি, সন্ত্রাসী, ড্রাগ ব্যবসায়ী, চোরাকারবারি, ভেজালকারী ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি, কখনোই সখ্যতা নয়।’

রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানকে নিয়ে এই ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ

সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে গত বুধবার এক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আরাভ জুয়েলার্সের উদ্বোধন করা আরাভ খান এখন বাংলাদেশে তুমুল আলোচিত নাম। এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ক্রীড়া ও বিনোদনজগতের অনেক তারকাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ফেসবুকে একাধিক পোস্ট দিয়েছিলেন আরাভ খান। তখনই তাঁকে শনাক্ত করে ফেলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা।

গোয়েন্দা পুলিশের তথ্যমতে, আরাভ জুয়েলার্স নামের ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক আরাভ খানের আসল নাম রবিউল ইসলাম। বাংলাদেশের গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় তাঁর বাড়ি। তিনি সোহাগ মোল্লা, হৃদয় শেখ, আপন—রকম কয়েকটি নামে পরিচিত। ২০১৮ সালের ৭ জুলাই ঢাকায় পুলিশের পরিদর্শক মামুন এমরান খান খুন হন। সেই খুনের আসামি হয়ে দেশ ছেড়েছিলেন রবিউল।

ডিবি বলছে, দেশ থেকে পালিয়ে রবিউল ইসলাম প্রথমে ভারতে যান। সেখানে আরাভ খান নামে পাসপোর্ট সংগ্রহ করে দুবাইয়ে চলে যান। এখন তিনি দুবাইয়ের বড় সোনা ব্যবসায়ী।

আরও পড়ুন

গত বুধবার রাতে দুবাইয়ের নিউ গোল্ড সুকে জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আরাভ জুয়েলার্সের উদ্বোধন হয়। সেখানে বাংলাদেশের ক্রীড়া ও বিনোদনজগতের বেশ কয়েকজন তারকা উপস্থিত হয়েছিলেন। আরাভ জুয়েলার্সের উদ্বোধন উপলক্ষে ৬০ কেজি সোনা দিয়ে বানানো হয় বাজপাখির আদলে লোগো, যা তৈরিতে খরচ হয় প্রায় ৪৫ কোটি টাকা।

আরও পড়ুন

রবিউল ইসলাম বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার চার–পাঁচ বছরে দুবাইয়ে এত টাকার মালিক কীভাবে হলেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক আসিফ নজরুল। আজ সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সেমিনারে বক্তব্যে তিনি বলেছেন, ‘দেশে দিনের পর দিন ভিক্ষুকের সংখ্যা বাড়ছে। আর দিনমজুরের ছেলে সোনা দিয়ে লোগো বানায়। তা–ও মাত্র চার-পাঁচ বছরে। কী পরিমাণ টাকা লুটপাট। এটা কি তাঁর টাকা? আমরা পুলিশের সাবেক একজন বড় কর্মকর্তার নাম শুনি। তাঁর নাম আমরা নিতে পারছি না।’

আরও পড়ুন