জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করা ছাত্রসমাজের প্রাণের দাবি: ছাত্রলীগ সভাপতি

২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন করে ছাত্রলীগ
ছবি: প্রথম আলো

জামায়াত-শিবিরকে আইনগত ও রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধ করা ছাত্রসমাজের প্রাণের দাবি বলে বলেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। তিনি বলেছেন, গণতন্ত্রের ভেক ধরে যারা রাজাকারদের পুনর্বাসনের রাজনীতি করে, যারা পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজকে সোচ্চার হতে হবে।

আজ শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।

২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস স্মরণে ‘গণহত্যার সাংবিধানিক ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, ‘গণহত্যা অস্বীকৃতি আইন প্রবর্তন’, পাকিস্তানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা প্রার্থনা এবং স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধী ও মৌলবাদী সংগঠন জামায়াত-শিবিরকে আইনগতভাবে নিষিদ্ধ’ করার দাবিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।

মানববন্ধনে গণহত্যার জন্য যারা দায়ী, তাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান সাদ্দাম হোসেন। তিনি বলেন, ‘একাত্তরের গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এবং বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমাদের কিছু দাবি রয়েছে। একাত্তরের গণহত্যা আমাদের সংবিধানের অংশে পরিণত হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। সংবিধানে আলাদা একটি অনুচ্ছেদ হিসেবে যেন গণহত্যার স্বীকৃতি দেওয়া হয়।’ পাশাপাশি ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিকভাবে গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

‘গণহত্যা অস্বীকৃতি আইন প্রবর্তন’–এর আহ্বান জানিয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন,‘ বাংলাদেশের গণহত্যা  ও বাংলার মায়েদের সম্ভ্রমহানি নিয়ে যারা তামাশা করে এবং ৩০ লাখ মানুষের জীবন নিয়ে যারা মশকরা করে, তাদের যেন আমরা আইনের আওতায় শাস্তি দিতে পারি, অবিলম্বে “গণহত্যা অস্বীকৃতি আইন” পাস করে, সেটি নিশ্চিত করার জন্য আমরা সরকারকে আহ্বান জানাই।’

মানববন্ধনে বিভিন্ন দাবি-সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে ছাত্রলীগের কর্মীরা
ছবি: প্রথম আলো

জামায়াত-শিবিরকে আইনগতভাবে নিষিদ্ধ করা এবং প্রয়োজনে সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান সাদ্দাম হোসেন। তিনি আরও বলেন, ‘বাহাত্তরের সংবিধানে ধর্মকে রাজনীতির হাতিয়ার করার কোনো সুযোগ ছিল না। অবৈধ সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান সংবিধান পরিবর্তন করে ধর্ম ও সাম্প্রদায়িকতাকে কেন্দ্র করে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেন। যারা যুদ্ধাপরাধের দায়ে সম্পৃক্ত আছে, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী তাদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই।

বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও স্পষ্টভাবে ঘোষিত হয়েছে যে জামায়াত সরাসরি যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত। আমরা মনে করি, জামায়াত-শিবিরকে আইনগত ও রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধ করার সময় এসেছে। এটি ছাত্রসমাজের প্রাণের দাবি।’

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন। এতে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান।