‘রাজনৈতিক বিরোধে’ তিন যুবককে অপহরণ, ১৭ ঘণ্টা পর উদ্ধার
চট্টগ্রামের রাউজানে একটি ভোজের অনুষ্ঠান থেকে তিন যুবককে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রায় ১৭ ঘণ্টা পর তাঁদের উদ্ধার করে। আজ শনিবার বেলা একটার দিকে উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চৌধুরীহাট এলাকার একটি স্কুলমাঠ থেকে তাঁদের উদ্ধার করা হয়। এর আগে গতকাল শুক্রবার রাত আটটার দিকে তাঁদের অপহরণ করা হয়েছিল।
উদ্ধার হওয়া তিন যুবক হলেন নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের শেখপাড়া গ্রামের মো. মানিকের ছেলে মো. সাজ্জাদ, রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মো. দুলালের ছেলে ইমাম হোসেন (২৭) ও একই উপজেলার কামালের ছেলে মো. সোহেল। এর মধ্যে সাজ্জাদ ছাত্রদলের কর্মী বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির উপজেলা শাখার সাবেক সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন।
ভুক্তভোগীদের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে নোয়াপাড়া ইউনিয়নের পলোয়ান পাড়া গ্রামে একটি মেজবান অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন তিন বন্ধু সাজ্জাদ, ইমাম ও সোহেল। সেখান থেকে ছয়-আটজন অস্ত্রধারী ব্যক্তি তাঁদের অপহরণ করে একটি অটোরিকশায় তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যান। সেখানে তিন যুবককে চোখ-মুখ বেঁধে বেধড়ক পেটানো হয়। পরে পুলিশ আহত অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে। তাঁদের চিকিৎসার জন্য রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী মুহাম্মদ সাজ্জাদের ভাই মুহাম্মদ শাকিল প্রথম আলোকে বলেন, তিন বন্ধু হামলার উদ্দেশে ওই এলাকায় গেছেন, এমন স্বীকারোক্তি আদায়ের উদ্দেশ্যে তাঁদের মারধর করে অপহরণকারীরা। তাঁর বাবা বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত। তাই তাঁর ভাইকে অপহরণ করা হয়। দলের প্রতিপক্ষের নেতা-কর্মীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম শফিকুল আলম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, অপহরণের খবর পেয়ে রাতেই তিনজনকে উদ্ধারে পুলিশ অভিযান শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় একটি স্কুল মাঠ থেকে তিনজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের মাধ্যমে জানা গেছে, রাজনৈতিক বিরোধ থেকে তিনজনকে অপহরণ করা হয়। ওসি এ কে এম শফিকুল আলম চৌধুরী আরও বলেন, এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। মামলা নথিভুক্ত করার পর আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
নোয়াপাড়া ইউনিয়নে গত ৫ আগস্টের পর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত ২২ বার হামলা, গোলাগুলি ও সংঘর্ষে জড়িয়েছে স্থানীয় বিএনপির দুটি পক্ষ। তাঁরা পৃথকভাবে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খন্দকার ও ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী। যদিও দলের এই দুই নেতা এসব ঘটনার সঙ্গে তাঁদের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করে আসছেন।