তেহরানে বাংলাদেশি সাংবাদিকের ভয়ংকর ১২ দিন, গুপ্তচর সন্দেহে আটকও হন

টানা ১২ দিন ধরে চলা ইরান–ইসরায়েল সংঘাতের সময় তেহরানে থেকে দায়িত্ব পালন করেছেন রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগের বাংলাদেশি সাংবাদিক আশরাফুর রহমান। প্রতিমুহূর্তে মৃত্যুভয় ও রেড অ্যালার্টের মধ্যে কাজ করতে হয়েছে। গুপ্তচর সন্দেহে তাঁকে একবার আটকও করা হয়েছিল। ঢাকা থেকে মুঠোফোনে সেই সব অভিজ্ঞতার কথা শুনে অনুলিখন করেছেন প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি বায়েজিদ আহমেদ। এখানে সেটি তুলে ধরা হলো: 

রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগের বাংলাদেশি সাংবাদিক আশরাফুর রহমানছবি: আশরাফুর রহমানের সৌজন্যে

ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা প্রাচীন শহর ময়মনসিংহে আমার বেড়ে ওঠা নব্বইয়ের দশকে। আনন্দ মোহন কলেজে পড়ালেখা শেষ করে জীবিকার তাগিদে ২০০৩ সালে পাড়ি দিই ইরানে। আমার চাকরিজীবনের প্রথম কর্মস্থল রাজধানী তেহরান। তেহরান রেডিওর বাংলা বিভাগে সাংবাদিকতা করছি ২২ বছর ধরে। এর মধ্যে দেশে ফিরে বিয়ে করেছি। সংসার বড় হয়েছে। আমার ঘর আলো করে এসেছে দুই পুত্র। তারাও একসময় তেহরানে আমার সঙ্গে ছিল। বর্তমানে তারা বাংলাদেশে অবস্থান করছে।

হামলার লক্ষ্য ছিল ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম। তখন টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার কার্যক্রম চলছিল। এতে টেলিভিশনের কর্মরত দুজন সাংবাদিক নিহত হন। এ ঘটনায় আমরা আরও ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ি।
তেহরানের রাস্তায় নিরাপত্তায় কাজ করছে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী বাসিজের সদ্যসরা, এরা মূলত ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) একটি শাখা
ছবি: আশরাফুর রহমানের সৌজন্যে

রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগে আমিসহ মোট সাতজন বাংলাদেশি কাজ করি। ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরান ব্রডকাস্টিংয়ের (আইআরআইবি) অধীনে পরিচালিত হয় রেডিও তেহরান। বাংলা বিভাগে আমাদের সঙ্গে দুজন ইরানিও কাজ করেন। মোট ৯ জন মিলে ২৪ ঘণ্টায় দেড় ঘণ্টার বাংলা অনুষ্ঠান ও সংবাদ প্রচার করি শর্ট ওয়েভে। এ ছাড়া আমাদের কার্যক্রম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও প্রচার করা হয়। 

আরও পড়ুন

১৩ জুন ইরানে প্রথম হামলা করে ইসরায়েল। তখন রাত সাড়ে তিনটা। তখনো পুরোটা বুঝে উঠতে পারিনি। সকালে জানতে পারি, ইরানে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে ইসরায়েল হামলা করেছে। আমাদের দপ্তর তেহরানের ওয়ালিআসর সড়কে জমেজামে অবস্থিত। হামলার পর থেকে আতঙ্কে দিন কাটতে থাকে। প্রতিমুহূর্তে ইসরায়েলি বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার ভয়ে থাকতাম। সারাক্ষণই মনে হতো এই যেন আমাদের ওপর বোমা এসে পড়বে। ১৬ জুন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আমাদের দপ্তরের প্রায় ৩০০ মিটার দূরে ইসরায়েলি বাহিনীর চারটি ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়ে। হামলার লক্ষ্য ছিল ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম। তখন টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার কার্যক্রম চলছিল। এতে টেলিভিশনের কর্মরত দুজন সাংবাদিক নিহত হন। এ ঘটনায় আমরা আরও ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ি।

ওই হামলার পর থেকে আমরা তেহরানের নিজ নিজ বাসা থেকে ‘হোম অফিস’ করি। তবু রেডিও তেহরানের সংবাদ ও অনুষ্ঠান একমুহূর্তের জন্য বন্ধ রাখিনি। ২২ জুন থেকে আমরা নতুন জায়গায় অফিস শুরু করি। 

সংঘাতের দিনগুলোতে বাংলাদেশে আমাদের পরিবারের সদস্যরা সারাক্ষণ উৎকণ্ঠায় থাকত। তেহরানে মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক অপেক্ষাকৃত দুর্বল ছিল। ফোনে ঠিকমতো আমাদের পাওয়া যেত না। তাই আত্মীয়স্বজনের উদ্বেগ–উৎকণ্ঠা আরও বেড়ে যেত। 

এর মধ্যে আমার জীবনে ঘটে যায় এক বিভীষিকাময় ঘটনা। আমি দুই বছর ধরে যে বাসায় ভাড়া থাকি, তার অবস্থান তেহরানের রেলস্টেশন এলাকার মোখতারি সড়কে। বাড়ির মালিক ইরানি হলেও তিনি সেই ভবনে থাকেন না। এই এলাকায় আফগানিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, ভারত ও আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ থাকেন। তবে সবচেয়ে বেশি থাকেন আফগানরা। তাঁরা তেহরানের বিভিন্ন দোকান ও বাসাবাড়িতে কাজ করেন।

আমি যে বাড়িতে থাকি, সেটি পাঁচতলা। আমি পাঁচতলার ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকি। নিচতলায় একটা ফ্ল্যাটে এক আফগান পরিবার ভাড়া থাকেন। বাকি তিনটি ফ্ল্যাটে থাকেন ইরানিরা। ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার পর থেকে এই ফ্ল্যাট তিনটি খালি পড়ে আছে। সেখানকার বাসিন্দারা ভয়ে গ্রামে চলে গেছেন।

ওই হামলার পর থেকে আমরা তেহরানের নিজ নিজ বাসা থেকে ‘হোম অফিস’ করি। তবু রেডিও তেহরানের সংবাদ ও অনুষ্ঠান একমুহূর্তের জন্য বন্ধ রাখিনি। ২২ জুন থেকে আমরা নতুন জায়গায় অফিস শুরু করি। 
যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর তেহরানের রাস্তায় ইরানি শিশুদের উল্লাস
ছবি: আশরাফুর রহমানের সৌজন্যে

১৯ জুন রাত ৯টার দিকে আমার ফ্ল্যাটের দরজায় হঠাৎ কে যেন টোকা দেয়। আমি তখন ওয়াশরুমে। ফিরতে একটু দেরি হয়। ততক্ষণে আমার বাসার কলিং বেল অনবরত বাজতে থাকে। দরজা খুলে দেখি ইরানের আধা সামরিক বাহিনী বাসিজের ইউনিফর্ম পরা চারজন সদস্য। তাঁদের সবার হাতে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র, সম্ভবত একে–৪৭ রাইফেল। দরজা খুলতে দেরি হলো কেন, কড়া ভাষায় জানতে চাইলেন তাঁদের একজন। তাঁরা আমাকে ফারসিতে জিজ্ঞেস করছিলেন। আমি ওয়াশরুমের কথা বললেও তাঁরা বিশ্বাস করেননি। দরজা খুলতে দেরি করায়, তাঁদের সন্দেহ ছিল আমি মনে হয় প্রতিরোধের চেষ্টা করছি। তাই আমাকে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে তাঁরা জোর করে আমার ঘরে ঢোকেন। শুরুতে তাঁরা আমার হাত পেছনে নিয়ে বেঁধে ফেলেন। আমার মুঠোফোন নিয়ে নেন। এরপর আমার মুখ কালো কাপড়ে দিয়ে ঢেকে দেন। একজন সন্দেহভাজন অপরাধীর সঙ্গে যে রকম আচরণ করা হয়, আমার সঙ্গে ঠিক সে রকমই করা হলো।

তখন আমি ভীষণ ভয় পেয়ে যাই। কিন্তু চেষ্টা করি তা প্রকাশ না করতে। কথাবার্তায় স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করি। যদিও ভয় কাটছিল না। কিন্তু নিজে নির্দোষ, তাই অটল থাকার চেষ্টা করি।

আমি ভেবেছিলাম তাঁরা বোধ হয় আধা সামরিক বাহিনীর পোশাকে কোনো সন্ত্রাসী। আমার চোখ বাঁধা থাকলেও বাসার সব রুমে তল্লাশির মতো কিছু একটা হচ্ছে বুঝতে পারছিলাম। একপর্যায়ে তাঁদের একজন আমার পরিচয় জানতে চান। আমাকে তাঁরা তাঁদের পরিচয়ও দেন। আমি ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরান ব্রডকাস্টিংয়ের সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরও তাঁরা আমাকে বিশ্বাস করছিলেন না। তাঁদের কথাবার্তা ও পারিপার্শ্বিকতা থেকে বুঝতে পারি, তাঁরা আমার ব্যাগ থেকে অফিসের পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট যাচাই–বাছাই করছেন। তখন বুঝতে পারি তাঁরা তেমন শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত নন। তাঁরা এমন আচরণ করেন, আমি যেন একজন বিদেশি গুপ্তচর।

আরও পড়ুন
১৯ জুন রাত ৯টার দিকে আমার ফ্ল্যাটের দরজায় হঠাৎ কে যেন টোকা দেয়। আমি তখন ওয়াশরুমে। ফিরতে একটু দেরি হয়। ততক্ষণে আমার বাসার কলিং বেল অনবরত বাজতে থাকে। দরজা খুলে দেখি ইরানের আধা সামরিক বাহিনী বাসিজের ইউনিফর্ম পরা চারজন সদস্য। তাঁদের সবার হাতে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র, সম্ভবত একে–৪৭ রাইফেল।
যুদ্ধ চলাকালীন তেহরানের রাস্তায় ইরানিদের সংহতি সমাবেশ
ছবি: আশরাফুর রহমানের সৌজন্যে

প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে রুমে তল্লাশি শেষে বাসিজ বাহিনীর সদস্যরা আমাকে তাঁদের সঙ্গে যেতে বলেন। পেছনে হাত বেঁধে এবং চোখ কালো কাপড়ে ঢেকে আমাকে সিঁড়ি দিয়ে পাঁচতলা থেকে নিচে নামিয়ে তাঁদের গাড়িতে ওঠান। গাড়িতে ওঠার পর তাঁদের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে তুমি গুপ্তচর না। কারণ, কেউ অপরাধী হলে তার মধ্যে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও ভয়ের চিহ্ন দেখা যায়। কিন্তু তোমাকে একদম স্বাভাবিক দেখাচ্ছে। তারপরও তোমাকে নিয়ে যেতে হচ্ছে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে।’ এর জবাবে আমি তাঁকে বলি, ‘আপনি আপনার দায়িত্ব পালন করুন। তবে নিশ্চিত থাকুন, আমি কোনো ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত নই।’

তাঁরা জোর করে আমার ঘরে ঢোকেন। শুরুতে তাঁরা আমার হাত পেছনে নিয়ে বেঁধে ফেলেন। আমার মুঠোফোন নিয়ে নেন। এরপর আমার মুখ কালো কাপড়ে দিয়ে ঢেকে দেন। একজন সন্দেহভাজন অপরাধীর সঙ্গে যে রকম আচরণ করা হয়, আমার সঙ্গে ঠিক সে রকমই করা হলো।

আধা সামরিক বাহিনী বাসিজের গাড়ি ২০–৩০ মিনিট চলে। একপর্যায়ে আমাকে নেওয়া হয় তাঁদের দপ্তরে। তখন কালো কাপড় খুলে দেন। জানতে পারি এটা তাঁদের আঞ্চলিক দপ্তর। আমাকে নেওয়া হয় ছোট্ট একটা ঘরে। এটা ডিটেনশন ক্যাম্পের মতো, যেখানে অপরাধীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে সেখানে আসেন বাসিজের একজন ঊর্ধ্বতন গোয়েন্দা কর্মকর্তা। তিনি আমার সঙ্গে করমর্দন করে নিজের পরিচয় দেন। বাসিজের সশস্ত্র সদস্যরা অপরাধী সন্দেহে আমাকে ধরে নিয়ে আসায় তিনি প্রথমে আমার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘তোমাদের এলাকায় আমরা বেশ কিছু দুষ্কৃতকারীকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। তাদের একজন তোমার সম্পর্কে তথ্য দিয়েছে। তবে আমরা তোমার সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে ও বাসা তল্লাশি করে জানতে পেরেছি যে তুমি আসলেই নির্দোষ।’

আমাকে জিজ্ঞাসাবাদের খবর পেয়ে সেখানে আসেন বাসিজের ওই অঞ্চলের প্রধান ড. ইসলামি। তিনিও দুঃখ প্রকাশ করে আমার কাছে বিনীতভাবে ক্ষমা চান। এরপর বাসিজের সদস্যরা আমাকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে চলে যান। এ সময় আমার বাসা থেকে নেওয়া কম্পিউটার (ডেস্কটপ), মুঠোফোন, পাসপোর্ট, অফিসের পরিচয়পত্রসহ অন্যান্য জিনিস ফেরত দেওয়া হয়।

গাড়িতে ওঠার পর তাঁদের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে তুমি অপরাধী না। কারণ, কেউ অপরাধী হলে তার মধ্যে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও ভয়ের চিহ্ন দেখা যায়। কিন্তু তোমাকে একদম স্বাভাবিক দেখাচ্ছে। তারপরও তোমাকে নিয়ে যেতে হচ্ছে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে।’
যুদ্ধবিরতির সংবাদে তেহরানের রাস্তায় জাতীয় পতাকা হাতে ইরানিরা
ছবি: আশরাফুর রহমানের সৌজন্যে

আমি বাসায় পৌঁছার পরও একজন ঊর্ধ্বতন গোয়েন্দা কর্মকর্তা আমাকে ফোন করেছিলেন। আমি ভয় পেয়েছি কি না, সুস্থ আছি কি না, বাসার সব জিনিসপত্র ঠিক আছে কি না, তা জানতে চেয়েছিলেন।

বাসিজের আন্তরিক ব্যবহার একপর্যায়ে আমাকে স্বাভাবিক হতে সাহায্য করে। বাসা তল্লাশির সময় কোনো কিছু ভেঙে থাকলে, তার ক্ষতিপূরণ হিসেবে বাসিজের সদর দপ্তর থেকে আমাকে দুই মিলিয়ন ইরানি মুদ্রা তুমান দেওয়া হয়, যা বাংলাদেশি টাকায় তিন হাজার টাকার মতো।

এরপর বাসিজের সদস্যরা আমাকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে চলে যান। এ সময় আমার বাসা থেকে নেওয়া কম্পিউটার (ডেস্কটপ), মুঠোফোন, পাসপোর্ট, অফিসের পরিচয়পত্রসহ অন্যান্য জিনিস ফেরত দেওয়া হয়।

ইরান–ইসরায়েলের এই সংঘাতের সময় সাত শতাধিক ব্যক্তিকে গুপ্তচর সন্দেহে আটক করা হয়েছে। মোসাদ, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ও ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই–৬–এর পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে।

তেহরানে ইসরায়েলের হামলার সময় দেখেছি, ইরানিরা রাস্তায় ও বাসার ছাদে বের হয়ে এসেছেন। অনেকেই নিজেদের ছবি তুলেছেন, ভিডিও করেছেন। জীবন হাতের মুঠোয় নিয়ে রাস্তায় নেমে ইরানি জাতীয়তাবাদের সমর্থনে সমাবেশ করেছেন।

হামলায় ইরানের ছয় শর বেশি মানুষ মারা গেলেও ইরানের নৈতিক বিজয় হয়েছে বলে আমি মনে করি। কবি ও দার্শনিক ওমর খৈয়ামের দেশের মানুষ শান্তিপ্রিয়, কিন্তু বিনা উসকানিতে তাঁদের ওপর কেউ হামলা করলে, গোলাপপ্রিয় ইরানের জনগণ হাত গুটিয়ে বসে থাকেন না।