কারণ উদ্‌ঘাটনে কমিটি গঠন করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ

হাইকোর্ট ভবনফাইল ছবি

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক শুয়াইবুর রহমান চৌধুরীর মৃত্যুর কারণ উদ্‌ঘাটনে সাত দিনের মধ্যে দুজন হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞসহ তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিবের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কমিটিকে ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

একটি রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার রুলসহ এ আদেশ দেন। ‘সিলেট–লন্ডন ফ্লাইটে ব্রিটিশ বাংলাদেশি যাত্রীর মৃত্যু!’ শিরোনামে গত নভেম্বরে একটি গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদন যুক্ত করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে চলতি মাসে ওই রিট করা হয়।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ, তাঁকে সহায়তা করেন আইনজীবী সঞ্জয় মন্ডল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আযাদ।

পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী যখন কোনো যাত্রী বিমানে অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন বিমান থেকে কাছাকাছি বিমানবন্দরে একটি এসওএস পাঠাতে হয়। কিন্তু শুয়াইবুর রহমান চৌধুরীর অসুস্থ হওয়া থেকে শুরু করে মৃত্যুর আগপর্যন্ত কোনো এসওএস কাছাকাছি কোনো বিমানবন্দরে পাঠানো হয়নি। সিলেট থেকে লন্ডনগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট ছেড়ে যাওয়ার আড়াই ঘণ্টার মধ্যেই অসুস্থ হয়ে গত ১২ নভেম্বর মারা যান শুয়াইবুর। যদিও পাইলট ৩০ মিনিট সময় পেয়েছিলেন, যা আন্তর্জাতিক বিমান পরিচালনা নীতিমালাসহ আকাশপথে পরিবহন (মন্ট্রিল কনভেনশন) আইন, বেসামরিক বিমান চলাচল আইন, বিমান দুর্ঘটনা ও মারাত্মক ঘটনার তদন্ত বিধিমালা এবং সংবিধানের ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদ পরিপন্থী। এসব যুক্তিতে রিটটি করা হলে শুনানি নিয়ে আদালত রুলসহ ওই আদেশ দেন।’

রুলে ২০২০ সালের আকাশপথে পরিবহন (মন্ট্রিল কনভেনশন) আইন এবং ২০২৩ সালের বিমান দুর্ঘটনা ও মারাত্মক ঘটনার তদন্ত বিধিমালা অনুযায়ী দুর্ঘটনার যাত্রীর ক্ষেত্রে আইনের বিধানগুলো পালন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আকাশপথে পরিবহন (মন্ট্রিল কনভেনশন) আইন অনুযায়ী শুয়াইবুর রহমান চৌধুরীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং যাত্রী অসুস্থ থাকা অবস্থায় কাছের বিমানবন্দরে অবতরণ না করার কারণে পাইলটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, পররাষ্ট্রসচিব, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, পাইলটসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে বলে জানান আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।