ঢাকা থেকে হাটহাজারিতে মহিউদ্দিন, রেল দুর্ঘটনার বিচার দাবি

মিরসরাইয়ের দুর্ঘটনার বিচারের দাবিতে প্ল্যাকার্ড হাতে দঁাড়িয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মহিউদ্দিন রনি। গতকাল চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার চিকনদণ্ডী ইউনিয়নের খন্দকিয়া এলাকায়।
সৌরভ দাশ

বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা পরিবর্তনে ছয় দফা দাবিতে আন্দোলনে নামা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে রেল দুর্ঘটনায় নিহত ১১ জনের ‘হত্যার’ বিচার দাবি করেছেন।

সোমবার দু্পুরে চট্টগ্রামের হাটহাজারি উপজেলার খন্দকিয়া গ্রামে যান রনি। ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতরা সবাই এই গ্রামের বাসিন্দা। রনি সেখানে গিয়ে নিহতদের স্বজনদের সমবেদনা জানান। এসময় তিনি এই ঘটনাকে হত্যাকাণ্ড আখ্যা দিয়ে বিচার দাবি করেন।  

গত শুক্রবার মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া এলাকায় মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১১ জন নিহত হন। আহত হন পাঁচজন। নিহতদের মধ্যে মাইক্রোবাসচালক ছাড়া বাকিরা স্থানীয় একটি কোচিং সেন্টারের শিক্ষক ও ছাত্র।

দুর্ঘটনায় নিহত ইকবাল হোসেন মারুফের কবরের সামনে দাঁড়িয়ে মহিউদ্দিন রনি সোমবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘রেলওয়ের অব্যবস্থাপনার কারণে শিক্ষার্থীসহ ১১ জনের নিহতের ঘটনার বিচার চাই। এটি দুর্ঘটনা নয়, হত্যা। জেনে–শুনে গেটম্যান দায়িত্ব পালন না করায় এই ঘটনা ঘটেছে। অবহেলা না করে আগে থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হলে এই ঘটনা ঘটতো না। অনেক গেটম্যান তাঁর দায়িত্ব কি তাও জানেন না।’

রেলওয়ের সমন্বয় ও তদারকির না থাকার কারণে এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে উল্লেখ করে রনি বলেন, নিহতদের পরিবারগুলো বেশির ভাগই দরিদ্র। তারা বেঁচে থাকলে পরিবারের হাল ধরতে পারতেন। কিন্তু রেলের অব্যবস্থাপনার কারণে পরিবারগুলো আজ নিঃস্ব।

আগের ছয় দফা দাবির সঙ্গে সোমবার থেকে আরেক দফা দাবি যোগ হচ্ছে উল্লেখ করে ঢাবির এই শিক্ষার্থী বলেন, ১১ জনকে ‘হত্যার’ বিচারসহ অন্য দাবিগুলো আদায়ে তিনি সারা দেশে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য প্রচারণা চালাচ্ছেন।

রেলের অব্যবস্থাপনা পরিবর্তনের দাবিতে গত ৭ জুলাই থেকে রাজধানী কমলাপুর রেলস্টেশনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রনি। ১০ জুলাই ঈদুল আজহার দিনেও তিনি সেখানে অবস্থানে ছিলেন। রনির এই আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও সাধারণ মানুষ সংহতি জানান।

পরে গত ২৭ জুলাই রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর ও বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদারের সঙ্গে দীর্ঘ চার ঘণ্টা বৈঠক করেন রনি। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আস্থা রেখে এবং রেল মন্ত্রণালয়ের সচিব ও রেলওয়ের মহাপরিচালকের প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে আমার আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে কোনো তৃতীয় পক্ষ যেন দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে, সে জন্য আমি অবস্থান কর্মসূচি সাময়িক স্থগিত ঘোষণা করছি।’