‘শিল্পীর তুলি বন্দুকের চেয়ে তীক্ষ্ণ’

‘স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ’ অনুষ্ঠানে শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীর শিল্পকর্ম নিয়ে আলোচনা করছেন শামসুল ওয়ারেস। মঞ্চে (বাঁ থেকে) সৈয়দা মাহবুবা করিম, লিয়াকত আলী লাকী, মো. আতাউর রহমান, শাওন আকন্দ ও মইনুল ইসলাম। গতকাল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে
খালেদ সরকার

দেশের রাজনৈতিক সংকটে চারুশিল্পীদের ভূমিকা ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন অথবা সাংস্কৃতিক বিপ্লবে নানাভাবে চারুশিল্পীদের কাজ প্রভাব রেখেছে। কারও হাত ধরে এগিয়েছে দেশের শিল্পমাধ্যমটি, কেউ মজবুত করেছেন কাঠামো। প্রয়াত চারুশিল্পীদের স্মরণে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত ‘স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ’ অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপক এবং আলোচকদের বক্তব্যে উঠে আসে এসব কথা।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো এ স্মরণ অনুষ্ঠান। গতকাল বুধবার ছিল শিল্পী এস এম সুলতান এবং শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীকে নিয়ে স্মরণ। প্রথম পর্বে এস এম সুলতানের জীবন ও কর্মজীবন নিয়ে লেখা মূল প্রবন্ধ পড়েন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মো. গোলাম রাব্বানী। প্রথম পর্বের অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিল্পী নাসিম আহমেদ নাদভী এবং শিল্পকলার চারুকলা বিভাগের পরিচালক সৈয়দা মাহবুবা করিম।

দ্বিতীয় পর্ব ছিল বাংলাদেশের গ্রাফিক আর্টকে আধুনিক মানে পৌঁছে দেওয়ার কারিগর শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীকে নিয়ে স্মরণ। ‘শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীর শিল্প ভাবনা’ শিরোনাম এর প্রবন্ধটি শিল্পী শাওন আকন্দের লেখা।

কাইয়ুম চৌধুরীর ছবিতে বাংলাদেশের লোকজ ধারার আধুনিকায়ন হয়েছে উল্লেখ করে প্রবন্ধকার বলেন, সীমার মাঝে অসীমকে ধরতে পারার ক্ষমতা ছিল তাঁর। এস এম সুলতানের ছবির মতো কাইয়ুম চৌধুরীর ছবিতেও প্রকৃতি আর মানুষ একাত্ম হয়েছে। এই প্রবন্ধে উঠে আসে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের চারু ও কারুশিল্প সংগ্রাম পরিষদের সভার একটি প্রতিবেদনের কথা। তখন দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল ‘শিল্পীর তুলি বন্দুকের চেয়ে তীক্ষ্ণ’ শিরোনামে খবরটি।

এ পর্বে নিজের বাবাকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করেন কাইয়ুম চৌধুরীর ছেলে মইনুল ইসলাম জাবের। এ ছাড়া আলোচনা করেছেন স্থপতি শামসুল ওয়ারেস। বক্তব্য দেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. আতাউর রহমান। এস এম সুলতান এবং কাইয়ুম চৌধুরী স্মরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।