চিনিকলের আগুন নেভাতে যোগ দিয়েছে বিমান, নৌ ও সেনাবাহিনী

কারখানায় জ্বলছে আগুন। নেভানোর চেষ্টা করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা
ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানা এলাকায় চিনিকলের আগুন রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। তবে কারখানার যে গুদামে আগুন লাগে, সেখানে এখনো জ্বলছে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের সঙ্গে আগুন নেভাতে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ বিমান, নৌ ও সেনাবাহিনীর দল। এরই মধ্য ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এস আলম সুপার রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামে প্রতিষ্ঠানটির অবস্থান কর্ণফুলী নদীর পাড়ের ইছানগর এলাকায়। বিকেল চারটার দিকে কারখানার একটি গুদামে আগুন লাগে। আগুন লাগার সময় কারখানাটি চালু ছিল। সেখানে প্রায় সাড়ে ৫০০ শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করেন। আগুন লাগার পর কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
কারাখানা সূত্রে জানা যায়, কারখানায় মোট ৫টি গুদাম রয়েছে। প্রতিটি গুদামের ধারণ ক্ষমতা ৬০ হাজার মেট্রিক টন।

এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের উপ মহাব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, গুদামে ৬০ হাজার মেট্রিক টন অপরিশোধিত চিনি ছিল।

রাত পৌনে ৯টায় ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক দীনমণি শর্মা বলেন, রাত ৮টার দিকে আগুনের তীব্রতা বাইরের দিকে কমে আসে। তখন থেকে কেবল গুদামের ভেতরে অপরিশোধিত চিনিগুলো পুড়ছিল।

ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. আবদুল মালেক বলেন, রাত সাড়ে ৭টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ শুরু করে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী। পরে যোগ দেয় নৌবাহিনীর একটি দলও। রাত নয়টার দিকে যুক্ত সেনাবাহিনীর একটি দলও।

বাংলাদেশ বিমানবাহিনী জহরুল হক ঘাঁটির ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট হাবীব বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তাঁর নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের একটি দল আগুন নেভাতে অংশ নিয়েছে। তাদের গাড়িতে ১০ হাজার লিটার পানি ধারণ করা যায় বলে জানানো হয়।

ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে জানানো হয়, বেলা ৩টা ৫৫ মিনিটে তারা এস আলমের চিনির কারখানায় আগুন লাগার সংবাদ পায়। এরপর প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট কাজ শুরু করে। এরপর পর্যায়ক্রমে ১০টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করে। ফায়ার সার্ভিস কর্ণফুলী নদী থেকে পাইপের মাধ্যমে সরাসরি পানি ছিটাচ্ছে।

আরও পড়ুন

সরেজমিনে এবং কারখানা সূত্র জানায়, সুগার মিলের পাশে একটি গুদামে আগুন লাগে। চিনি পুড়ে পুরো এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ এবং র‍্যাবও রয়েছেন। তাঁরা উৎসুক জনতাকে সরানোর পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন।

ঘটনাস্থলে নগর পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি) শাকিলা ফারজানা বলেন, আগুন লাগার পর থেকে ফায়ার সার্ভিস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে নিয়ন্ত্রণ করার। পর্যায়ক্রমে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ির সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। এখনো আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এদিকে রাতে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আনোয়ার পাশা ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কমিটির প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে।