সরকার বিচারব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে: রফিউর রাব্বি

তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার চিহ্নিত ঘাতকদের গ্রেফতার ও বিচার শুরুর দাবিতে মোমশিখা প্রজ্জ্বালন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নগরীর আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তন প্রাঙ্গণে
ছবি: প্রথম আলো

নারায়ণগঞ্জে মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীসহ নারায়ণগঞ্জে সংঘটিত সব হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়েছেন ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি। তিনি মনে করেন, এসব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরকারের লোকজন জড়িত। তাই বিচার বন্ধ করে রাখা হয়েছে। বিচার শুরুর নির্দেশ দিতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

ত্বকী হত্যার ১১৭ মাস উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নগরের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তন প্রাঙ্গণে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচি পালিত হয়। এতে অংশ নিয়ে রফিউর রাব্বি বলেন, সরকার বিচারব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে, জনগণের মৌলিক অধিকারকে ভুলুণ্ঠিত করেছে, রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে প্রতিনিয়ত সংবিধানকে লঙ্ঘন করে চলেছে। মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকারকে হরণ করেছে। ত্বকীর ঘাতকদের দেশে ও দেশের বাইরে সবাই চেনেন। অথচ হত্যার ১০ বছর হতে চলল, তৈরি হয়ে থাকা অভিযোগপত্রটি আদালতে পেশ করা হলো না।

রফিউর রাব্বি আরও বলেন, আজকে লড়াই শুধু রাজনৈতিক লড়াই নয়। আজকে মানুষের বাঁচা–মরার লড়াই। আজকে মানুষ জীবন–জীবিকা টিকিয়ে রাখার জন্য হিমশিম খাচ্ছে। জীবনের নিরাপত্তা নেই, ঘরে ফিরে যাওয়ার নিরাপত্তা নেই। যে বাহিনীগুলো জনগণের পক্ষে থাকার কথা, সেগুলোকে জনগণের বিপক্ষে দাঁড় করানো হয়েছে। সরকারি দলের লোকের সম্পৃক্ততার কারণে হত্যাকাণ্ডগুলোর বিচার করা হচ্ছে না।

সংগঠনের সহসভাপতি ধীমান সাহার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শাহীন মাহমুদের সঞ্চালনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি রথীন চক্রবর্তী, সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি জিয়াউল ইসলাম, সিপিবি জেলা সাধারণ সম্পাদক শিবনাথ চক্রবর্তী, ন্যাপের জেলা সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন, বাসদের জেলা সংগঠক এস এম কাদির, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, সামাজিক সংগঠন সমমনার সাবেক সভাপতি দুলাল সাহা প্রমুখ। বক্তারা ত্বকীসহ সাগর-রুনি, তনু, নারায়ণগঞ্জের আশিক, চঞ্চল, মিঠু ও ভুলু হত্যার বিচার দাবি করেন।

২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দুই দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী শাখা খাল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। এর পর থেকে ত্বকীর হত্যার বিচার শুরু ও চিহ্নিত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।