জানুয়ারিতে দেশে রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত ১৫, আহত  ৯৮৭ জন

এইচআরএসএসের লোগো

দেশে রাজনৈতিক সহিংসতায় চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে বিএনপির নেতা-কর্মী ৮ জন, আওয়ামী লীগের ৬ জন এবং জামায়াতে ইসলামীর একজন। পাশাপাশি জানুয়ারিতে দেশে ১২৪টি রাজনৈতিক সহিংসতায় আহত হয়েছেন অন্তত ৯৮৭ জন।

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) আজ সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, জানুয়ারি মাসে বিএনপির অন্তঃকোন্দলে ৬৮টি সহিংসতায় ৫ জন নিহত এবং ৬৭৭ জন আহত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের অন্তঃকোন্দলে ৩টি সংঘর্ষে ৪ জন নিহত এবং ৫০ জন আহত হয়েছেন। বাকি ৬ জন বিরোধী পক্ষের হামলায় নিহত হয়েছেন।

দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ, ভুক্তভোগীদের পরিবার এবং এইচআরএসএসের সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি মাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে ও নির্যাতনে ৪ জন নিহত হয়েছেন। বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন ১ জন। ১৩টি গণপিটুনিতে ৯ জন নিহত এবং ৭ জন আহত হয়েছেন। একই মাসে হিন্দু সম্প্রদায়ের ২টি প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ভবনের সামনে ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র–জনতা’র ব্যানারে আয়োজিত কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় ১৮ জন আহত হয়েছেন।

এইচআরএসএসের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, জানুয়ারি মাসে অন্তত ১৯টি হামলায় কমপক্ষে ২৮ জন সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্ততপক্ষে ১৯ জন, হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন ২ জন এবং গ্রেপ্তার হয়েছেন ১ জন। এ ছাড়া ২টি মামলায় ৬ জন সাংবাদিককে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ৩৯টি শ্রমিক নির্যাতনের ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৬ জন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ৮৭ জন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং শ্রমিকদের সুরক্ষামূলক সরঞ্জামের অভাবে দুর্ঘটনায় ৫ জন শ্রমিক নিজেদের কর্মক্ষেত্রে মারা গেছেন।

জানুয়ারি মাসে দেশে নারী ও শিশু নির্যাতনের তথ্য তুলে ধরে এইচআরএসএসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জানুয়ারি মাসে অন্তত ১২৭ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৫৪ জন। তাঁদের মধ্যে ২৮ জনের বয়স ১৮ বছরের কম। এটা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় যে ১৪ জন নারী ও কন্যাশিশু সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন ৩ জন। ১৬ জন নারী ও কন্যাশিশু অন্যান্য যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে শিশু ৯টি।

যৌতুকের জন্য নির্যাতনের ঘটনায় ৫ জন নিহত ও ২ জন আহত হয়েছেন। পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন ২৫ জন এবং আত্মহত্যা করেছেন ২০ জন নারী। অ্যাসিড সহিংসতার শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন ১ জন নারী।

উদ্বেগজনক বিষয় হলো, জানুয়ারি মাসে যে ৮৮টি শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে, তাদের মধ্যে ৩৬ জন প্রাণ হারিয়েছে।

সীমান্ত হামলার কথা উল্লেখ করে এইচআরএসএসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জানুয়ারি মাসে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) পাঁচটি হামলার ঘটনায় ২ জন বাংলাদেশি নিহত, ২ জন আহত এবং ১ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।