পরীমনির বিরুদ্ধে নাসিরের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব
চিত্রনায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করেছেন আদালত। ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট রাবেয়া বেগম বুধবার এ আদেশ দেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিজেএম আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবীর (বাবুল)।
আনোয়ারুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, গত বছরের ৬ জুলাই পরীমনির বিরুদ্ধে মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আদালতে নালিশি মামলা করেন নাসির ইউ মাহমুদ। মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দেন আদালত। এক বছর পার হলেও এখনো তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেননি তদন্ত কর্মকর্তা। তদন্ত প্রতিবেদন কেন জমা পড়েনি, ১০ কার্যদিবসের মধ্যে আদালতে এসে তার ব্যাখ্যা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত।
গত বছরের ৮ জুন সাভারের বিরুলিয়ায় ঢাকা বোট ক্লাবে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে চিত্রনায়িকা পরীমনি ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর নাসিরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। ওই মামলায় ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ তিন আসামির বিরুদ্ধে গত ১৮ মে অভিযোগ গঠন করেন। ওই মামলায় পরীমনির সাক্ষ্য গ্রহণ চলমান।
এর আগে ৬ জুন পরীমনির বিরুদ্ধে মামলা করেন নাসির ইউ মাহমুদ। তিনি অভিযোগ করেন, সেদিন পরীমনি ও তাঁর সহযোগীরা সাভারের বোট ক্লাবে ঢুকে ওয়াশরুম ব্যবহার করেন। পরে ক্লাবের ভেতরে বসে অ্যালকোহল পান করেন। রাত ১টা ১৫ মিনিটের দিকে ক্লাব ত্যাগ করার সময় পরীমনি তাঁকে ডাক দেন। পরে একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনা মূল্যে দেওয়ার জন্য চাপ দেন। এতে রাজি না হওয়ায় পরীমনি তাঁকে গালমন্দ করেন। একপর্যায়ে পরীমনি হত্যাচেষ্টার জন্য একটি গ্লাস ছুড়ে মারেন, যা তাঁর মাথায় ও বুকে লাগে বলে মামলায় অভিযোগ করেন নাসির ইউ মাহমুদ।
অবশ্য পরীমনি মামলায় অভিযোগ করেছিলেন, ৮ জুন রাতে তাঁকে কৌশলে ঢাকা বোট ক্লাবে ডেকে নিয়ে যান তাঁর পূর্বপরিচিত তুহিন নামের একজন। সেখানে জোর করে তাঁকে মদ পান করানোর চেষ্টা করেন নাসির। একপর্যায়ে তাঁকে ধর্ষণের এবং হত্যার চেষ্টা চালানো হয়।
প্রায় তিন মাস তদন্তের পর পরীমনির করা মামলায় আদালতে দেওয়া অভিযোগপত্রে সাভার থানা-পুলিশ বলেছিল, বোট ক্লাবে মারধর ও শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছিলেন পরীমনি। তাঁকে মারধর ও যৌন নির্যাতনের ঘটনায় অভিযোগপত্রে ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদ ও তাঁর সহযোগী শাহ শহিদুল আলম এবং তুহিন সিদ্দিকী ওরফে অমির সম্পৃক্ততা পায় পুলিশ।
পরীমনির মামলার পরই গ্রেপ্তার হন নাসির ও তুহিন। পরে তাঁরা জামিন পান। এদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে বিচার চলছে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এ। মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।