‘গোলাপি এখন ঢাকায়’

উত্তরার দিয়াবাড়ির বউবাজার হাটে উঠেছে গোলাপি মহিষ
ছবি:  প্রথম আলো

ব্যতিক্রমী যেকোনো কিছুই সহজে নজর কাড়ে মানুষের। মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ির বউবাজার হাটে দেখা গেল এমন এক প্রাণী। কালো, লাল, বাদামি রঙের বিশাল দেহের সব গরুর মধ্যে গোলাপি রঙের একটা প্রাণী দাঁড়িয়ে আছে। তুলনামূলকভাবে অন্যগুলোর চেয়ে শান্ত। এটা গোলাপি মহিষ।

মহিষটিকে দেখতে কেউ কেউ ভিড় করছেন। বিক্রেতা আতিকুল ইসলাম বললেন, এটা গোলাপি মহিষ। ছয় দাঁত উঠেছে। দাম উঠেছে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত। মহিষটি তুলনামূলকভাবে কম খাবার খায়। দিনে তিন থেকে চার শ টাকার খাবার প্রয়োজন হয়। আতিকুল জানান, তাঁর খামার আছে গাজীপুরে। সেখানে আরও কয়েকটি গোলাপি মহিষ আছে। তবে সেগুলো এখনো বিক্রির সময় হয়নি।

হাট ঘুরতে ঘুরতে উত্তর দিকে পাওয়া গেল একই রকম আরও দুটি গোলাপি মহিষ। শিং সাধারণ মহিষের মতো নয়; বরং পেছন দিকে অর্ধাকৃতি হয়ে উঠেছে। মহিষ দুটির উচ্চতা চার ফুটের মতো। তবে নিজের উচ্চতা যেন পুষিয়ে নিয়েছে কানের মাপে। বড় আকারের ছড়ানো কান। মঙ্গলবার পর্যন্ত দাম উঠেছে জোড়া ছয় লাখ টাকা। কিন্তু মালিক আশরাফুল আলম বলেন, তিনি জোড়া আট লাখের নিচে ছাড়তে চাইছেন না। এই দুজনের নাম ‘হোয়াইট গোল্ড’ আর ‘হোয়াইট বোল্ড’। এটি মূলত আলবিনো বাফেলো প্রজাতির। এই জোড়া মহিষ গাজীপুরের রিহা অ্যাগ্রোর।

আশরাফুল আলমের সঙ্গে কথা বলতে বলতে দেখা গেল গোল্ড আর বোল্ডকে দেখতে মানুষ ভিড় করছে। ভিড়ের ভেতর থেকে একজন মজা করে বলল, ‘গোলাপি এখন ঢাকায়।’

মূলত থাইল্যান্ডের প্রজাতি এই মহিষ। মিয়ানমার থেকে আগে বাংলাদেশে যে গরু আসত, এর সঙ্গে আসত এই প্রজাতির মহিষ। ছয়–সাত বছর ধরে দেশেই এই প্রজাতির ব্রিডিং করা হচ্ছে। কোরবানি ছাড়াও অন্য সময়ে এই প্রজাতির মহিষের চাহিদা আছে বলে জানান ব্যাপারীরা।  ৬০০ থেকে ৯০০ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়।

দিয়াবাড়ির বউবাজার হাটে আরও কয়েকজন ব্যাপারীর কাছে দেখা গেল মহিষ আছে। তবে ওগুলো দেশি। যেগুলোর  উচ্চতা আরেকটু বেশি। গায়ের রং কালো। শিংগুলো বেঁকে গেছে। ব্যাপারীরা বললেন, শিং কেটে না দিলে গোল হয়ে কানের মধ্যে ঢুকে যায়। তাই কেটে দিতে হয়। মহিষের দাম একই মাপের গরুর চেয়ে তুলনামূলক বেশি বলে জানান মহিষের ব্যাপারীরা।