কথা-কাটাকাটি, চবি ছাত্রলীগ নেতাকে পেটালেন কর্মীরা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

পূর্ববিরোধের জেরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিজয় উপপক্ষের এক নেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে সিক্সটি নাইন নামের উপপক্ষের কর্মীদের বিরুদ্ধে। আজ সোমবার বিকেল তিনটায় ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার জেরে বিজয় উপপক্ষের নেতা–কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে ও সিক্সটি নাইন উপপক্ষের নেতা–কর্মীরা শাহজালাল হলের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় দুই হলের সামনে জড়ো করে রাখা হয় ইটপাটকেল। পরে প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশের হস্তক্ষেপে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

মারধরের শিকার নেতার নাম ওমর ফারুক। তিনি শাখা ছাত্রলীগের উপত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক সম্পাদক ও রাজনীতিবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। মারধরের পর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, ২১ আগস্ট দুপুরে এ এফ রহমান হলের ক্যানটিনে সিক্সটি নাইন উপপক্ষের কর্মী জাকির হোসেনের সঙ্গে ওমর ফারুকের হাতাহাতি হয়। ক্যানটিনের আসনে বসা নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জেরে জাকির হোসেন ও তাঁর সহপাঠীরা আজ ওমর ফারুককে মারধর করেছেন।

জাকির হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। মারধরের বিষয়ে তিনি বলেন, ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে ক্যানটিনে ভিড় ছিল।

অনেক শিক্ষার্থী ক্যানটিনে বসার জায়গা পাচ্ছিলেন না। তবে এ সময় ওমর ফারুকের পাশের আসনগুলো খালি ছিল। সেসব আসনে বসার জন্য তিনি ওমর ফারুককে একটু সরতে বলেছিলেন। এতে ওমর ফারুক ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে মারধর করেন। পরে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত পরিচয় দিলে তাঁকে ছেড়ে দেন।

জাকির হোসেন বলেন, আজ তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন ওমর ফারুক তাঁকে দেখে হাসিঠাট্টা করছিলেন। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হলে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এ সময় তিনিও মারধরের শিকার হন।

তবে ওমর ফারুক বলেন, ওই দিন তিনি জাকির হোসেনকে সরে যেতে বলেননি। উল্টো তাঁকে আসন থেকে উঠে যেতে বলেছিলেন জাকির হোসেন। এ ঘটনার মীমাংসা হয়েছিল। আজ একা পেয়ে জাকির আরও ১০–১২ জনকে নিয়ে তাঁকে মারধর করেছেন। লাঠির আঘাতে তাঁর শরীরে বিভিন্ন জায়গায় জখম করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর হাসান মুহাম্মদ রোমান প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাস্থলে এসে দুই পক্ষের সঙ্গেই তাঁরা আলোচনা করেছেন। এখন পরিস্থিতি শান্ত। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বর্তমানে ১১টি উপপক্ষ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে বিজয় ও চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি) নামের দুটি উপপক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর এবং অন্য নয়টি উপপক্ষ নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী।

বিজয় উপপক্ষের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আগস্ট মাসে যেন কোনো ধরনের সংঘাত না হয়, এ জন্যই তাঁরা অবস্থান ত্যাগ করেছেন। মারধরের এ ঘটনার বিচার করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন বলেন, ছোটদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল। এরপরে বড়রা বসে তা মীমাংসা করেছেন।