‘নতুন শিক্ষাক্রমে অনেক সম্ভাবনা ও সুযোগ তৈরি হয়েছে’

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাবনায় শিক্ষার্থীর শিক্ষার কেন্দ্র শুধু স্কুল নয়, চারপাশ থেকেই শেখার আছে। বর্তমানে বাংলাদেশে যে নতুন শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়েছে, তা সেই ভাবনাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। নতুন শিক্ষাক্রমে অনেক সম্ভাবনা ও সুযোগ তৈরি হয়েছে।

শনিবার জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে আলোচকদের বক্তব্যে উঠে এসেছে এসব কথা। রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে রবীন্দ্রসংগীত নিয়ে তিন দিনব্যাপী এ আয়োজন।

সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে ছিল নানা আয়োজন। বিকেলে শুরু হয় ‘রবীন্দ্র–শিক্ষাদর্শন ও বাংলাদেশের নবশিক্ষাযাত্রা’ শীর্ষক অধিবেশন। এ সময় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিক্ষাবিদ সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক। আলোচনার শুরুতে তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিক্ষাভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন।

গোলাম ফারুকের উপস্থাপনায় উঠে আসে প্রগতিশীল ধারার শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গুরুত্বের কথা। তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথের ভাবনায় শিক্ষার্থীর শিক্ষার কেন্দ্র শুধু স্কুল নয়, চারপাশ থেকেই শেখার আছে। বর্তমানে বাংলাদেশে নতুন যে শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়েছে, এটি সেই ভাবনাকেই এগিয়ে নিয়ে যাবে।

অধিবেশনে দেশের বর্তমান শিক্ষাপদ্ধতি নিয়ে আরও আলোচনা করেন ঢাকার নালন্দা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুমনা বিশ্বাস, নরসিংদীর শিউলিবাগ বিদ্যাপীঠের অধ্যক্ষ রায়হানা সরকার ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শারমিন। তাঁদের বক্তব্যে উঠে আসে, বর্তমান শিক্ষাপদ্ধতি শুধু তথ্যনির্ভর নয়, দক্ষতা ও জ্ঞাননির্ভর—এমন বিশ্লেষণ।

অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন গবেষক ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক। তিনি বলেন, ‘গানকে আমরা অনেক মানুষের কাছে নিয়ে যেতে চাই। সমাজের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাই। এখন যে শিক্ষাক্রমের পরিবর্তন ঘটেছে, সেখানে বিশালভাবে অনেক সম্ভাবনা ও সুযোগ তৈরি হয়েছে।’  

এর পরের পর্বে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। সংগীতানুষ্ঠানের পর সম্মেলনে ‘রবিরশ্মি’ উপস্থাপন পর্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন নিসার হোসেন বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনের সবগুলো দিক মিলিয়েই সাহিত্যের চর্চা করতেন। বর্তমান বাংলাদেশের যে শিক্ষাব্যবস্থা, এতেও শিক্ষার্থীরা পরিপূর্ণতা পাবে বলে আশা করা যায়।
রাতে সাংস্কৃতিক আয়োজনের পর অনুষ্ঠিত হয় রবীন্দ্র আলেখ্য ‘“মানুষগুলো সব ইতিহাসের ছেঁড়া পাতা” গাজায় ইসারায়েলি বর্বরতায় পিষ্ট মানবতার আর্তধ্বনি–প্রতিধ্বনি’। মফিদুল হকের গ্রন্থনায় এই আলেখ্য পাঠ করেন শিল্পী ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় ও ত্রপা মজুমদার।

জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মেলনে সারা দেশ থেকে আসা ৭০০ জনের বেশি শিল্পী অংশ নিয়েছেন। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনে আরও অনুষ্ঠিত হয়েছে সাধারণ বিভাগের প্রতিযোগিতা ও প্রতিনিধি সম্মেলন। রোববার শেষ হবে জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মেলনের ৪২তম অধিবেশন। এ বছর রবীন্দ্রপদক ও গুণিসম্মাননা জ্ঞাপন করা হবে শিল্পগুরু মুস্তাফা মনোয়ারকে।