রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক

বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা ২০১৭ সালে বাংলাদেশে আসে। টেকনাফের লম্বারবিল এলাকায়
ফাইল ছবি

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের অবিচ্ছেদ্য অংশ ও নাগরিক বলে মনে করে দেশটির জাতীয় ঐক্যের সরকার (এনইউজি)। একই সঙ্গে নিপীড়নের মুখে মিয়ানমার থেকে পালাতে বাধ্য হওয়া রোহিঙ্গা ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষকে নিরাপদে দেশে ফেরাতে প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি তৈরির প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে তারা।

২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নৃশংসতার ছয় বছর পূর্তি উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছে এনইউজি। এই সরকার মূলত নির্বাসনে থেকে কাজ করছে। ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সামরিক জান্তা। এরপর এনইউজি গঠন করেন অভ্যুত্থানবিরোধী ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা।

রোহিঙ্গাদের ওপর ‘ভয়াবহ নৃশংসতার বর্ষপূর্তি এনইউজি অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে স্মরণ করছে’ উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা ও গুম করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। নারী ও শিশুদের ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়ন করা হয়েছে। শত শত গ্রাম ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। তাদের ইতিহাস মুছে দেওয়া হয়েছে। এসব অপরাধকে গত বছর গণহত্যা বলে আখ্যা দিয়েছে মার্কিন সরকার।

জাতীয় ঐক্যের সরকারের তথ্যমতে, বর্তমানে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত অবস্থায় রয়েছেন। তাদের শুধু বাড়িঘর বা গ্রাম ছাড়তে হয়নি, বরং নিজেদের দেশও ছাড়তে হয়েছে। বাংলাদেশের আশ্রয়শিবিরগুলো ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে রোহিঙ্গারা সংকট ও তীব্র দারিদ্রের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। তারা মিয়ানমারে নিজেদের বাড়িঘরে ফেরার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না। তাই বাধ্য হয়ে পাচারকারীদের হাতে জীবন সঁপে দিয়ে সাগর পার হয়ে বিভিন্ন দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের অবিচ্ছেদ্য অংশ ও নাগরিক হিসেবে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা এবং অন্যান্য ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সময় ধরে বৈষম্যমূলক নীতি, চর্চা ও ভাষার ব্যবহারের বিষয়টি এনইউজি অত্যন্ত লজ্জার সঙ্গে স্বীকার করছে। এই কার্যকলাপই রোহিঙ্গাদের ওপর সামরিক বাহিনীর নৃশংসতার ভিত্তি তৈরি করে দিয়েছিল।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘রোহিঙ্গা ও অন্যান্য বাস্তুচ্যুত সম্প্রদায়কে স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, মর্যাদার সঙ্গে ও টেকসইভাবে দেশে ফিরিয়ে আনার পরিস্থিতি তৈরি করতে জাতীয় ঐক্যের সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’