ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ, কাজ বন্ধের ঘোষণা ঠিকাদারদের

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনেছেন ঠিকাদারেরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নির্মাণ প্রকল্পে চাঁদাবাজিতে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার দাবিতে তাঁরা সব ধরনের কাজ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন।

চাঁদাবাজির অভিযোগ জানিয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপাচার্যের কার্যালয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাভুক্ত ঠিকাদারদের সমিতি। সমিতির চিঠি পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন উপাচার্য শিরীণ আখতারের ব্যক্তিগত সহকারী ফোরকান আহমেদ।

চিঠিতে সই করেছেন ঠিকাদার সমিতির সভাপতি মো. সেকান্দর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেদ চৌধুরী। জানতে চাইলে সেকান্দর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রলীগের নামধারী কিছু নেতা-কর্মীর চাঁদাবাজির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণ প্রকল্পে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এসব নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত আমরা নির্মাণকাজ বন্ধ রাখব।’

চিঠির বিষয়ে বক্তব্য জানতে আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপাচার্য শিরীণ আখতারকে ফোন করলে তিনি সাড়া দেননি। বেলা দেড়টার দিকে তাঁর কার্যালয়ে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি।

সমিতির চিঠিতে বলা হয়েছে, কিছু মাদকাসক্ত অছাত্রের চাঁদাবাজির বলি হচ্ছেন ঠিকাদারেরা। তাঁরা রড, ইট, সিমেন্ট, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতিসহ সব ধরনের নির্মাণসামগ্রী চুরি করছেন। তাঁরা প্রকাশ্য ঠিকাদার, নির্মাণশ্রমিক, প্রকৌশলীদের মারধর করছেন। সবশেষ ২৩ আগস্ট এসব অছাত্র পুলিশের উপস্থিতিতে দ্বিতীয় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদে এক ঠিকাদারকে গালাগাল করেছেন। তাঁকে রড দিয়ে মারধরের চেষ্টা করেছেন।

চিঠিতে আরও বলা হয়, চাঁদাবাজির এসব অভিযোগ অতীতে প্রশাসনকে জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো অভিযোগ করায় শ্রমিকদের মারধর করে বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী নিয়ে গেছেন চাঁদাবাজেরা। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও মালামাল লুট হচ্ছে। প্রশাসন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ঠিকাদারেরা মানহানিসহ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এসব ঘটনার বিহিত না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাভুক্ত ঠিকাদারেরা সব নির্মাণ-সংস্কারকাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন নির্মাণ প্রকল্পে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের চাঁদাবাজির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। চাঁদার জন্য নির্মাণ প্রকল্পের কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনাও আছে।
অধিকাংশ সময় ঠিকাদারেরা প্রকাশ্যে অভিযোগ করেন না। তবে চলতি বছর অন্তত পাঁচবার এমন অভিযোগ সামনে এসেছে।

চাঁদার বিষয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করায় সবশেষ গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী ছৈয়দ জাহাঙ্গীর ফজলকে মারধর করেন শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজু মুন্সি। এর আগে ১৭ জুলাই চাঁদা না দেওয়ায় নির্মাণকাজে বাধা দেওয়া, শ্রমিকদের মারধরের অভিযোগ উঠেছিল ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন বলেন, ছাত্রলীগের কারও বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর প্রশাসনকেও এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রেজাউল হক বলেন, ছাত্রলীগে চাঁদাবাজদের কোনো স্থান নেই।