মাটি ভরাট বা স্থাপনা নির্মাণ আর যাতে না হয়: হাইকোর্ট

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

কাপ্তাই হ্রদে আর যাতে মাটি ভরাট বা স্থাপনা নির্মাণ না করা হয়, তা নিশ্চিতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ সোমবার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

রাঙামাটির জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ ছয় বিবাদীর প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কাপ্তাই হ্রদের সীমানা জরিপ করে অবৈধ দখলদারদের তালিকা আগামী ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাঙামাটির জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট ছয় বিবাদীর প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

‘সবাই মিলে কাপ্তাই হ্রদ দখল’ শিরোনামে গত ১৭ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোতে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদনটি যুক্ত করে হ্রদে অবৈধ দখল বন্ধ ও জরিপ করে হ্রদের সীমানা নির্ধারণ ও অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে গতকাল রোববার হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে ওই রিট করা হয়।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী রিপন বাড়ৈ ও সঞ্জয় মণ্ডল। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান।

পরে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ প্রথম আলোকে বলেন, কাপ্তাই হ্রদের অবৈধ দখল, মাটি ভরাট ও স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। পরিবেশ সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ ১২ বিবাদীকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, শহরের শরীরটা সুস্থ রাখার দায়িত্ব পৌরসভার। ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের পাশাপাশি জলাধার বা হ্রদের দখল ঠেকানো, দূষণ রোধেও এ প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু রাঙামাটি পৌরসভার মেয়র নিজে রক্ষক হয়ে হ্রদ দখল করে বসে আছেন।

জেলা যুবলীগের সভাপতি মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী জেলা শিল্পকলা ঘাট এলাকায় হ্রদের ওপর পাকা ভবন করছেন। ঘাটের পাশে এক বছর ধরে এ ভবন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ভবনটি তিনতলা পর্যন্ত উঠে গেছে।

শুধু এ ভবন নয়, রাঙামাটি শহরে হ্রদ দখল করে নির্মিত হয়েছে পুলিশের অফিসার্স মেস ও পুলিশের করা পলওয়েল পার্ক, আওয়ামী লীগের কার্যালয়, জেলা পরিষদের কমিউনিটি সেন্টার, ফ্রেন্ডস ক্লাবসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্থাপনা।

চোখের সামনে যখন হ্রদ দখল করে প্রভাবশালীদের এসব স্থাপনা উঠছে, তখন বসে নেই সাধারণ ভূমিদস্যুরাও। কাপ্তাই হ্রদ দখল করে স্থাপনা নির্মাণে তাদের মধ্যেও চলছে একধরনের প্রতিযোগিতা। অর্থাৎ রাঙামাটি শহরের ‘ছোট-বড়’ সবাই মিলে দখল করছে কাপ্তাই হ্রদ।