গাছ কেটে র‍্যাম্প করা যাবে না, গৃহায়ণমন্ত্রীর নির্দেশ

চট্টগ্রাম নগরে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র‍্যাম্প নির্মাণের জন্য সবুজে ঘেরা এই সড়কটির গাছ কাটার পরিকল্পনা করে সিডিএছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রাম নগরের টাইগারপাসে গাছ কেটে কিংবা পরিবেশের ক্ষতি করে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র‍্যাম্প নির্মাণ না করতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (সিডিএ) নির্দেশ দিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। গতকাল মঙ্গলবার প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সিডিএর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এই নির্দেশ দেন মন্ত্রী।

এর আগে নগরের দ্বিতল সড়ক এলাকায় শতবর্ষীসহ ৪৬টি গাছ কেটে মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী-সিডিএ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র‍্যাম্প নির্মাণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে সিডিএ। কিন্তু দ্বিতল সড়ক এলাকায় গাছ কেটে র‍্যাম্প নির্মাণের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে গত সোমবার আন্দোলন শুরু করেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও পরিবেশকর্মীরা।

গাছ না কেটে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র‍্যাম্প নির্মাণ না করতে মন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস। তিনি আজ বুধবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র‍্যাম্প নির্মাণের বিষয়ে মন্ত্রী মহোদয় নির্দেশ দিয়েছেন। গাছ কাটা পড়লে র‍্যাম্প নির্মাণ না করতে বলেছেন মন্ত্রী মহোদয়। এখন পরিবেশের কোনো ক্ষতি না করে এবং গাছ না কেটে কীভাবে র‍্যাম্প নির্মাণ করা যায়, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেব। তবে এরপরও জনপ্রতিনিধি, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

মূল এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি ওঠা–নামার জন্য ১৫টি র‍্যাম্প রয়েছে। এর মধ্যে দুটি আছে নগরের টাইগারপাসে। দুটি র‍্যাম্পের মধ্যে টাইগারপাস থেকে পলোগ্রাউন্ড পর্যন্ত মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী সড়কে গাড়ি ওঠার র‍্যাম্প নির্মাণ করা হবে। সবুজে ঘেরা অনন্য এই সড়কের একটি অংশ গেছে পাহাড় ঘেঁষে। আরেকটি অংশ নিচে। মধ্যবর্তী পাহাড়ি ঢালে রয়েছে ছোট-বড় শতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। এসব গাছে রয়েছে নানা প্রজাতির পাখির বাসা। এখন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র‍্যাম্প (গাড়ি ওঠার পথ) নির্মাণ করতে গাছগুলো কাটতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। ইতিমধ্যে গাছগুলোয় লাল ও সাদা কালি দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে।

দ্বিতল সড়ক এবং গাছ রক্ষায় সোমবার ও মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিভিন্ন সংগঠন। মঙ্গলবার বিকেলে সিডিএর সম্মেলনকক্ষে সংস্থাটির চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষের সঙ্গে সভা করে র‍্যাম্প নির্মাণ বাতিল করার দাবি জানান নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। এ সময় র‍্যাম্পের নকশা সংশোধনের আশ্বাস দেন চেয়ারম্যান।

সিডিএ ৪ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম নগরের লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ১৪ নভেম্বর ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করেন। মূল অংশের নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ শেষ না হওয়ায় যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়নি।