ভারত তো আমাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে না: কাদের

বাংলাদেশ সফররত ভারতীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদল
ছবি: বাসস

বাংলাদেশে শেখ হাসিনার চেয়ে বেশি বিশ্বস্ত কোনো বন্ধু ভারতের নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এটা ভারতকে মনে রাখতে হবে। ভারত সরকারের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব। বন্ধুত্বের বিকাশও হচ্ছে।

‘ভারতের সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক রেখে উন্নয়ন সম্ভব নয়’ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের ভুলত্রুটি আছে। তারপরও একটা কথা মনে রাখবেন, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার চেয়ে কোনো বিশ্বস্ত বন্ধু আরেকজন আপনাদের নেই।’

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বাংলাদেশ সফররত ভারতীয় সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা হয়। সেই সভায় অংশ নিয়ে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে ভারতের কলকাতা থেকে ২৫ জন এবং আসাম ও গুয়াহাটি থেকে ৯ জন সাংবাদিক ৬ জানুয়ারি বাংলাদেশ সফরে আসেন।

মতবিনিময় সভায় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুবই স্মৃতিভরা। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ভারত ছিল বিশ্বস্ত আশ্রয়দাতা।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমরা রক্তের রাখি বন্ধনে আবদ্ধ। ভারতের সঙ্গে আমাদের একাত্তরের রাখি বন্ধন অটুট আছে। রক্তের রাখি বন্ধন আমরা ভুলি না, কখনো ভুলতে পারি না।’

আগামী নির্বাচন আওয়ামী লীগের জন্য কতটা কঠিন হবে— ভারতের সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা টানা ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায়। তৃতীয় মেয়াদ শেষ করে চতুর্থ মেয়াদের জন্য আমরা নির্বাচনে যাব। গত নির্বাচনের চেয়ে (এবারের নির্বাচন) আরেকটু টাফ (কঠিন) হবে। একটা ব্যাপার হলো, জীবনযাত্রার ব্যয় সামাল দিতে ব্যর্থ হলে জটিল (ডিফিকাল্ট) হয়ে যাবে।’

ভারতীয় সাংবাদিকদের সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশ্নে দ্বিধা নেই। সবকিছু মিলিয়ে ভারত তো আমাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে না। কিন্তু আমাদের পাশে আছে। আমরা বন্ধু হিসেবে পাশে দেখতে চাই।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ছিটমহল বিনিময় শান্তিপূর্ণ ছিল। এটা একটা বিরাট অর্জন। অবশ্যই এর কৃতিত্ব আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দিতে হবে। তারপরও আমাদের কিছু কিছু ব্যাপার আছে, যেমন পানি। সেটা নিয়ে আলোচনা চলছে। আমরা বিশ্বাস করি, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে আমরা আমাদের প্রাপ্যটা পাব। যে বিষয়গুলো আছে, সেগুলোর সমাধান করতে হলে বন্ধুত্ব রাখতে হবে, আলোচনা করতে হবে।’

এ সময়ে সফররত ভারতীয় সাংবাদিকেরা বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশকে যে তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ বলা হয়েছিল, এখন বাংলাদেশ আর তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ নয়। বাংলাদেশের সব খাতে উন্নয়ন হচ্ছে, যা চোখে পড়ার মতো।

সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে এ সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. আলী আরাফাত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।