উপদেষ্টার ক্ষোভের পর চট্টগ্রামের বাজারে টাস্কফোর্সের অভিযান
নিত্যপণ্যের বাজারে চট্টগ্রামে তদারকি কম উল্লেখ করে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার ক্ষোভের পর আজ রোববার চট্টগ্রাম নগরের খাতুনগঞ্জ ও পাহাড়তলীতে অভিযান চালিয়েছে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম তদারকি ও স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে গঠিত বিশেষ টাস্কফোর্স।
এর আগে গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তার সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক সভায় শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে টাস্কফোর্সের অভিযান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বৈঠকে চট্টগ্রামে টাস্কফোর্সের অভিযান অন্যান্য জেলার চেয়ে কম উল্লেখ করে কর্মকর্তাদের হুঁশিয়ার করেন তিনি। এরপর আজ অভিযান পরিচালনা করে বিশেষ টাস্কফোর্স। অভিযানে নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মাহবুবুল হক।
এ সময় কৃষিপণ্য বিপণন আইনের সনদ না থাকায় খাতুনগঞ্জের দ্বীন অ্যান্ড কোম্পানি ও দ্বীন অ্যান্ড সিন্ডিকেট নামের দুটি প্রতিষ্ঠানকে ৫০ হাজার করে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া পণ্য কেনাবেচার পাকা রসিদ না থাকায় আল আমানত কিশমিস দোকানকে ৫ হাজার টাকা ও জাহানারা এন্টারপ্রাইজকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
একই অভিযানে পাহাড়তলী বাজারে ক্রয় রসিদ সংরক্ষণ না করাসহ বিভিন্ন অভিযোগে বেলাল স্টোরকে ১০ হাজার টাকা, সততা পোলট্রিকে ৬ হাজার, মো. শাহাদাতের পোলট্রিকে ৩ হাজার ও মাহবুব ইকবাল পোলট্রিকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে দেশের বৃহত্তর ভোগ্যপণ্যের বাজার খাতুনগঞ্জে সিন্ডিকেট করে পণ্যের দাম বাড়ানো হয়। তবে অভিযানে খাতুনগঞ্জে সিন্ডিকেটের ‘খোঁজ’ পাননি কর্মকর্তারা। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মাহবুবুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁদের পক্ষে কিছু ব্যাখ্যা দিয়েছেন। ব্যাখ্যার সঙ্গে কাগজপত্র মিলিয়ে দেখেছি। তাঁদের ব্যবসায়িক কৌশল অনুযায়ী তাঁরা এই কাজগুলো করছেন। এখানে কোনো ধরনের অদৃশ্য সিন্ডিকেট আমরা এখন পর্যন্ত পাইনি। তবে আমরা খোঁজ নিচ্ছি বিষয়টি তদন্তে।’
পিস কিনে কেজিতে বিক্রি
আজ সকালে নগরের বহদ্দারহাট বাজারে পৃথক অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এ সময় বাজারে কাউসারের সবজির আড়ত নামের একটি আড়তে পণ্যের দাম যাচাই করেন কর্মকর্তারা। এতে দেখা যায়, লাউ পিস হিসেবে কিনে খুচরায় কেজিতে বিক্রি করছেন বিক্রেতা কাউসার।
কর্মকর্তারা জানান, এই আড়তে এক থেকে আড়াই কেজি ওজনের লাউ পিস হিসেবে কিনে প্রতি কেজি বাড়তি দরে বিক্রি করছিলেন বিক্রেতা। এই অপরাধে বিক্রেতা মো. কাউসারকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই বাজারের আরও দুই সবজি বিক্রেতাকে ১২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
একই অভিযানে খাজা স্টোর নামের প্রতিষ্ঠানকে বাড়তি দামে ডিম বিক্রির অপরাধে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অভিযান পরিচালনা করেন জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ ও সহকারী পরিচালক মো. আনিছুর রহমান।
উপপরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ বলেন, ‘টাস্কফোর্সের পাশাপাশি আমাদের নিয়মিত অভিযানও চলমান। বাজারে অসংগতির অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’