স্ত্রী খুনে তিন লাখ টাকা দিয়েছিলেন বাবুল আক্তার

বাবুল আক্তার ও মাহমুদা খানম মিতু
ফাইল ছবি

স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুর খুনে অংশ নেওয়া খুনিদের তিন লাখ টাকা দিয়েছিলেন সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার। গতকাল মঙ্গলবার তৃতীয় অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ জসিম উদ্দিনের আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে এ কথা বলেন মোখলেসুর রহমান। তিনি বাবুলের বন্ধু ব্যবসায়িক অংশীদার সাইফুল ইসলামের কর্মচারী। ঢাকার মোহাম্মদপুরের বছিলায় র‍্যাব কার্যালয়ের বিপরীতে ‘মাল্টিয়ান প্রিন্ট অ্যান্ড প্যাকেজিং’ নামের প্রতিষ্ঠানটিতে তিনি এক্সিকিউটিভ অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন। সাইফুল ইসলাম প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)।

আদালত সূত্র জানায়, আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘মাহমুদা ভাবি খুনের দুই দিন পর বেলা তিনটার দিকে সাইফুল স্যার আমাকে অফিসে যেতে বলেন। আমি বছিলায় অফিসে গিয়ে অ্যাকাউন্টসের মামুন স্যারের কাছ থেকে তিন লাখ টাকা গ্রহণ করি। টাকা নিয়ে আমি সাইফুল স্যারকে কল দিয়ে টাকাগুলো কী করব জিজ্ঞেস করি। পরদিন বিকেল পাঁচটা-সাড়ে পাঁচটার দিকে এমডি স্যার (সাইফুল) আমাকে আবারও কল দিয়ে আবদুল্লাহ আল মামুন (মাহমুদা হত্যার আসামি নিখোঁজ কামরুল শিকদার মুসার আত্মীয়) নামের একজনের নম্বর দেন। এর আগে সাইফুল স্যারের নির্দেশে টাকার সঙ্গে আমাকে দুটি গ্রামীণফোনের মুঠোফোন নম্বর এবং আনোয়ার ও ওয়াসিমের নাম দেওয়া হয়। ওই দুটি বিকাশ নম্বরে তিন লাখ টাকা পাঠাতে বলা হয় আমাকে।’

মোখলেসুর রহমান সাক্ষ্যে আরও বলেন, ‘আমি মোটরসাইকেল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গাউসুল আজম মার্কেট থেকে ২ লাখ ৩০ বা ৪০ হাজার টাকা পাঠাই। বাকি ৭০ হাজার টাকা আমি মোহাম্মদপুর বছিলায় র‍্যাব কার্যালয়ের পাশে রিপন টেলিকম থেকে পাঠাই।’

চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আব্দুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, বাবুল তাঁর সোর্স মুসাকে তাঁর আত্মীয়ের মাধ্যমে তিন লাখ টাকা পাঠান স্ত্রীকে খুন করার জন্য। বাবুলের বন্ধু সাইফুলের কর্মচারী আদালতে জবানবন্দিতে তা বিস্তারিত তুলে ধরেন। এর আগে গত সোমবার দেওয়া সাক্ষী সরোয়ার আলমের জেরা শেষ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

২০১৬ সালের ৫ জুন নগরের ও আর নিজাম রোড এলাকায় ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে গুলি ও ছুরিকাঘাতে নিহত হন বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা খানম। এই ঘটনায় করা মামলায় তদন্ত শেষে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গত বছরের সেপ্টেম্বরে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। এতে বাবুলসহ সাতজনকে আসামি করা হয়। বর্তমানে এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে।