বিয়ের নামে প্রতারণা, সাবেক মুঠোফোন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

প্রতারণা
প্রতীকী ছবি

আইনবহির্ভূতভাবে ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে এক নারীর সঙ্গে আড়াই বছর সংসার করার অভিযোগ উঠেছে একটি মুঠোফোন কোম্পানির সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় সম্প্রতি আদালতে করা মামলায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪৯৩ ধারায় অভিযোগপত্র দিয়েছে। গত রোববার আদালত অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে আসামিকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ভুক্তভোগী নারী ও অভিযুক্ত ব্যক্তির বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে পড়ার সময়। পরে ওই নারীকে কৌশলে বিয়েতে রাজি করান ওই ব্যক্তি। তিনি ২০১৯ সালের ৫ এপ্রিল উত্তরার রূপায়ন সিটি এলাকায় নিয়ে ওই নারীকে সাজানো বিয়ে করেন। বিয়ের সব আয়োজন থাকলেও পুরোটাই ছিল নাটক। ফলে কথিত কাবিনের বিশ্বাসে আড়াই বছর সংসার করেন ভুক্তভোগী নারী। সংসার করার সাত মাসের মাথায় ওই নারী জানতে পারেন, তাঁর কথিত স্বামী আগে আরেকটি বিয়ে করেছেন। সেই ঘরে সন্তান রয়েছে।

তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক মর্জিনা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, তদন্তে আসামির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪৯৩ ধারার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।

দণ্ডবিধির ৪৯৩ ধারায় বলা হয়, প্রতারণামূলকভাবে আইনসম্মত বিয়ের বিশ্বাস সৃষ্টি করে কোনো নারীর সঙ্গে সহবাস করার ধারার শাস্তি হলো ১০ বছর পর্যন্ত সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত এবং জরিমানার দণ্ডে দণ্ডিত করা।

জানা গেছে, আদালতে মামলা হওয়ার পর অভিযুক্ত ব্যক্তি মুঠোফোন কোম্পানির চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। তবে তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন বলে দাবি করেন।

ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ, ওই ব্যক্তি বিয়ে-প্রতারণার পাশাপাশি ঢাকায় ফ্ল্যাট কিনতে তাঁর (ভুক্তভোগী নারী) কাছ থেকে ৭৫ লাখ টাকা নিয়েছেন। প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বিয়ের নামে তাঁর সঙ্গে সংসার করা ও টাকা আত্মসাতের ঘটনায় আদালতে পৃথক মামলা করেন তিনি। আদালত ৭৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ মামলায় ওই ব্যক্তি, তাঁর চাচা ও এক সহযোগীর নামে সমন জারি করেছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ওই ব্যক্তি প্রথম আলোকে বলেন, পিবিআই তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়েছে। তাঁর দাবি, ওই নারীকে তিনি বিয়ে করেননি। তাঁর সঙ্গে সংসারও করেননি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ওই নারীর সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব হয়। একপর্যায়ে ওই নারীর মালিকানাধীন একটি তথ্যপ্রযুক্তির প্রতিষ্ঠান চালাতে তাঁকে ৪০ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ঋণ দেন তিনি। ওই টাকা চাইতে গেলে নারীর রোষানলের শিকার হন। ৪০ লাখ ৫৯ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে ওই নারীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন ওই ব্যক্তি।

অন্যদিকে ভুক্তভোগী নারী ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে একাধিক সাধারণ ডায়েরি (জিডি) এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।