পঞ্চদশ সংশোধনী মামলায় যুক্ত হলো বিএনপি, রুল শুনানি শুরু কাল

হাইকোর্ট ভবনফাইল ছবি

বহুল আলোচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে করা রিটে যুক্ত হয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হওয়া রুল সমর্থন করে আদালতকে সহায়তা করতে (ইন্টারভেনার হিসেবে) দলের পক্ষ থেকে তাঁর করা আবেদন মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। পঞ্চদশ সংশোধনী প্রশ্নে রুল এই বেঞ্চে শুনানির জন্য আগামীকাল দিন ধার্য রয়েছে।

এর আগে পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের বৈধতা নিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তির করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১৯ আগস্ট হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে পঞ্চদশ সংশোধনী আইন কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। এই রুল সমর্থন করে ইন্টারভেনার হতে অনুমতি চেয়ে বিএনপির পক্ষে দলটির মহাসচিব গতকাল হাইকোর্টে আবেদন করেন। এই আবেদন মঞ্জুর করে আজ আদেশ দেন আদালত।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও এম বদরুদ্দোজা এবং আইনজীবী ফারজানা শারমিন ও আনিসুর রহমান রায়হান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান।
এর আগে রিট আবেদনকারীপক্ষ (পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি) রুল শুনানির জন্য বিষয়টি ২০ অক্টোবর হাইকোর্টের ওই বেঞ্চে উপস্থাপন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২১ অক্টোবর রিটটি আদালতের কার্যতালিকায় ওঠে। সেদিন আদালত রুল শুনানির জন্য ৩০ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।

পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে নতুন রুল

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১১ সালে সংবিধানের ওই সংশোধনী আনা হয়। পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়।
২০১১ সালের ৩ জুলাই এ-সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়। পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের অন্তত ১৬টি ধারার বৈধতা নিয়ে নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন আবেদনকারী হয়ে গত সপ্তাহে একটি রিট করেন।

বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে আজ আদালত রুল দেন। রুলে ওই ধারাগুলো কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফিদা এম কামাল ও এ এস এম শাহরিয়ার কবির। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান শুনানিতে অংশ নেন।

পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপের পাশাপাশি জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয়। অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকে রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধ বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে দোষী করে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধানও যুক্ত করা হয়। আগে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনে নির্বাচন করার বিধান থাকলেও ওই সংশোধনীতে পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বিষয়টি সংযোজন করা হয়।