থানাকে জনগণের আস্থা ও ভরসার জায়গায় পরিণত করার আহ্বান আইজিপির

কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে পুলিশ সদস্যদের ‘পুলিশ ফোর্স এক্সেমপ্লারি গুড সার্ভিস ব্যাজ-২০২৩’ পরিয়ে দেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। আজ বুধবার রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মাঠেছবি: ডিএমপি নিউজের সৌজন্যে

পুলিশের সেবা দেওয়ার মূলকেন্দ্র থানাকে জনগণের আস্থা ও ভরসার স্থানে পরিণত করার আহ্বান জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। থানায় আসা মানুষের কথা শুনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

আজ বুধবার দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মাঠে শিল্ড প্যারেড, অবৈধ অস্ত্র, মাদকদ্রব্য উদ্ধার অভিযান, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সার্বিক কার্যক্রম মূল্যায়নে কৃতিত্ব অর্জনকারী ইউনিটকে পুরস্কার, আইজিপি ব্যাজ, শিল্ড প্যারেড এবং প্যারেডে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার দেওয়া শেষে পুলিশ কর্মকর্তাদের ওই নির্দেশনা দেন। ‘স্মার্ট পুলিশ স্মার্ট দেশ, শান্তি প্রগতির বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৪ পালিত হচ্ছে। আজ পুলিশ সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন।

আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ তথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ মাদক, জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের কোনো স্থান নেই। পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের প্রযুক্তিনির্ভর, গণমুখী, সেবামুখী, জনবান্ধব তথা নারী ও শিশুবান্ধব বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। দেশের নাগরিকেরা যাতে সহজে, নির্ভয়ে থানায় যেতে পারেন, তাঁদের সমস্যার কথা বলতে পারেন এবং প্রার্থিত সেবা গ্রহণ করতে পারেন, সে ব্যাপারে আমি সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছি। যারা একেবারে সাধারণ মানুষ, খেটে খাওয়া মানুষ, নিরীহ, নির্যাতিত, গরিব, নারী তাদের জন্য থানাকে আমি বিচার পাওয়ার স্থান হিসেবে দেখতে চাই। এ জন্য প্রধান ও প্রথম কাজ হবে ভালো ব্যবহার ও জনগণের কথা শোনা এবং অতি দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এ ক্ষেত্রে যেকোনো ব্যত্যয় গ্রহণযোগ্য হবে না।’

পুলিশপ্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে কাঙ্ক্ষিত সেবা পৌঁছে দিতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা আমাদের দেশকে সত্যিকার অর্থেই ২০৪১ সালে একটি অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক, উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারব।’ এ সময় অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) ও প্যারেড উপকমিটির সভাপতি মো. কামরুল আহসান অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। অনুষ্ঠানে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এবার ৪৮৮ জন পুলিশ সদস্যকে ‘পুলিশ ফোর্স এক্সেমপ্লারি গুড সার্ভিস ব্যাজ-২০২৩ (আইজি’জ ব্যাজ)’ পরিয়ে দেন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

এ ছাড়া গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার অভিযানে ‘ক’ গ্রুপে প্রথম চট্টগ্রাম জেলা, দ্বিতীয় কুমিল্লা জেলা এবং তৃতীয় হয়েছে পাবনা জেলা। ‘খ’ গ্রুপে প্রথম কক্সবাজার জেলা, দ্বিতীয় নরসিংদী জেলা, তৃতীয় নোয়াখালী জেলা। ‘গ’ গ্রুপে এপিবিএন প্রথম, রাজবাড়ী জেলা দ্বিতীয় এবং মাগুরা জেলা তৃতীয় হয়েছে। ‘ঘ’ গ্রুপে র‍্যাব-১৫, কক্সবাজার প্রথম, র‍্যাব-৫, রাজশাহী দ্বিতীয়, র‍্যাব-৭ চট্টগ্রাম তৃতীয়। ‘ঙ’ গ্রুপে ডিবি, ডিএমপি প্রথম, সিটিটিসি দ্বিতীয় এবং ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগ তৃতীয় হয়েছে।

মাদকদ্রব্য উদ্ধার অভিযানে ‘ক’ গ্রুপে কুমিল্লা জেলা পুলিশ প্রথম, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ দ্বিতীয় এবং সিএমপি তৃতীয় হয়েছে। ‘খ’ গ্রুপে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ প্রথম, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ দ্বিতীয় এবং কক্সবাজার জেলা পুলিশ তৃতীয় হয়েছে। ‘গ’ গ্রুপে লালমনিরহাট জেলা পুলিশ প্রথম, জয়পুরহাট জেলা পুলিশ দ্বিতীয় এবং চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ তৃতীয় হয়েছে। ‘ঘ’ গ্রুপে র‍্যাব-১৫, কক্সবাজার প্রথম, র‍্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জ দ্বিতীয় এবং র‍্যাব-৭ চট্টগ্রাম তৃতীয় হয়েছে। ‘ঙ’ গ্রুপে ডিবি-ডিএমপি প্রথম, মিরপুর বিভাগ, ডিএমপি দ্বিতীয় এবং ওয়ারী বিভাগ, ডিএমপি তৃতীয় হয়েছে। ‘চ’ বিভাগে এপিবিএন প্রথম, রেলওয়ে পুলিশ দ্বিতীয়  এবং হাইওয়ে পুলিশ তৃতীয় হয়েছে।

অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সার্বিক কার্যক্রম মূল্যায়নে ‘ক’ গ্রুপে কুমিল্লা জেলা পুলিশ প্রথম, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ দ্বিতীয়, সিলেট জেলা পুলিশ তৃতীয় হয়েছে। ‘খ’ গ্রুপে নোয়াখালী জেলা পুলিশ প্রথম, লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ দ্বিতীয় এবং জামালপুর জেলা পুলিশ তৃতীয় হয়েছে। ‘গ’ গ্রুপে লালমনিরহাট জেলা পুলিশ প্রথম, শেরপুর জেলা পুলিশ দ্বিতীয় এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পুলিশ তৃতীয় হয়েছে। ‘ঘ’ গ্রুপে ডিএমপি, লালবাগ বিভাগ প্রথম, ডিএমপি, মতিঝিল বিভাগ দ্বিতীয় ও ডিএমপি, ওয়ারী বিভাগ তৃতীয় হয়েছে। ‘ঙ’ গ্রুপে র‍্যাব-১৫, কক্সবাজার প্রথম, র‍্যাব-৫, রাজশাহী দ্বিতীয় এবং র‍্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জ তৃতীয় হয়েছে।

শিল্ড প্যারেড প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছে এপিবিএন। দ্বিতীয় হয়েছে যৌথ মেট্রো দল এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ। বার্ষিক পুলিশ প্যারেড কুচকাওয়াজে প্রথম স্থান অর্জন করেছে এপিবিএন, দ্বিতীয় হয়েছে যৌথ মেট্রো দল এবং তৃতীয় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ।