মায়ের ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ করতে গিয়ে গ্রেপ্তার যুবকের জামিন নামঞ্জুর

কিডনি ডায়ালাইসিসের ফি বাড়ানোর প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফটকের সামনে সড়ক অবরোধ করেন রোগী ও স্বজনেরা। এক পর্যায়ে পুলিশ তাঁদের কয়েকজনকে মারধর করে সেখান থেকে উঠিয়ে দেয়
ছবি: প্রথম আলো

কিডনি রোগী মায়ের ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ করতে গিয়ে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার এক যুবকের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অলিউল্লাহ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পুলিশের করা রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

ওই যুবকের নাম মো. মুস্তাকিম। তাঁকে আইনি সহায়তা দিচ্ছে মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন। সংগঠনের মহাসচিব জিয়া হাবিব আহসান প্রথম আলোকে বলেন, ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ করতে গেলে পুলিশ টেনেহিঁচড়ে ওই যুবককে ধরে নিয়ে যায়। পরে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে। রিমান্ড বাতিল জামিনের আবেদন করা হলে আদালত মঞ্জুর করেন। তবে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। আদেশের অনুলিপি পেলে আবার জামিনের আবেদন করা হবে।

ডায়ালাইসিস ফি কমানোর দাবিতে চট্টগ্রাম মেডিকেলের নিচতলায় স্যানডোর ডায়ালাইসিস প্রাইভেট লিমিটেডের সামনে বিক্ষোভ করে আসছিলেন রোগী ও স্বজনেরা। মঙ্গলবার তাঁরা হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনের কেবি ফজলুল কাদের সড়ক অবরোধ করেন। পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা সেদিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আন্দোলনরত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেন।

একপর্যায়ে ওসি নাজিম উদ্দিন হঠাৎ আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সময় একজনকে শার্টের কলার ধরে টেনেহিঁচড়ে পাশের একটি হাসপাতালের ভেতর নিয়ে যান তিনি। পুলিশের মারমুখী আচরণে মানববন্ধনে উপস্থিত লোকজন ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। প্রত্যক্ষদর্শীরাও এ সময় পুলিশের দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তোলেন।

এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে উল্টো পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে মামলা করে। মামলায় মো. মুস্তাকিমের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়। পরে মুস্তাকিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পাঁচলাইশ থানার পুলিশ।

রোগীদের অভিযোগ, স্যানডোর এত দিন দুটি মূল্যে ডায়ালাইসিস সেবা দিত। এর মধ্যে ভর্তুকির যে সেবা দিত, তার মূল্য ছিল ৫১০ টাকা। তা বেড়ে এখন ৫৩৫ টাকা হয়েছে।

এ ছাড়া ভর্তুকি ছাড়া ২ হাজার ৭৮৫ টাকায় যে ডায়ালাইসিস সেশন চালাত, তা করা হয়েছে ২ হাজার ৯৩৫ টাকা। আবার এত দিন যাঁরা মাসে ৮টি সেশন ভর্তুকি মূল্যে ডায়ালাইসিস করাতে পারতেন, তাঁদের এখন থেকে অর্ধেক পুরো ফিতে করতে হবে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত দিয়েছে। এ কারণে রোগী ও স্বজনেরা শনিবার থেকে ফি ও ভর্তুকি সেশন আগের মতো বহাল রাখার দাবি জানিয়ে আসছিলেন।