চট্টগ্রামে লোডশেডিংয়ে ভোগান্তি

সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় অন্ধকারে বসেই ইফতার করছে একটি পরিবার
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম নগরে লোডশেডিং বেড়েছে। তীব্র গরমের মধ্যে বিদ্যুৎ–বিভ্রাটের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে মানুষ। চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ না পাওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। তাঁরা বলছেন, চট্টগ্রামে বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় ১ হাজার ১০০ মেগাওয়াট। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৫০ মেগাওয়াট।

শনিবার চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রোববার তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও গরম কমার কোনো সুখবর দিতে পারছে না আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ পরিস্থিতি আরও চার-পাঁচ দিন থাকবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম আবহাওয়া অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা।

তীব্র গরমের মধ্যে গত শনিবার বিকেলে চট্টগ্রামের হাটহাজারী-মদুনাঘাটের ১৩২ কেভি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনে কারেন্ট ট্রান্সফরমারের (সিটি) বিস্ফোরণ ঘটে। গ্রিড বিপর্যয়ের কারণে পুরো চট্টগ্রাম বিভাগ বিদ্যুৎ–বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ৪০-৪৫ মিনিট পর বিদ্যুৎ আসতে শুরু করে। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত সময় লাগে। তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারলেও লোডশেডিং নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না ।

একদিকে তীব্র গরম অপরদিকে লোডশেডিং—দুই কারণে মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। পবিত্র রমজানের মাস হওয়ায় ভোগান্তি আরও বেড়েছে। বিপণিবিতানে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা মানুষের কষ্টও বেড়েছে। আবার লোডশেডিংয়ের কারণে বিভিন্ন ইফতারসামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানও বিপাকে পড়েছে।

চট্টগ্রাম নগরের চকবাজার এলাকার বাসিন্দা আবদুল হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, চার-পাঁচ দিন ধরে খুবই কষ্টে আছেন। প্রতিদিন ছয়-সাতবার বিদ্যুৎ চলে যায়। একবার গেলে আধা ঘণ্টা-এক ঘণ্টা থাকে না। রোববার ভোররাতেও বিদ্যুৎ ছিল না। প্রতিদিন এ যন্ত্রণা আর সহ্য হচ্ছে না।

একই ধরনের ভোগান্তির কথা জানিয়েছেন নগরের এক কিলোমিটার শাহ ওয়ালিউল্লাহ আবাসিক এলাকার বাসিন্দা বোরহান উদ্দিন। তিনি বলেন, প্রচণ্ড গরম পড়ছে। এর মধ্যে লোডশেডিং। দিনে পাঁচ থেকে ছয়বার লোডশেডিং হচ্ছে। প্রতিবার এক ঘণ্টার বেশি। বিদ্যুৎ না থাকায় পানির মোটর চালানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বাড়তি যোগ হচ্ছে পানির ভোগান্তি।

লোডশেডিংয়ের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেও। নগরের বার্গেরিটা রেস্তোরাঁর অন্যতম কর্ণধার শেখ বাহাউদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, যেকোনো রেস্তোরাঁর পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করার প্রথম শর্ত পানি।  কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। এ ছাড়া চিকেন রোস্ট, ফ্রেঞ্চ ফ্রাইসহ বিভিন্ন আইটেম তৈরি করার যন্ত্র বন্ধ রাখতে হয়েছে। এসব কারণে গত শনিবার বেশ কিছু অর্ডার বাতিল করতে হয়েছে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম বলেন, চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে।

তবে কবে নাগাদ বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি রেজাউল ইসলাম।