ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সব হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সাবেক ও বর্তমান শতাধিক বাংলাদেশি কর্মকর্তা। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের কাছে পাঠানো চিঠিতে তাঁরা হত্যাকাণ্ডের তদন্তসহ বিভিন্ন দাবি জানান।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। সরকার পতনের আগেই পাঁচ পৃষ্ঠার ওই চিঠি জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে পাঠানো হয়।
নিউইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘ সদর দপ্তরের কর্মকর্তা আরিফ মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাংলাদেশের কল্যাণে জাতিসংঘের মহাসচিবকে আমরা অরাজনৈতিকভাবে একটি চিঠি ই–মেইল করেছিলাম। সারা বিশ্বে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সাবেক ও বর্তমান ১৩৩ জন বাংলাদেশি কর্মকর্তা এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন।’
চিঠিতে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের শুরু থেকে যত মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, প্রতিটির সুষ্ঠু তদন্ত; হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে জাতিসংঘ মিশন থেকে প্রত্যাহার অথবা নতুন কোনো সুযোগ-সুবিধা না দেওয়া; মানবাধিকার লঙ্ঘন, হত্যা, নির্যাতন বন্ধ; আটক, গ্রেপ্তার ও গুমের ঘটনা তদন্তে জাতিসংঘের নিরপেক্ষ কমিশন গঠনসহ বিভিন্ন দাবি জানানো হয়।
ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে জাতিসংঘের নামাঙ্কিত যান ব্যবহার করার ঘটনা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সংবাদে দেখে বাংলাদেশি হিসেবে তাঁরা বিস্মিত ও বিব্রত বলে উল্লেখ করা হয় চিঠিতে। এতে বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিকদের কাছে জাতিসংঘের অরাজনৈতিক ও নিরপেক্ষ অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে, জাতিসংঘের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে মনে করেন তাঁরা। এ বিষয়ে আশু তদন্তের জন্য মহাসচিবের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় চিঠিতে।
আরিফ মাহমুদ শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আন্দোলন দমনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার তথ্যানুসন্ধানের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করতে ইতিমধ্যে জাতিসংঘের তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল ঢাকায় পৌঁছেছে। আমরা আশা করছি, প্রতিটি হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা হবে।’