ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের দুই পরিচালককে ৪ জুনের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ

সুপ্রিম কোর্টফাইল ছবি

আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের দুই পরিচালক বাসুদেব ব্যানার্জী ও তাঁর স্ত্রী পাপিয়া ব্যানার্জীকে পৃথক মামলায় আগামী ৪ জুনের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

আদালত বলেছেন, ‘আত্মসমর্পণ করে তাঁরা (বাসুদেব ও পাপিয়া) জামিন চাইলে, তা আইন অনুসারে পরিচালনা করতে বিচারিক আদালতকে বলা হলো।’

দেশের বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎকারী হিসেবে পরিচিত পি কে হালদার ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের অন্যতম সুবিধাভোগী ছিলেন। পি কে হালদার ভারতে গ্রেপ্তার হয়ে সেখানকার কারাগারে আছেন।

আলাদা মামলায় বাসুদেব ও পাপিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া আগাম জামিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আপিল বিভাগে পৃথক ১৫টি আবেদন করে। এসব আবেদনের শুনানি নিয়ে ১৩ মে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত তাঁদের আগাম জামিন স্থগিত করেন। দুই সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট আদালতে তাঁদের আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন।

আগাম জামিনের বিরুদ্ধে দুদকের করা ওই আবেদন সূত্রে চেম্বার আদালতের ১৩ মে দেওয়া আদেশ প্রত্যাহার ও সংশোধন চেয়ে বাসুদেব ও পাপিয়া পৃথক আবেদন করেন। চেম্বার আদালত হয়ে আবেদনগুলো আজ আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে।

আদালতে বাসুদেব ও পাপিয়ার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী প্রথম আলো বলেন, চেম্বার আদালত আগাম জামিন স্থগিত করে পৃথক ১৫ মামলায় বাসুদেব ও পাপিয়াকে দুই সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই আদেশ সংশোধন চেয়ে তাঁরা পৃথক আবেদন করেছিলেন। আদেশ সংশোধন করে দিয়ে ৪ জুনের মধ্যে তাঁদের আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আত্মসমর্পণ করে তাঁরা জামিন চাইলে, তা আইন অনুসারে বিচারিক আদালতকে ডিল (পরিচালনা) করতে বলা হয়েছে। ফলে ৪ জুন পর্যন্ত তাঁরা মুক্ত থাকছেন।

দুর্নীতি দমন কমিশন সূত্র জানায়, যাচাই-বাছাই না করে জাল কাগজপত্রের মাধ্যমে অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানকে ঋণ পেতে সহযোগিতা এবং ঋণের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে পি কে হালদারসহ আসামিদের বিরুদ্ধে ২০২১ সালে দুদক এসব মামলা করে।

দুদকের করা পৃথক মামলায় হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়ে বাসুদেব ও পাপিয়া পৃথক ১৫টি আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে ৯ মে হাইকোর্ট শর্ত সাপেক্ষে তাঁদের ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দেন। শর্তে তাঁদের পাসপোর্ট বিচারিক আদালতে জমা দিতে বলা হয়। এ ছাড়া আদালতের অনুমতি ছাড়া তাঁরা বিদেশে যেতে পারবেন না বলে বলা হয়।

হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে দুদক আপিল বিভাগে পৃথক ১৫টি আবেদন করে। যা ১৩ মে চেম্বার আদালতে ওঠে। সেদিন শুনানি নিয়ে চেম্বার আদালত পৃথক মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া আগাম জামিন স্থগিত করেন। বাসুদেব ও পাপিয়াকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন। আত্মসমর্পণ না করে বাসুদেব ও পাপিয়া দুদকের পৃথক আবেদন সূত্রে চেম্বার আদালতের আদেশ প্রত্যাহার ও সংশোধন চেয়ে পৃথক আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে বাসুদেব ও পাপিয়ার করা পৃথক আবেদন নিষ্পত্তি করে আজ আদেশ দেন আপিল বিভাগ।