দুই শিশুসন্তান নিয়ে সাড়ে তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর পেলেন চাল
চট্টগ্রাম নগরে সকাল থেকেই সারিতে কয়েক শ মানুষ। খোলা বাজারে পণ্য বিক্রির (ওএমএস) ট্রাক থেকে চাল সংগ্রহ করতে সারিতে দাঁড়িয়ে অপেক্ষায় আছেন তাঁরা।
আজ সোমবার নগরীর ওয়াসা মোড়ে বাগমনিরাম আবদুর রশিদ সিটি করপোরেশন বালক উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে সকাল থেকে মানুষের ভিড়।
সরেজমিন সকাল ১০টায় সেখানে গিয়ে দেখা যায়, দুটি সারিতে সাড়ে তিন শতাধিক মানুষ দাঁড়িয়ে আছেন। বেশি ভিড় নারীদের সারিতে। তখনো মানুষ আসতে থাকায় সারি দীর্ঘ হচ্ছিল। ওএমএসের ট্রাক থেকে চাল কিনছিলেন গৃহিণী আসমা আক্তার (২৭)। চাল নেওয়ার পর কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
আসমা আক্তার বলেন, এর আগে ওএমএসের ট্রাক থেকে চাল কিনেননি তিনি। আজ সকাল সাতটার দিকে দুই ছেলেকে নিয়ে এসে সারিতে দাঁড়িয়েছেন তিনি। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর সাড়ে ১০টার দিকে চাল পেয়েছেন তিনি। ৩০ টাকা কেজি দরে পাঁচ কেজি চাল পেয়ে খুশি তিনি।
গৃহবধূ আসমার কোলে ছিল সাড়ে তিন বছরে শিশু মোহাম্মদ। পাশে সাড়ে সাত বছরের সন্তান আলামিন। আলামিনের হাত থেকে চালের ব্যাগ নিতে নিতে তিনি বলেন, শাশুড়িসহ পাঁচ সদস্যের পরিবার তাঁদের। তাঁর স্বামী মোহাম্মদ রবিউল রাজমিস্ত্রি। তাঁর একার আয়ে সংসারের খরচ মিটে না। বাজারে ৫০ টাকার নিচে চাল পাওয়া যায় না। সবকিছুর দাম বাড়ায় তাই ওএমএসের ট্রাক থেকে চাল নিচ্ছেন তিনি।
চট্টগ্রাম নগরে প্রতিদিন ১৪টি ট্রাকে ওএমএসের মোট ২৮ মেট্রিক টন চাল বিক্রি হয়। প্রতিটি ট্রাকে দুই হাজার কেজি চাল থাকে। জনপ্রতি পাঁচ কেজি করে মোট চার শ মানুষ প্রতিটি ট্রাক থেকে চাল কিনতে পারেন। নগরের বহদ্দারহাট, আমবাগান রেলগেট ও ওয়াসা মোড়ে সারিতে দাঁড়ানো মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু প্রতিটি ট্রাক থেকে চাল কিনতে পারবেন মাত্র ৪০০ মানুষ। তাই অনেককেই খালি হাতে ফিরতে হয়।
চট্টগ্রাম মহানগর খাদ্য পরিদর্শক আবুল মনসুর মোহাম্মদ হাবীব প্রথম আলোকে বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় চালের চাহিদা বেশি। ট্রাক ও চালের বরাদ্দ বাড়ানোর কথা জানানো হয়েছে। তবে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বরাদ্দ বাড়লে কাউকে খালি হাতে ফিরতে হবে না।