ড. ইউনূসকে হয়রানির জন্য শ্রম আইনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করুন: অ্যামনেস্টি

ড. মুহাম্মদ ইউনূস
ফাইল ছবি

বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শন অবিলম্বে বন্ধ করতে বলেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটি বলেছে, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই শ্রম আইনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।

আজ সোমবার অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে ১৫০টির বেশি মামলা করা হয়েছে। তার একটি এই মামলা, যেটা ২০০৬ সালের শ্রম আইনে দায়ের করা হয়। গ্রামীণ টেলিকমের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়াও তিন সদস্য আশরাফুল হাসান, নূর জাহান বেগম ও মোহাম্মদ শাহজাহানও এই মামলার আসামি। অ্যামনেস্টি মনে করছে, দেওয়ানি ও প্রশাসনিক বিষয় নিয়ে মুহাম্মদ ইউনূস ও তাঁর সহকর্মীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করাটা শ্রম আইন ও বিচারব্যবস্থার অপব্যবহার। এর মধ্য দিয়ে তাঁর কর্মকাণ্ড ও ভিন্নমতের জন্য রাজনৈতিক প্রতিহিংসারও প্রতিফলন ঘটছে।

এ বিষয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেন, ‘ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা বাংলাদেশের বিপর্যস্ত মানবাধিকার পরিস্থিতির একটি দৃষ্টান্ত। যেখানে কর্তৃপক্ষ স্বাধীনতা খর্ব করেছে এবং সমালোচকদের বশে আনতে দমন–পীড়ন চালিয়েছে।’

প্রতিহিংসা মেটাতে আইন ও বিচারব্যবস্থার অপব্যবহার মানবাধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোর সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ উল্লেখ করে অ্যামনেস্টির মহাসচিব বলেছেন, এমনই একটি চুক্তি নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি, যেটিতে বাংলাদেশ অনুসমর্থন করেছে।

বাংলাদেশ সরকারের ‘বিচারের নামে প্রহসন’ বন্ধ করার সময় হয়েছে বলে মন্তব্য করে অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেন, ড. ইউনূসকে হয়রানি করতে আইন ও বিচারব্যবস্থার অপব্যবহার না করে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের উচিত হবে অনিরাপদ কারখানার মতো যেসব বিষয় শ্রমিক অধিকারকে মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে ফেলছে, সেগুলো সমাধানের দিকে নজর দেওয়া। বাংলাদেশে কারখানায় নিরাপত্তা ঘাটতির কারণে হাজার হাজার শ্রমিকের প্রাণহানির কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি।

আরও পড়ুন

এর আগে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর) ৫ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে বলেছিল, বাংলাদেশে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ড. ইউনূসসহ মানবাধিকারকর্মী ও সুশীল সমাজের নেতৃত্বস্থানীয়দের ক্রমাগত ভয়ভীতি ও হয়রানি করা হচ্ছে। এ ছাড়া ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি খোলাচিঠি পাঠান শতাধিক নোবেলজয়ীসহ বিশ্বের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্বস্থানীয় দেড় শতাধিক ব্যক্তি। গত ২৮ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোভিত্তিক জনসংযোগ প্রতিষ্ঠান সিজিয়ন পিআর নিউজওয়্যার তাদের ওয়েবসাইটে ওই চিঠিটি প্রকাশ করা হয়।

আরও পড়ুন