পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আইনি নোটিশ পাঠানো আইনজীবীকে ‘হত্যার হুমকি’

প্রতীকী ছবি

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের জন্য আইনি নোটিশ পাঠিয়েছিলেন আইনজীবী মো. এরশাদ হোসেন (রাশেদ)। এরপর তাঁকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে জানিয়ে শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তিনি।

আজ এই জিডিতে এরশাদ হোসেন লিখেছেন, ‘আমি গত ২১ আগস্ট পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পদত্যাগ করার বিষয়ে একটি আইনি নোটিশ প্রদান করি। এই বিষয়টি বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিকস মিডিয়ায় প্রচার ও প্রকাশিত হয়। তার পর থেকে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ফোন নম্বর থেকে আমার ব্যক্তিগত নম্বরে ফোন দিয়ে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি এবং প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’

জিডির তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, হত্যার হুমকিসংক্রান্ত জিডি হয়েছে। শিগগিরই তদন্ত শুরু করা হবে।
জিডিতে এরশাদ হোসেন উল্লেখ করেন, ‘সর্বশেষ আজ (২৩ আগস্ট) সকাল ১০টা ১৬ মিনিটে সোহরাওয়ার্দী ভবনে নিজের চেম্বারে অবস্থানকালে একটি নম্বর থেকে ফোন দিয়ে বলা হয়, “সমস্যার সমাধান করবি কি না? আমি কিন্তু ডাইরেক্ট গুলি করে মাইরা ফালাই।” পরচিয় জানতে চাইলে তিনি উত্তরে বলেন, “গুলি করে মাইরা ফালাই, এটাই আমার পরিচয়।” তারপর একাধিক নম্বর থেকে আরও কয়েকটি ফোন এল সেগুলো আর ধরেননি। তবে কিছুক্ষণ পর আরও একটি নম্বর থেকে ফোন দিয়ে ওই ব্যক্তিই কোর্টের সামনে গুলি করে হত্যার হুমকি দেয়।’

২১ আগস্ট এ কে আব্দুল মোমেনকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগে আইনি নোটিশ দেন আইনজীবী মো. এরশাদ হোসেন। নোটিশ পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আব্দুল মোমেনকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে অনুরোধ করা হয় সেখানে। এতে ব্যর্থ হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।

নোটিশে বলা হয়, ‘১৮ আগস্ট চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমীর এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, “আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে।” এ কথা বলার মধ্য দিয়ে আব্দুল মোমেন শপথ ভঙ্গ করেছেন। সংবিধান লঙ্ঘনের পাশাপাশি দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি আঘাত করেছেন।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠানে বলেন, তিনি ভারতে গিয়ে বর্তমান সরকারকে টিকিয়ে রাখতে ‘যা যা করা দরকার’, তা-ই করার অনুরোধ করেছেন।

পরদিন শুক্রবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, ‘আমি বলেছি, আমরা চাই শেখ হাসিনার স্থিতিশীলতা থাকুক। এই ব্যাপারে আপনারা (ভারত) সাহায্য করলে আমরা খুব খুশি হব।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্যে দেশের রাজনীতিতে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন দলের পক্ষ থেকে কড়া প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। অনেকে বলেছেন, এটা দেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন করেছে।