ইসির সভায় আসেননি আওয়ামী লীগের প্রার্থী আরাফাত, সিইসির উষ্মা প্রকাশ

ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের প্রার্থীদের নিয়ে নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধি প্রতিপালনবিষয়ক সভা। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সিইসির সম্মেলন কক্ষে
ছবি: আশরাফুল আলম

ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নিয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মতবিনিময় সভায় উপস্থিত হননি আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাত। তাঁর পক্ষে উপস্থিত হয়েছিলেন একজন প্রতিনিধি। এতে উষ্মা প্রকাশ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। অবশ্য মোহাম্মদ এ আরাফাতের প্রতিনিধি জানান, তিনি অসুস্থ থাকায় সভায় উপস্থিত হতে পারেননি।

আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সিইসির সম্মেলনকক্ষে এই উপনির্বাচনের আট প্রার্থীকে নিয়ে আচরণবিধি প্রতিপালনবিষয়ক সভা ডাকা হয়েছিল। এতে মোহাম্মদ এ আরাফাত ছাড়া অন্য প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। সভাটি সাংবাদিকদের জন্য উন্মুক্ত ছিল।

সভাটি যথাসময়ে শুরু হয়। এর প্রায় আধা ঘণ্টা পর নৌকার প্রার্থীর প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক উইলিয়াম প্রলয় সমাদ্দার উপস্থিত হন।

এ সময় সিইসি তাঁর পরিচয় জানতে চান। তখন সিইসিকে জানানো হয়, মোহাম্মদ এ আরাফাতের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি এসেছেন। এ সময় কিছুটা উষ্মা প্রকাশ করেন সিইসি। মাইক বন্ধ করে তিনি বলেন, প্রার্থী কেন আসেননি, প্রতিনিধি কেন এলেন, মিটিং শুরুর আধা ঘণ্টা পরে কেন এসেছেন? এ সময় প্রসঙ্গক্রমে সিইসি আরও বলেন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময়ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী মতবিনিময় সভায় ছিলেন না।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাতের প্রতিনিধি বৈঠকে জানান, জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি সভায় আসতে পারেননি।

মতবিনিময় শেষে আরাফাতের প্রতিনিধি উইলিয়াম প্রলয় সমাদ্দার সাংবাদিকদের বলেন, মোহাম্মদ এ আরাফাত গতকালই (সোমবার) ইসির মতবিনিময় সভার আমন্ত্রণের চিঠি পেয়েছিলেন। তিনি গতকাল দু-তিনটি এলাকায় প্রচারে অংশ নেওয়ার পর অসুস্থ বোধ করছেন। তাঁর জ্বর হয়েছে। তাই তিনি নিজের ও অন্যদের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বিবেচনায় সভায় আসেননি। তিনি কোভিড-১৯ পরীক্ষা করাবেন।

আরও পড়ুন

‘অনিয়ম হলে ভোট বন্ধ’

মতবিনিময় সভায় সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা নির্বাচন সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে নিবিড়ভাবে মনিটর করব। অনেকে পেশিশক্তি লাগিয়ে ব্যালটে সিল দিয়ে স্টাপিং করতে থাকেন। সেটা কিন্তু করবেন না। এমনও হতে পারে, আমরা চিহ্নিত করতে পারলাম না। সে ক্ষেত্রে আমরা টোটাল ভোট বন্ধ করে দিতে পারব। যদি বুঝি এটা ব্যাপকভাবে হচ্ছে, এ জন্য সার্বিক ভোট বিপন্ন হবে, বাধাগ্রস্ত হবে এবং জনগণের মতামতের প্রতিফলন ঘটবে না—এটা আমাদের কাছে প্রতীয়মান হলে সম্পূর্ণ ভোট বন্ধ করে দিতে বাধ্য হব।’

প্রার্থীদের সহিংস মনোভাব না দেখিয়ে সহিষ্ণু হওয়ার পরামর্শ দিয়ে সিইসি বলেন, ‌‘আচরণবিধি কঠোরভাবে প্রয়োগের চেষ্টা করব। অতীতেও আমরা এ চেষ্টা করেছি। ক্ষেত্রেবিশেষে আমরা প্রার্থিতাও বাতিল করেছি। ওই রকম কোনো ঘটনা আশা করি ঘটবে না। আপনারাও সচেতন। আপনারা সংসদ সদস্য হয়ে আইন প্রণয়ন করবেন। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবেন। এটা একান্তভাবে কাম্য।’

ভোটে সব কেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট দেওয়া এবং ভোটারদের ভোট দিতে উৎসাহী করতে প্রার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান সিইসি। তিনি জানান, কোনো ভোটারদের বাধা দেওয়া যাবে না। তাহলে ভোট প্রশ্নবিদ্ধ হবে। কমিশন আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।

আরও পড়ুন

মতবিনিময় সভায় নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর, রাশেদা সুলতানা, নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ কমিশন সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রার্থীদের মধ্যে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সিকদার আনিসুর রহমান, জাকের পার্টির কাজী মো. রাশিদুল হাসান, মুক্তিজোটের মো. আকতার হোসেন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের রেজাউল করিম, তৃণমূল বিএনপির শেখ হাবিবুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আশরাফুল হোসেন (হিরো আলম) ও তরিকুল ইসলাম ভুঞা অংশ নেন।