প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহার না করলে ১ জুলাই থেকে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মবিরতি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ফাইল ছবি

সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয় স্কিমের’ প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবিতে আজ মঙ্গলবার অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও এ কর্মসূচি পালিত হয়।

আজ সকাল আটটা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে কর্মবিরতি পালিত হয়। তবে চলমান পরীক্ষাগুলো কর্মবিরতির আওতার বাইরে ছিল। দাবি আদায়ে আগামী দুই দিনও (বুধ ও বৃহস্পতিবার) একইভাবে অর্ধদিবস কর্মসূচি হবে। এরপর ৩০ জুন পূর্ণদিবস কর্মবিরতির পর আগামী ১ জুলাই থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক কর্মবিরতি (ক্লাস ও পরীক্ষা, দাপ্তরিক কাজ সব বন্ধ) পালিত হবে। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অচলাবস্থা তৈরি হতে পারে।

গত ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে প্রত্যয় স্কিমের প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকেই এর বিরুদ্ধে সরব বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। কিছু কর্মসূচি পালনের পর ৪ জুন অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকেরা। এরপরও দাবির প্রেক্ষাপটে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ না দেখে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ থেকে অর্ধদিবস কর্মবিরতি শুরু করেছেন তাঁরা।

সকাল আটটা থেকে কর্মবিরতি শুরু হয়। দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের মূল ফটকে অবস্থান নেন শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতারা। প্রত্যয় স্কিম বাতিল চেয়ে তাঁরা সেখানে বক্তব্যও দেন। এই আন্দোলনের মূল নেতৃত্বে আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষক নেতারা থাকলেও কর্মসূচিতে বিএনপিপন্থী শিক্ষকদেরও প্রতিনিধিত্ব ছিল।

কলাভবনের ফটকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘যৌক্তিক দাবি আদায়ের জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি। ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। ৩০ জুন আমরা পূর্ণদিবস কর্মবিরতি এবং ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করব। তখন আমাদের কোনো হল প্রাধ্যক্ষ হলে যাবেন না, কোনো বিভাগের চেয়ারম্যান বিভাগে যাবেন না, ইনস্টিটিউটের পরিচালকেরা ইনস্টিটিউটে যাবেন না। এমনকি প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা শিক্ষকেরাও কোনো দায়িত্ব পালন করবেন না।’ এটা শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়, সারা বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা ক্লাসে যাবেন না। চাপিয়ে দেওয়া প্রত্যয় স্কিম বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিনাত হুদা বলেন, ‘চাকরি শেষে পেনশনের টাকা দিয়ে আমরা হয়তো একটা জমি কেনার চেষ্টা করি অথবা একটা বাড়ি কেনার চেষ্টা করি কিংবা সন্তানদের উচ্চশিক্ষার জন্য অর্থ ব্যয় করি। সেই জায়গা কেটেকুটে আমাদের আরও স্বল্প বেতনে, স্বল্প পেনশনে নিয়ে যেতে চাওয়া হচ্ছে। এটি মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী, সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। একে সর্বজনীন নাম দিয়ে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে কোনো কোনো মহল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসমাজ এটি মেনে নেবে না। দাবি আদায় না হলে ১ জুলাই থেকে লাগাতার কর্মবিরতিতে যাব আমরা।’

আরও পড়ুন